ফোন ফ্যাক্টরি রিসেট মানেই আবার ফিরে যাওয়া আগের সেই ঝকঝকে এবং দ্রুত কর্মক্ষমতা সম্পন্ন ইন্টারফেসে। এই ফ্যাক্টরি রিসেট-এর প্রয়োজন হওয়ার অর্থ ফোনটিতে মেরামতের অযোগ্য কোন সমস্যা হয়েছে অথবা ফোনটি বিক্রি করার সময় এসেছে। তাছাড়া ফোনটি একদম নতুন অবস্থায় ফিরে পাওয়ার বাইরেও ফ্যাক্টরি রিসেটের আরও কিছু সুফল আছে। যেমন- ফোনে থাকা বাগগুলো ঠিক হওয়া, অবাঞ্ছিত অ্যাপ এবং বিপজ্জনক ম্যালওয়্যার থেকে মুক্তি পাওয়া এবং সর্বোপরি ডিভাইসের স্টোরেজ স্পেস খালি হওয়া। তাই চলুন, জেনে নেয়া যাক কিভাবে সঠিক নিয়মে ফোন ফ্যাক্টরি রিসেট করতে হয়।
ফোন ফ্যাক্টরি রিসেট করার পূর্বে করণীয়
এই রিসেট ফোনটিকে রীতিমত ধুয়ে মুছে একদম পরিষ্কার করে ফেলে, তাই প্রথমে নিশ্চিত করতে হবে যাবতীয় দরকারি ডাটা ব্যাক আপ করা আছে কিনা। অন্য কোন ডিভাইস, পোর্টেবল হার্ডডিস্ক বা ক্লাউডে গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলোর অনুলিপি আছে কিনা তা যাচাই করতে হবে।
পড়ুন: মঙ্গলগ্রহের জন্য রোবট তৈরিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অপার সম্ভাবনা
ক্লাউড অ্যাপ্লিকেশনগুলোর কারণে এই ধরণের কাজগুলো এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি সহজ হয়ে দাড়িয়েছে। কোন রকম স্থানান্তরযোগ্য ডিভাইস বা তারের সংস্পর্শ ছাড়াই এখন গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো একাধিক ডিভাইস থেকে ব্যবহার করা যায়।
অ্যাপল, গুগল এবং মাইক্রোসফ্ট এই দশকে আরও ক্লাউড-কেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। গুগল ড্রাইভ, আইক্লাউড, এবং ওয়ান ড্রাইভ-এর সাহায্যে যেকোনো জায়গা থেকেই ক্লাউডে ডাটা ব্যাক-আপ রাখা যাচ্ছে।
পড়ুন: রিয়েলমি ৯ আই: ৩৩ ওয়াট ডার্ট চার্জিং এবং স্ন্যাপড্রাগন ৬৮০ প্রসেসরের সেরা পারফর্মার
নিয়মিত ব্যবহৃত অ্যাপগুলোর ব্যাক-আপ রাখা জরুরি। এক্ষেত্রে কেশ ফাইলগুলো চেক করে রাখা যেতে পারে।
একটা বিষয় খেয়াল রাখা উচিত যে, ক্লাউড থেকে বড় বড় ফাইলগুলো ডাউনলোডের সময় ইন্টারনেটের গতির উপর নির্ভর করে। এক্ষেত্রে ড্রপবক্স অথবা গুগল ড্রাইভ অপেক্ষা বাহ্যিক হার্ড ড্রাইভে কপি করা দ্রুত এবং সহজ হতে পারে। অতঃপর হার্ড ড্রাইভ থেকে ডাটাগুলো সরাসরি ফোনে নেয়া স্থানান্তর করে নেয়া যায়।
পড়ুন: এলিয়েন কি সত্যি পৃথিবীতে এসেছিল?
অ্যান্ড্রয়েড ফোন ফ্যাক্টরি রিসেট করার পদ্ধতি
সেটিংস অপশন থেকে সিস্টেম, অ্যাডভান্সড এবং ব্যাক-আপ-এর ভেতরে অ্যান্ড্রয়েডের নিজস্ব ব্যাকআপ সিস্টেম থাকে। এগুলো কন্টাক্ট নাম্বার, ম্যাসেজ এবং ওয়াই-ফাই পাসওয়ার্ড সহ যাবতীয় ডিভাইস সেটিংস সংরক্ষণ করে রাখে।
ফোন ফ্যাক্টরি রিসেট-এর শুরুতে ফোনটি প্লাগ ইন করে নিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যে, চার্জিং প্রক্রিয়া যেন বাধাগ্রস্ত না হয়। সেটিংস-এ যেয়ে সিস্টেম, অ্যাডভান্সড, রিসেট-এ ক্লিক করতে হবে। এতে অ্যান্ড্রয়েড যে ডাটাগুলো ডিলেট হতে চলেছে সেগুলো দেখাবে। ইরেজ অল ডাটা’তে ক্লিক করার পর লক স্ক্রীনে পিন কোড জিজ্ঞাসা করা হবে। পিন নাম্বার দেয়ার পর আবার ইরেজ অল ডাটা’তে প্রেস করলে শুরু হয়ে যাবে রিসেট প্রক্রিয়া।
পড়ুন: বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করার নিয়ম
আইফোন ফ্যাক্টরি রিসেট করার পদ্ধতি
আইফোন ব্যাকআপের জন্য আইক্লাউড ব্যবহার করে। সেটিংস-এ যেয়ে ব্যবহারকারির নামের উপর ক্লিক করে আইক্লাউড নির্বাচন করলে বিভিন্ন অ্যাপ দেখা যাবে। এখান থেকে আইক্লাউড ব্যাকআপ-এ প্রেস করে সরাসরি ব্যাক-আপ প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে।
রিসেটে কোন বাধা এড়াতে অ্যাপল ফোনটি প্লাগ ইন করে চার্জিং মুডে রাখা উত্তম। অতঃপর সেটিংস থেকে জেনারেল, রিসেট এবং ইরেজ অল কন্টেন্ট এ্যান্ড সেটিংস নির্বাচন করতে হবে। এবার ব্যবহারকারির অ্যাপল আইডি ও পাসকোড দেয়ার পালা। এ সময় ইরেজ আইফোন-এ দুইবার ট্যাপ করতে হবে। রিসেট করার পরে আইফোন ইন্টারফেসটি ফিরে যাবে সেই আগের সেটআপ স্ক্রিনে।
পড়ুন: পুরনো স্মার্টফোনের আয়ু বাড়ানোর ৫টি টিপস
ফোন ফ্যাক্টরি রিসেট-এর পর ফোনটি চালু করার সময় ইন্টারফেসটি প্রাথমিক সেটআপ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে; ঠিক একদম নতুন কেনা ফোনের মত। রিকভারি মুডের মাধ্যমে ফোন রিসেট করলে, ডিভাইস থেকে গুগল অ্যাকাউন্ট না সরালে ফ্যাক্টরি রিসেট প্রোটেকশন চালু হবে। তাই ফোন বিক্রি করার ক্ষেত্রে রিকভারি মুডের মাধ্যমে একটি হার্ড রিসেট করার আগে গুগল অ্যাকাউন্টগুলো সরিয়ে নেয়া এবং স্ক্রিন সিকিউরিটি লক করা উত্তম।