বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আদেশ দেয়া হয়ে গেছে। এজলাসে বসে আদালতের পরিবেশ নষ্ট করবেন না।
খালেদা জিয়ার মেডিকেল প্রতিবেদন জমা ও জামিন বিষয়ে শুনানির দিন ধার্যের আদেশ দেয়ার পরও আদালত কক্ষে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের অবস্থান ও হইচইয়ের প্রেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
বিএনপি প্রধানের সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থা জানিয়ে মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগে দাখিল হয়নি। এটিসহ দুটি প্রতিবেদন কোনো ধরনের ব্যর্থতা ছাড়াই ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে দাখিল করতে সকালে নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ। ১২ ডিসেম্বর বিষয়টি আদালতের কার্যতালিকায় আসবে।
এ শুনানি চলাকালেই রাষ্ট্রপক্ষ ও খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের মধ্যে হইচই হয়। হইচইয়ের মধ্যেই আদালত আদেশ দেয়। তারপরও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালত কক্ষে অবস্থান নেন এবং হইচই করতে থাকেন।
দুই পক্ষের হট্টগোল ও হইচইয়ের মধ্যে বাধ্য হয়ে সকাল ১০টার দিকে বিচারপতিরা আদালত কক্ষ ত্যাগ করেন। কিন্তু তারা চলে যাওয়ার পরও বিএনপি-সমর্থক আইনজীবীরা সেখানে বসে থাকেন।
বিরতির পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিচারপতিরা পুনরায় এজলাসে আসেন এবং অন্য মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। তখনও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালত কক্ষে বসে ছিলেন এবং হইচই করেন। তারা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বলে স্লোগান দেন।
এক পর্যায়ে খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ডায়াসে দাঁড়ান। এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপিল বিভাগে এমন অবস্থা আগে কখনও দেখিনি। সব কিছুর একটা সীমা থাকা উচিত। বাড়াবাড়ির একটা সীমা থাকা দরকার। আপনারা যে আচরণ করছেন তা নজিরবিহীন। আপনারা আমাদের আদেশ পরিবর্তনে চাপ সৃষ্টি করছেন।’
এ সময় খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমি শেষবারের মতো কথা বলতে চাই।’
জবাবে আদালত বলে, ‘আমরা আদেশ দিয়েছি। আর কোনো কথা শুনব না।’
বিএনপি প্রধানের আরেক আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন শুনানির তারিখ এগিয়ে আনার আরজি জানান। জবাবে আদালত বলে, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বৃহস্পতিবার শুনব।’
এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তুমুল হইচই করেন।
হইচইয়ের মধ্যে আদালতের ক্রম অনুসারে মামলা ডাকা হয়। ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে এক মামলায় শুনানির জন্য দাঁড়ান আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি। তিনি বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের টেবিল চাপড়ানোর মধ্যেই শুনানি করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিএনপিপন্থী কয়েকজন আইনজীবী বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি ছাড়া আর কোনো শুনানি হবে না।
এক পর্যায়ে সরকারপন্থী ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়।
দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে বিএনপিপন্থী কয়েকজন আইনজীবী ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ ও ‘খালেদা জিয়া, খালেদা জিয়া’ বলেন স্লোগান দেন।
পরে আজমালুল হোসেন যে মামলার শুনানির জন্য দাঁড়িয়েছিলেন তার জন্য আগামী বৃহস্পতিবার দিন রেখে বিচারপতিরা আদালতের এজলাস ত্যাগ করেন।