শিশুদের ঘুম পাড়াতে রূপকথার দৈত্য-দানবের গল্প শোনানো হয়। বাস্তব জীবনেও অনেক সময় দানবের দেখা মেলে। যদিও তারা বহু মাথাবিশিষ্ট হাইড্রা কিংবা মানুষ ও ষাঁড়ের সম্মিলিত রূপের মিনোটারের মতো দেখতে নয়। তারা মানুষের মতো হলেও কার্যকলাপে শিশুদের কাছে দানব হিসেবেই পরিচিত করে তোলে তাদের।
এমনই এক ‘দুষ্টু দানব’ লুকিয়ে ছিল একটি শিশুর খাটের নিচে। সেই শিশুটিই ধরিয়ে দিয়েছে ওই দানবকে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস অঙ্গরাজ্যের এক বাসার একটি শিশুর খাটে নিচে লুকিয়ে থাকা সেই ‘দানবকে’ সোপর্দ করা হয়েছে আদালতে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৮ মার্চ) ক্যানসাস কাউন্টির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (শেরিফ) কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে জানানো হয়। একটি শিশুর খাটের নিচ থেকে এক অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বার্টন কাউন্টি শেরিফ অফিস জানিয়েছে, রাজ্যটির গ্রেট বেন্ডের কাছের একটি বাড়িতে গত সোমবার (২৫ মার্চ) এই ঘটনাটি ঘটেছে। গ্রেপ্তারের পর ২৭ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, ‘ওই বাসাটিতে একটি শিশুর দেখাশোনা করতেন এক নারী (বেবিসিটার)। ঘটনার দিন শিশুটি বারবার তার বেবিসিটারকে বলছিল, ‘খাটের নিচে দানব আছে। আতঙ্কিত শিশুটিকে আশ্বস্ত করতে খাটের নিচে উঁকি দিতেই ভয় পেয়ে যান বেবিসিটারও। এক অপিরিচিত ব্যক্তিকে তিনি খাটের নিচে লুকিয়ে থাকতে দেখতে পান।’
আরও পড়ুন: মাকে ধরিয়ে দিতে পুলিশ ডাকল ৪ বছরের শিশু!
এ সময় ওই ব্যক্তি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আটকানোর চেষ্টা করেন বেবিসিটার নারী। তাদের মধ্যে খানিক ধ্বস্তাধ্বস্তিও হয়। এরই এক পর্যায়ে শিশুটি বিছানা থেকে নিচে পড়ে যায়।
শেরিফ অফিসে জানানো হলেও তারা আসার আগেই কোনোরকম সুযোগ পেয়ে পালিয়ে যান ওই ব্যক্তি। অবশ্য পরে পায়ের ছাপ অনুসরণ করে তাকে আটক করেন অঙ্গরাজ্যটির আইন কর্মকর্তারা।
শেরিফ অফিসের তথ্যমতে, গ্রেপ্তার হওয়া ওই ব্যক্তি আগে গ্রেট বেন্ডের কাছাকাছি ওই বাড়িতেই থাকতেন। তবে রাজ্যটির আদালত তাকে বাড়িটি থেকে দূরে থাকার জন্য সুরক্ষা আদেশ দিয়েছিলেন।
অনলাইন আদালতের তথ্য অনুযায়ী, ওই ব্যক্তি অপরাধমূলক হুমকি, পারিবারিক সহিংসতা, সুরক্ষা আদেশ লঙ্ঘনসহ বেশকিছু অভিযোগে কারাগারে ছিলেন। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো দায়ের করা হয়েছিল। তবে ১০ দিন আগে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
তবে পুনরায় গ্রেপ্তারের পর তাকে জামিন না দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন বিচারক। সোমবারের ঘটনার পর তার বিরুদ্ধে শারীরিক আক্রমণ ও শিশুর জীবন ঝুঁকিতে ফেলাসহ বেশকিছু নতুন অভিযোগও যুক্ত করা হয়েছে।