সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, জায়গা সংক্রান্ত অনেক জটিলতার কারণে কলেজের কাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে। তবে আগামি জুলাই মাসের মাঝামাঝি জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হতে পারে।
একইসাথে একনেকে পাস হওয়া দেশের খুলনা, বরিশাল, রংপুর ও নওগা জেলায় এ প্রকল্পের প্রযুক্তি কলেজগুলোর কাজ চলমান থাকলেও নড়াইলে এখনও জমি অধিগ্রহণ সম্ভব না হওয়ায় নড়াইলের সচেতন মহল হতাশা প্রকাশ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নির্মাণের জন্য ২০১৫-১৬ অর্থবছরে একনেকে ৩৬৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। যার কাজ ২০২১-২২ অর্থবছরে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। জেলা প্রশাসন কলেজটির জন্য নড়াইল-লোহাগড়া সড়ক সংলগ্ন মালিবাগ এলাকায় সীমাখালী ও বোড়াবাদুরিয়া মৌজায় ৮ একর জমি নির্ধারণ করলেও স্থানীয় জমির মালিকদের বিরোধীতায় কলেজ নির্মাণ কাজ পিছিয়ে যায়। তবে, সর্বশেষ এখানেই কলেজটি নির্মাণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।
নড়াইল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল হক জানান, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে একনেকে এ কলেজটি অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কলেজটির নাম দেন ‘প্রকৌশলী খান হাতেম আলী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ’। জমি অধিগ্রহণে দেরি হওয়ায় এ কলেজটির কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ৪ কোটি ৬৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বরাদ্দ এসেছে।
জুলাই মাসের মধ্যে জেলা প্রশাসনের দপ্তর থেকে অধিগ্রহণ করা জমি বুঝে পাবেন আশা করে তিনি বলেন, এরপর পর্যায়ক্রমে টেন্ডার এবং কাজের ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হবে।
সূত্র জানায়, কলেজ নির্মাণ কাজের মধ্যে পূর্ত (অবকাঠামো) এবং ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় হবে ২৬৫ কোটি টাকা। ক্লাস রুম ও অফিস কক্ষের চেয়ার-টেবিল, আসবাবপত্র, হোস্টেল ফার্নিচার, ডেকোরেশন, ল্যাবরেটরি, গাড়ি ইত্যাদিতে ব্যয় হবে ১০০ কোটি টাকা। প্রথমাবস্থায় এখানে নির্মিত হবে বহুতল বিশিষ্ট প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবন, ৫০০ সিটের দুট ছাত্র-ছাত্রী হোস্টেল, একাধিক ল্যাবরেটরি, মসজিদ, প্রিন্সিপ্যাল ও স্টাফ কোয়ার্টার, অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও সিমানা প্রাচীর। প্রথমাবস্থায় চারটি বিভাগ সিভিল, ম্যাকানিক্যাল, ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিয়ারিং এবং সফট্ওয়ার ইঞ্জিয়ারিং চালু করা হবে।
১৯৬৮ সালে তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী নড়াইল শহরের বরাশোলা এলাকার কৃতি সন্তান হাতেম আলী খানের নামে এ প্রযুক্তি কলেজটির নামকরণ করা হয়েছে। তার ছেলে একজন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম প্রবাদ পুরুষ তাত্ত্বিক বুদ্ধিজীবী বর্তমানে সিপিবির পলিটব্যরো সদস্য হায়দার আকবর খান রনো এবং অন্যজন বর্তমানে বাংলাদেশ কিউবা মৈত্রী সমিতির সহ-সভাপতি এবং গণ সংস্কৃতি কেন্দ্রের চেয়ারম্যান হায়দার আনোয়ার খান জুনো।
শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে এগিয়ে থাকা নড়াইলবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ। এ ইঞ্জিনিয়ারি কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হলে নড়াইল জেলাবাসীর দাবি কিছুটা হলেও পূরণ হবে।
এবিষয়ে জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, নড়াইল-২ আসনের সাংসদ এবং জেলা প্রশাসনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজটির জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথমাবস্থায় জমি নিয়ে কিছু জটিলতা ছিল। এখন আর সে সমস্যা নেই। জমির মালিকদের নোটিশ দেয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী এক মাসের মধ্যে জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হবে এবং পর্যায়ক্রমে কলেজের কাজ এগিয়ে যাবে।