ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারিও বলেছেন, তাদের বাহিনী গাজা উপত্যকায় স্থল হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আইডিএফ বাহিনী বর্তমানে বিস্তৃত পরিসরে অপারেশনাল আক্রমণাত্মক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। যার মধ্যে আকাশ, সমুদ্র ও স্থল থেকে সম্মিলিত এবং সমন্বিত আক্রমণ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।’
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শনিবার (১৪ অক্টোবর) দক্ষিণ ইসরায়েল সফর করেছেন, যেখানে এক সপ্তাহ আগে হামাস নজিরবিহীন হামলা করেছিল।
তার কার্যালয়ের তথ্যানুসারে, নেতানিয়াহুর এই সফর মূলত ‘ভবিষ্যতে যা ঘটবে তার জন্য প্রস্তুত’ হতে সৈন্যদের উৎসাহ দেওয়ার উদ্দেশ্যে করা।
শনিবারও গাজা স্ট্রিপ থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলা অব্যাহত ছিল। ইসরায়েলি বিমান-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ১০ হাজার রকেট হামলা প্রতিহত করেছে।
অন্যদিকে, আইডিএফ গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে।
এদিন আইডিএফ গাজার বাসিন্দাদের উদ্দেশে দ্বিতীয় সতর্কবার্তা জারি করেছে এবং তাদেরকে উপকূলীয় ছিটমহলের দক্ষিণ অংশে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকার দুটি প্রধান রুট দিয়ে কয়েক ঘণ্টার জন্য নিরাপদে সরে যাওয়ার অনুমতি দেয় এবং পরে ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করে।
ইসরায়েলের গণহারে গাজার বাসিন্দাদের সরিয়ে যাওয়ার নির্দেশটি মিশর, সৌদি আরব এবং তুর্কিয়েসহ আরব লীগ, জাতিসংঘ ও ডব্লিউএইচওসহ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে।
আইডিএফ-এর মতে, তাদের বিমান হামলায় হামাস কমান্ডো বাহিনীর একজন কমান্ডার আলী কাদি নিহত হওয়ায় গত সপ্তাহে দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলা শুরুর কারণ।
ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাচি হ্যানেগবি এক সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেছেন, ইসরায়েল হামলার পূর্বাভাস না দিয়ে ভুল করেছে।
তিনি আরও সতর্ক করেছেন, ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের পর হামাস গাজা উপত্যকার ‘আর সার্বভৌম বা নিয়ন্ত্রণে থাকবে না’।
হানাগবি বলেন, গাজা উপত্যকায় হামাসের হাতে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ জিম্মি রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
হামাসের সঙ্গে কোনো আলোচনার প্রচেষ্টা চলছে না বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি।
উত্তর ইসরায়েলে আইডিএফ ও লেবাননের জঙ্গি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ রবিবার থেকে পাল্পাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র ও কামান গুলি চালাচ্ছে। যা যুদ্ধে দ্বিতীয় ফ্রন্টের আশঙ্কা বাড়িয়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুসারে, ইসরায়েল-হামাস সংঘাত অষ্টম দিনে গড়িয়েছে। এসময়ে ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর সংখ্যা ২ হাজার ২১৫ জন এবং আহত ৮ হাজার জন।
এদিকে ইসরায়েলি মিডিয়া শুক্রবার সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ১৩০০ ছুঁয়েছে এবং প্রায় ৩৪০০ জন আহত হয়েছে।