উত্তরের ৫ জেলা রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধার নদী অববাহিকা থেকে নামতে শুরু করেছে পানি। বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় প্লাবিত নিম্নাঞ্চলের ক্ষতবিক্ষত চেহারা বের হতে শুরু করেছে। রোপা আমন খেত পঁচে নষ্ট হয়েছে, ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে, পুকুরের মাছ বেরিয়ে গেছে; সব মিলিয়ে অপুরণীয় ক্ষতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদীপাড়ের মানুষ।
উজানের ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টিতে হু হু করে বাড়ে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ। গেল সোমবার রাতে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ বিপদসীমা অতিক্রম করে। টানা ৫ দিনের বন্যায় ডুবে যায় নদী তীরবর্তী অঞ্চলের ফসলি খেত। পানিবন্দি হয়ে পড়ে ৫ জেলার প্রায় ৪০ হাজার পরিবার। পানি তোড়ে ভেসে গেছে চাষিদের পুকুরের মাছ। বিশেষ করে আমন খেত ও বীজতলা ডুবে যাওয়ায় কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রবিবার থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করায় ধীরে ধীরে জেগে উঠছে বন্যার ক্ষত।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বন্যার পানি নেমে গেলেও দুর্ভোগ কমেনি নদীপাড়ে। বন্যার পানিতে অনেকের গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র ভিজে নষ্ট হয়েছে। পানির তোড়ে নষ্ট হওয়া ঘরবাড়ির বেড়া মেরামত করতে দেখায় যায় অনেককে। বন্যার পানির সঙ্গে ভেসে আসা ময়লা আবর্জনায় পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে গেছে। বাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড়ে সাপও দেখা যায় বেশ কয়েকটি। পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে নদীপাড়ের বেশ কিছু বিদ্যালয়ের আসবাবপত্রও।
এ ছাড়া, আমনের লাগানো চারা বন্যার পানিতে পচেগলে নষ্ট হয়েছে। অধিকাংশ খেতে শুধু মাটি-বালু পড়ে রয়েছে। কিছু খেতে চারা গাছ দেখা গেলেও রবিবার প্রচণ্ড রোদে তা পচেগলে নষ্ট হচ্ছিল।
আরও পড়ুন: চাঁপাইয়ে পদ্মার পানি বেড়ে প্লাবিত নিম্নাঞ্চল, পানিবন্দি সাড়ে ৮ হাজার পরিবার
মাত্র এক সপ্তাহ আগে দ্বিতীয় দফার বন্যায় নষ্ট হওয়া আমন খেতে নতুন করে চারা লাগান নদী পাড়ের কৃষকরা। তা-ও তৃতীয় দফার বন্যায় ৩/৪ দিন নিমজ্জিত থেকে নষ্ট হয়েছে। নতুন করে লাগানোর মতো চারা নেই অধিকাংশ চাষির কাছে। ফলে আমন নিয়ে দুঃচিন্তার ভাঁজ পড়েছে তিস্তাপাড়ের কৃষকের কপালে।