যদি সংসদের উভয় কক্ষেই এই বিল পাস হয়ে যায় তাহলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার দাবি করা হয়েছে কমিশনের পক্ষ থেকে। খবর এনডিটিভির।
বিরোধীদের বহু আপত্তি, হইচই ও তর্কবিতর্কের মধ্যেই সোমবার গভীর রাতে ভারতের লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হয়েছে। ৩১১-৮০ ব্যবধানে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস করিয়ে নেয় নরেন্দ্র মোদি সরকার। বিলটি রাজ্যসভায় তোলা হবে। সেখানে পাস হলে তা কার্যকর হবে।
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে যে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানরা ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হওয়ার পর ভারতে গিয়েছেন তাদের বেআইনি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে ধরা হবে না। তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেয়া হবে।
তবে মুসলিমরা নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
কমিশন জানিয়েছে, যদি বিলটি সংসদের উভয়কক্ষেই পাস হয়ে যায়, তাহলে মার্কিন সরকারের উচিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহসহ অন্যান্য প্রধান নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা।
ইউএসসিআইআরএফ জানিয়েছে, এই বিল যা লোকসভায় পেশ করেন অমিত শাহ, তাতে ধর্মকে মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
সোমবার লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই বিলের বিরোধিতা করে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো।
ইউএসসিআরএফ জানিয়েছে, এই বিল একটা বিপজ্জনক দিকে বাঁক নিচ্ছে। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ মনোভাবের ইতিহাসের বিরোধিতা করছে এই বিল। পাশাপাশি ভারতীয় সংবিধানরেও বিরোধিতা করছে, যেখানে সকলের সাম্যের কথা বলা হয়েছে।
তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেন, লক্ষাধিক শরণার্থীদের দুর্বিষহ জীবন থেকে মুক্তি দেয়ার একমাত্র রাস্তা হলো এই বিল। এই বিলের মাধ্যমেই শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের কাজ অনেক সহজ হয়ে উঠবে।
তার মতে, এই বিল কোনোভাবেই অসাংবিধানিক নয় এবং ১৪ নং ধারার কোনো অবমাননা করা হয়নি।
আসামের পাশাপাশি দেশব্যাপী এনআরসি চালু করার যে মনোভাব অমিত শাহ দেখিয়েছেন, সে প্রসঙ্গে কমিশনের বক্তব্য, ‘ইউএসসিআরএফ ভয় পাচ্ছে ভারত সরকার ভারতীয় নাগরিকদের ধর্মের পরীক্ষা নিতে চাইছে। এর ফলে সেখানকার কোটি কোটি মুসলিমরা সমস্যায় পড়তে পারেন।’
ভারত সেই ইউপিএ আমল থেকেই বলে আসছে, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের বক্তব্যকে তারা গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ইউএসসিআরএফ-এর সদস্যদের দেশটিতে আসার ভিসা দেয় না ভারত।
ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) তাদের আগের মেয়াদে লোকসভায় এই বিলটি পাস করেছিল। তবে আন্দোলনের কারণে রাজ্যসভায় বিলটি পাস হয়নি। বিগত লোকসভা ভেঙে দেয়ার পরে বিলটি বাতিল হয়ে যায়।