তিনি বলেন, ‘এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। এটা কিন্তু অস্বাভাবিক সংখ্যা। তাই এটাকে (বিচারাধীন মামলার সংখ্যা) অবশ্যই কমিয়ে আনতে হবে।’
জাস্টিস রিফর্ম অ্যান্ড করাপশন প্রিভেনশন (জেআরসিপি) প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ন্যাশনাল জাস্টিস অডিট বাংলাদেশ: ফলাফল উপস্থাপন ও আলোচনা শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আইন মন্ত্রণালয় এবং জিআইজেড যৌথ উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। অনুষ্ঠানে সারা দেশের সকল জেলা জজ ও সমপর্যায়ের বিচারক এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটরা অংশ নেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, বহু আগে থেকে প্রবাদ চালু আছে জাস্টিস ডিলেইড ইজ জাস্টিস ডিনাইড। আর আজকে এই নতুন মাত্রার মধ্যে আর একটা জিনিস যোগ করার প্রয়োজন রয়ে গেছে। সেটা হচ্ছে, জাস্টিস ডিলেইড শুধু জাস্টিস ডিনাইড না। এখন জাস্টিস যদি ডিনাইড হয়, জাস্টিস কিন্তু বসে থাকে না। স্ট্রিট জাস্টিস চলে আসে। আমরা কিন্তু সেটা চাই না। আমরা চাই জনগণ বিচার পাক।
তিনি বলেন, জাস্টিস অডিটের তথ্যানুযায়ী দেশের শতকরা ৮৭ ভাগ মানুষের বিচার বিভাগের ওপর আস্থা আছে। ‘আজকের যে ৩১ লাখ মামলারজট সেটা যদি ১০ বছর পর ৬২ লাখে দাঁড়ায় তাহলে কিন্তু এই ৮৭ ভাগ আস্থা কমে ৩৭ ভাগে নেমে আসবে। সেজন্যই আমাদের মামলাজট কমানোর যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে জাস্টিস অডিটের তথ্য এবং অভিজ্ঞ বিচারকদের পরামর্শকে কাজে লাগানো যেতে পারে।’
আনিসুল হক জানান, মামলাজট কমানোর লক্ষ্যে সরকার বিদ্যমান আইন সংশোধনসহ বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। মাদক মামলার বিচারের প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য এ সম্পর্কিত আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে এবং জাতীয় সংসদের আগামী অধিবেশনেই এই আইন সংশোধনের বিল পাসের চেষ্টা করা হবে।
‘তা নাহলে অধ্যাদেশ আকারে পাস করে এটা চালু করা হবে। এছাড়া ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে যুগ্ম জেলা জজের পাশাপাশি সিনিয়র সহকারী জজ ও সহকারী জজকে এসব মামলার বিচার করার ক্ষমতা দেয়া হবে। সেজন্য আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে যা খুব শিগগিরই সংসদে পাস হয়ে যাবে,’ যোগ করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার রক্ষার অনন্য দলিল হিসেবে স্বীকৃত আমাদের সংবিধান যেমন সকল নাগরিককে আইনের দৃষ্টিতে সমতা ও আইনের সমান আশ্রয়লাভের অধিকার দিয়েছে তেমনি আত্মপক্ষ সমর্থনের পাশাপাশি দ্রুত বিচার লাভের অধিকারের কথাও সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে।
‘মহান সংবিধানে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তা পালনে বর্তমান সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জার্মানির ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর বুর্কহার্ড দুকফে, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. মো. জাকির হোসেন, জিআইজেড বাংলাদেশ সংক্রান্ত প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্প পরিচালক এবং আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব উম্মে কুলসুম, জার্মান সরকারের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জিআইজেড বাংলাদেশের 'রুল অব ল’ প্রোগ্রামের প্রধান প্রমিতা সেনগুপ্ত, জাস্টিস রিফর্ম প্রকল্পের ম্যানেজার এটিএম মোর্শেদ আলম প্রমুখ।