কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়িয়ে কৃষিকে আধুনিক ও লাভজনক করতে নিরলস কাজ করছে কৃষি বিভাগ। এমনিই একটি উদ্ভাবন হলো ‘সমলয়’ পদ্ধতিতে চাষাবাদ। এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে যেমন কৃষকের সময় ও শ্রম খরচ কমবে তেমনি লাভবান হবেন। এরই অংশ হিসেবে ২০২৪-২৫ মৌসুমে ব্লক প্রদর্শনীর মাধ্যমে সমলয় পদ্ধতিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে গাংনী উপজেলায়।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টার দিকে গাংনী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে উপজেলার গোপালনগর গ্রামের গড়ানের মাঠে সমলয় পদ্ধতিতে এই চারা রোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ইউএনও প্রীতম সাহা বলেন, কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়িয়ে কৃষিকে আধুনিক ও লাভজনক করতে নিরলসভাবে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।
এবছর মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় মেহেরপুর সদর ও গাংনী উপজেলায় ১০০ একর জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে বোরোধান চাষাবাদের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে জেলা কৃষি বিভাগ।
প্রচলিত পদ্ধতি বাদ দিয়ে আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে ধান চাষের জন্য বীজতলার পরিবর্তে প্লাস্টিকের ট্রেতে বীজ বপন করে তিন সপ্তাহে মধ্যে ধানের চারা উৎপাদন করা এবং যন্ত্রের সাহায্যে চারা রোপণ, সার প্রয়োগ পরিচর্যা এমনকি ধান কাটা ও মাড়াই হবে যন্ত্রের সাহায্যে।
২০২৪-২৫ মৌসুমে ব্লক প্রদর্শনীর মাধ্যমে সমলয় পদ্ধতিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে জমিতে ধানের চারা রোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।
‘সমলয়’ পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদে শ্রমিক সঙ্কট নিরসন, উৎপাদনে অতিরিক্ত খরচ ও সময় বাঁচবে বলে জানিয়েছেন গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন।
তিনি জানান, বোরো মৌসুমে গাংনী উপজেলা গোপলনগর গড়ান মাঠ এলাকায় জমিতে সাড়ে ৪ হাজার প্লাস্টিকের বিশেষ কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে মাটিতে জৈব সার সংমিশ্রণে প্লাস্টিকের ট্রেতে ধান বীজ বপন করা হয়েছে। সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদে বীজ বপন থেকে সার প্রয়োগ ও ধান কাটা মাড়াই সবকিছু করা হবে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে।
তিনি বলেন, সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদ, কৃষকেরা অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে। কৃষিতে যান্ত্রিকরণ হওয়ার কারণে শ্রমিক সংকট নিরসন হবে। ফসলের ভালো ফলনসহ বিভিন্ন সুবিধা পাবে কৃষকরা। তাই এই অঞ্চলের কৃষকদের সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষি বিভাগ থেকে।
এসময় ওই এলাকার দুই শতাধিক কৃষাণ-কৃষাণিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছেন, চলতি বছরে এজেলার ১৯ হাজার ৩২৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষি প্রণোদনার আওতায় গাংনী উপজেলার গোপালনগর গ্রামে ৬০ জন কৃষকের ৫০ একর জমিতে রাইস-ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ করা হচ্ছে। এছাড়া সদর উপজেলার আশরাফপুর গ্রামের মাঠে ৬৫ জন কৃষকের ৫০ একর জমিতে এই পদ্ধতিতে ধান রোপন করা হচ্ছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি কর্মকর্তা (ডিডি) বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, এ কার্যক্রমের উদ্দেশ্য হলো, সমলয় এবং শ্রম সাশ্রয় করা। তিনি বলেন, কৃষকের স্বার্থে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। নতুন নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগছে। এ প্রযুক্তির ফলে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমবে। ফলে তারা লাভবান হবেন।