বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) থেকে শুরু হওয়া এই উৎসব শেষ হবে শনিবার (১৯ আগস্ট )। এরসঙ্গে আয়োজন করা হয়েছে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের নবম জাতীয় সম্মেলন।
শুক্রবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ শিল্পকলায় জাতীয় নাট্যশালার বহিরাঙ্গণে এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ। নির্ধারিত সময়ে মঞ্চে সবার উপস্থিতিতে বেজে উঠে জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি...’।
এর সঙ্গে শিল্পী শাহাবুদ্দিনের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে উদ্বোধন হয় বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের ৪০ বছর পূর্তির উৎসব।
এর আগে পুরো আয়োজনটি ঘুরে দেখান উৎসবের আহ্বায়ক ও নাট্য ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ।
উদ্বোধনী পর্বের পর জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে উপস্থিত হন আমন্ত্রিত অতিথি ও দলের সবাই।
মঞ্চে উপস্থিত শিল্পী শাহাবুদ্দিন, প্রধান অতিথি শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. অনুপম সেন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিকার আহকাম উল্লাহ, নাট্যজন পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈয়দ জামিল আহমেদ ও অভিনেতা আফজাল হোসেন।
আরও পড়ুন: এমআর-৯ ডু অর ডাই: মাসুদ রানা আসছেন রূপালি পর্দায়
অনুষ্ঠানে শিল্পী শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে যত নাটক দেখেছি, এর চেয়েও বেশি দেখেছি প্যারিসে। আমার এক ফরাসি নাট্যকার বন্ধু ঢাকায় ছিলেন অনেকদিন। তিনি আমাদের বিটিভির নাটক দেখে আমাকে বললেন, ‘শাহাবুদ্দিন পৃথিবীতে আমি আর কোথাও টিভিতে নাটক দেখিনি। আর এই বিষয় সে খুবই প্রশংসা করলেন। আমার বুকটা তখন গর্বে ফুলে গেল।’
শিল্পী শাহাবুদ্দিন তার বক্তব্যে আরও বলেন, মানুষ ও শিল্পীকে ভালোবাসার কথা।
উদ্বোধকের বক্তব্য শেষে নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন স্মরণে প্রবর্তিত পদক প্রদান পর্ব শুরু হয়।
এবার পদকের জন্য মনোনীত নাট্যজন পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৈয়দ জামিল আহমেদ।
শুরুতে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে পদক তুলে দেন শিল্পী শাহাবুদ্দিন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সিনেমার বড় বাজার তৈরি হবে: নিরব
পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাকে যেই মানুষ নাটকের দীক্ষা দিয়েছেন, তার নামে পদক আমার হাতে উঠল। যা আমাকে আপ্লুত করেছে। শুরুতেই আমি সেলিম আল দীনকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ, খুশি হয়েছি, ধন্য হয়েছি।’
পরে শিল্পী শাহাবুদ্দিন পদক তুলে দেন নাট্যজন জামিল আহমেদের হাতে।
পদক পেয়ে তিনি বলেন, ‘মঞ্চে উপস্থিত যারা আছেন তাদের কাছ থেকে পদক পাওয়াটা আমার জন্য সম্মানজনক। এজন্য আমি কৃতজ্ঞ। সেলিম আল দীনের সঙ্গে আমার কাছে সুযোগ হয়েছে। যা আমাকে আরও প্রসিদ্ধ করেছে। সবাইকে ধন্যবাদ।’
উল্লেখ্য, বাংলা নাট্য আন্দোলনের অগ্রপথিক সেলিম আল দীনের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী আজ (১৮ আগস্ট)। ১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার সেনেরখিল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বাংলা নাটকের এ প্রবাদপুরুষ। তিনি ঐতিহ্যবাহী বাংলা নাটকের বিষয় ও আঙ্গিক নিজ নাটকে প্রয়োগ করেছেন।
ঢাকা থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সেলিম আল দীন ১৯৮১-৮২ সালে নাট্য নির্দেশক নাসির উদ্দীন ইউসুফকে সঙ্গী করে গড়েন গ্রাম থিয়েটার। তার প্রথম রেডিও নাটক ‘বিপরীত তমসায়’। মঞ্চনাটক ‘সর্প বিষয়ক গল্প’ মঞ্চায়ন হয় ১৯৭২ সালে।
আরও পড়ুন: দর্শক আগ্রহে এগিয়ে ‘সুড়ঙ্গ’, ‘প্রিয়তমা’ ও ‘প্রহেলিকা’