ইসরায়েল
হিজবুল্লাহর মিডিয়া প্রধানকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের
হিজবুল্লাহর মিডিয়া বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ আফিফকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
রবিবার মধ্যবৈরুতে একটি বিমান হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে মোহাম্মদ আফিফকে হত্যা দাবি জানায় ইসরায়েল।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ভবন খালি করার বিষয়ে কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই রবিবার দুপুরে রাস আল-নাবা জেলায় একটি বহুতল ভবনে আঘাত হানে ইসায়েলি বাহিনী। এ হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: আরও এক হিজবুল্লাহ নেতাকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের
আফিফ ১৯৮০-এর দশকে হিজবুল্লাহতে যোগ দেন এবং গোষ্ঠীর প্রয়াত নেতা হাসান নাসরাল্লাহর মিডিয়া উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। নাসরাল্লাহকে সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে হত্যা করে ইসরায়েল।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী এই হামলাকে 'গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক হামলা' হিসেবে বর্ণনা করেছে। তারা অভিযোগে করে, আফিফ 'অপপ্রচার ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য মাঠের ফুটেজ সংগ্রহ করতে হিজবুল্লাহর কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: সীমান্তে ১৭ ইসরায়েলি সেনা হত্যার দাবি হিজবুল্লাহর
৩ দিন আগে
ইসরায়েলি বিমান হামলায় সিরিয়ায় নিহত ৭
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৭ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ হামলায় ২০ জন আহত হয়েছেন।
রবিবার বিকেল এ হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, স্থানীয় সময় বিকেল ৫টার দিকে (১৪০০ জিএমটি) গোলান মালভূমি থেকে দামেস্কের সায়িদা জয়নাব এলাকার একটি আবাসিক ভবন লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বাহিনী বিমান হামলা চালায়।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত
বিবৃতিতে বলা হয়, এ হামলায় ব্যক্তিগত মালকানাধীন ওই ভবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
ব্রিটেনভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস এর আগেতাদের প্রতিবেদনে বলে, এই হামলা একটি আবাসিক ভবনের এক ফ্ল্যাটে আঘাত হানে। ভবনটিতে লেবাননের নাগরিক ও হিজবুল্লাহ সদস্যরা বসবাস করছিলেন।
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের দক্ষিণে শিয়াদের গুরুত্বপূর্ণ মাজার এলাকা সায়িদা জয়নাব। এর আগেও এখানে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে।
সম্প্রতি কয়েক বছরে ইসরায়েল সিরিয়ায় একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে। ইরানি সামরিক সম্পদ ও হিজবুল্লাহর কাছে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত অস্ত্র ওই হামলার লক্ষ্য ছিল বলে দাবি করে তারা।
আরও পড়ুন: গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ২৫
১ সপ্তাহ আগে
পূর্ব লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৬০
পূর্ব লেবাননের বেকা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় দুই শিশুসহ অন্তত ৬০ জন নিহত ও ৫৮ জন আহত হয়েছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবারের এই হামলায় উপত্যকার ১২টি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার বেশিরভাগই বালবেক অঞ্চলের।
এই হামলাকে লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ওই এলাকায় চালানো 'সবচেয়ে সহিংস' হামলা বলে অভিহিত করেছেন বালবেকের গভর্নর বাছির খোদর।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে লেবাননে বিমান হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। সম্প্রতি লেবাননের উত্তর সীমান্তে স্থল অভিযানও শুরু করেছে তারা।
এদিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৪৩ হাজার ২০ জন নিহত ও ১ লাখ ১ হাজার ১১০ জন আহত হয়েছে।
এই যুদ্ধে হামাসকে সমর্থন জানিয়ে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের বিরোধিতা শুরুর পর থেকে লেবাননে হিজবুল্লাহর ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালাতে থাকে ইসরায়েল।
৩ সপ্তাহ আগে
ইরানের হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার নেতানিয়াহুর
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে গুরুতর ভুল হিসেবে বর্ণনা করে প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
মঙ্গলবার ইসরায়েলে ১৮০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। এর প্রতিক্রিয়ায় নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে এ অঙ্গীকার জানান।
ইরানের দাবি, লেবাননে হিজবুল্লাহর ওপর সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। গাজা সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলা চালিয়ে আসছে ইরান সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।
এর আগে ওই দিন সকালে ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করে।
ইসরায়েলজুড়ে বিমান হামলার সাইরেন বেজে উঠলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো হয়।
দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশকিছু ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বয়স করতে পারলেও ইসরায়েলের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। এতে দুইজন আহত হয়েছে।
ইসরায়েলের চ্যানেল থার্টিন টিভি নিউজ জানিয়েছে, ইরান থেকে অন্তত ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। বিকট বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লাখ লাখ বাসিন্দাকে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
ইসরায়েলের উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো জানায়, শ্রাপনেলের আঘাতে তেল আবিবে দুইজন সামান্য আহত হয়েছে। শহরের উত্তরাঞ্চলে একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দেশের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে ইসরায়েলের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তাজনিত কারণে জর্ডান ও ইরাকের নিকটবর্তী দেশগুলোও তাদের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করে বিমান চলাচল স্থগিত করেছে।
এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় আইআরআইবি টিভির প্রতিবেদনে জানা যায়, ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) অর্ধশতক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে।
এক বিবৃতিতে আইআরজিসি জানায়, হামাসপ্রধান ইসমাইল হানিয়া, হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ ও আইআরজিসির জ্যেষ্ঠ কমান্ডার আব্বাস নিলফোরুশানকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এবং মার্কিন সহায়তা নিয়ে লেবানন ও ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আক্রমণ বাড়াতে থাকায় এ হামলা চালানো হয়েছে।
আইআরজিসি আরও জানায়, সেনাবাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের অনুমোদন এবং সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের নির্দেশনার পর এ অভিযান চালানো হয়।
আইআরজিসি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ইসরায়েল যদি প্রতিশোধ নিতে ইরানে হামলা চালায় তাহলে দেশটিকে আরও ধ্বংসাত্মক হামলার মুখোমুখি হতে হবে।
অন্যদিকে পশ্চিম তীরে জেরিকোর কাছে এক ফিলিস্তিনি ব্যক্তির মৃত্যুর খবর দেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা। যদিও এই ক্ষেপণাস্ত্র ইরান থেকে ছোড়া না ইসরায়েলের তা স্পষ্ট নয়।
ইসরায়েলে ইরানের এই হামলা দুই দেশ ও তাদের আঞ্চলিক মিত্রদের মধ্যে সংঘাত তীব্র করে দিলো যার প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্যে একটি বড় আকারের যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে।
১ মাস আগে
পূর্ব ও দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ১৮, আহত ৩০
লেবাননের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে আবারও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। রবিবার ভোরে চালানো হামলায় অন্তত ১৮ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছে।
রবিবার সিনহুয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
পূর্ব লেবাননের বালবেক, হারমেল ও পশ্চিম বেকা এলাকায় প্রায় ৩০ জায়গায় বিমান হামলায় ছয়জনের মৃত্যু ও ১৪ জনকে আহত হয়েছে।
অন্যদিকে দক্ষিণ লেবাননের আরকুব, মারজেয়ুন, বিনতে জাবেইল, সিডন, টায়ার, নাবাতিয়েহ ও জেজিন এলাকায়ও প্রায় ৩৬ জায়গায় হামলায় ১২ জন নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত
সিনহুয়ার সূত্র জানিয়েছে, হিজবুল্লাহর স্থাপনা ছাড়াও আবাসিক ভবন, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ক্লিনিক লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
দক্ষিণ ও পূর্ব লেবাননের সীমান্ত অঞ্চল এবং পশ্চিম বেকার গ্রামগুলোতে চালানো এই হামলায় ৪৫টিরও বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। অধিকাংশ এলাকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইসরায়েল গাজা উপত্যকা থেকে তাদের সামরিক অভিযানের লক্ষ্য উত্তরাঞ্চলের দিকে সরিয়ে নেওয়ায় হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করেছে।
গত বছরের ৮ অক্টোবর হামাসের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে রকেট হামলা শুরু করলে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ সংঘাতের তীব্রতা বাড়তে থাকে। গত কয়দিন ধরে দক্ষিণ-পূর্ব লেবাননে ইসরায়েলের বিমান হামলা বেড়ে যাওয়ায় ওই অঞ্চলটিতে যুদ্ধ শুরুর হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বৈরুতের ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ
১ মাস আগে
লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৪৯২
লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশুসহ ৪৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০০৬ সালের ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের পর এটিই সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা।
সোমবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় ৩৫ শিশু ও ৫৮ নারীসহ ৪৯২ জন নিহত এবং ১ হাজার ৬৪৫ জন আহত হয়েছে।
হামলার আগে দক্ষিণ ও পূর্ব লেবাননের বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার জন্য সতর্ক করে ইসরায়েল। সতর্কতাবার্তা পেয়ে হাজার হাজার লেবানিজ দক্ষিণাঞ্চল ছাড়তে শুরু করে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা নিহত
একটি রেকর্ডেড বার্তায় বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে দেওয়া সতর্কবাতার কথা উল্লেখ করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘এই সতর্কতা গুরুত্ব সহকারে নিন। এখনই বিপজ্জনক স্থানগুলো থেকে সরে আসুন। আমাদের অভিযান শেষ হলে আপনারা নিরাপদে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যেতে পারবেন।’
লেবাননের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সোমবার স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ক্ষুদেবার্তা আসে, ‘আপনি যদি হিজবুল্লাহর জন্য অস্ত্র রাখা আছে এমন কোনো ভবনে থাকেন, তাহলে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই এলাকা থেকে সরে যান।’
লেবাননের তথ্যমন্ত্রী জিয়াদ মাকারিও জানান, তার কার্যালয়ও এমন একটি রেকর্ড করা বার্তা পেয়েছে যাতে লোকজনকে ভবন ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে।
সোমবারের বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল দানিয়েল হাগারি।
তিনি বলেন, ইসরায়েল প্রয়োজনে লেবাননে স্থল অভিযান চালাতে প্রস্তুত রয়েছে। লেবাননের সীমান্ত থেকে হিজবুল্লাহকে হটিয়ে দিতে ‘প্রয়োজনীয় সবকিছু’ করবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না। তবে কেউ যাতে হুমকি দেওয়ার সুযোগ না পায় সে ব্যবস্থা করছি। এই মিশনে সাফল্য অর্জনে যা যা করা দরকার আমরা তা করব।’
গত বছরের অক্টোবর থেকে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে প্রায় ৯ হাজার রকেট ও ড্রোন নিক্ষেপ করেছে জানিয়ে এসময় হাগারি বলেন, শুধু সোমবারই অন্তত ২৫০টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে তারা।
হিজবুল্লাহ দক্ষিণ লেবাননকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, সোমবার ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান হিজবুল্লাহর ১ হাজার ৬০০ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। এতে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, দূর ও স্বল্প পাল্লার রকেট ও ড্রোন ধ্বংস হয়েছে।
ইসরায়েলের দাবি, হিজবুল্লাহর কাছে প্রায় দেড় লাখ রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে যার মধ্যে গাইডেড মিসাইল ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে যা ইসরায়েলের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় বৈরুতে হামলা চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করেনি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় বেইর আল-আবেদ এলাকায় তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। এ ঘটনায় ছয়জন আহত হয় বলে হিজবুল্লাহর আল-মানার টেলিভিশনের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের হামলার জবাবে শতাধিক রকেট নিক্ষেপ হিজবুল্লাহর
লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফিরাস আবিয়াদ বলেন, এর আগে হাসপাতাল, চিকিৎসাকেন্দ্র ও অ্যাম্বুলেন্সে হামলা চালানো হয়। এ কারণে সরকার দেশের বেশিরভাগ স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়।
এর পাশাপাশি বাস্তুচ্যুতদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
দক্ষিণ লেবানন ও পূর্বের বেকা ভ্যালিতে ইসরায়েলি হামলা বাড়তে থাকায় দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাসপাতালগুলোকে অতি জরুরি ছাড়া সব ধরনের অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখতে বলেছে। হামলায় আহতদের দ্রুত চিকিৎসা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, সিরিয়ার পাশে লেবাননের পূর্ব সীমান্তের উপত্যকাবেষ্টিত এলাকাগুলোতেও বিমান হামলা চালানো হচ্ছে। ওই অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে হিজবুল্লাহর ঘাঁটি রয়েছে, যা ১৯৮২ সালে লেবাননে ইসরায়েলের হামলা ও দখলের পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের সহায়তায় তৈরি হয়েছিল।
এদিকে, ইসরায়েল সীমান্তের কাছে দক্ষিণ লেবাননে সংঘাতের মাত্রা বাড়তে থাকায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী তাদের টহল বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির এক মুখপাত্র। গোলাগুলি অব্যাহত থাকায় এরই মধ্যে সীমান্তের উভয় পাশের বাসিন্দারাও ওই এলাকাগুলো থেকে সরে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইসরায়েলের সামরিক শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি বলেন, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযানের ‘পরবর্তী পর্যায়ের’ প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। হিজবুল্লাহর ঘাঁটিগুলোতে বিমান হামলা চালানো হচ্ছে।
এদিকে, হামলার জবাবে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে দেড় শতাধিক রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ।
যদিও হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা ইসরায়েলের দিকে অর্ধশতাধিক রকেট নিক্ষেপ করেছে; এমনকি, সামরিক ঘাঁটিগুলোতেও হামলা চালিয়েছে।
এমন সময় এই ক্রমবর্ধমান হামলা-পাল্টা হামলা থেকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার শঙ্কা দেখা দিচ্ছে, যখন গাজায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ করছে ইসরায়েল। তবে হামাসের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে হামলা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছে হিজবুল্লাহ।
আরও পড়ুন: লেবাননে পেজার বিস্ফোরণ ইসরায়েলের যুদ্ধ ঘোষণা শামিল: হিজবুল্লাহ প্রধান
এ ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, লেবাননে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘাত নিয়ে মার্কিন প্রশাসন উদ্বিগ্ন। ইসরায়েল ও গাজার মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলে এই উত্তেজনা কমে আসতে পারে বলেও মত তার।
সবার স্বার্থে দ্রুত ও কূটনৈতিকভাবে এই সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্যাঁ-পিয়েরে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, উত্তেজনা কমানো ও যুদ্ধ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য অনেক দেশ ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ উভয়ের জন্য অন্য সমাধান নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
এর আগে, শুক্রবার বৈরুতের উপকণ্ঠে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর এক শীর্ষ সামরিক কমান্ডার এবং বেশ কয়েকজন যোদ্ধা নিহত হন। ওই হামলায় নারী ও শিশুসহ অর্ধশতাধিক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়।
গত সপ্তাহে লেবাননের বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে হিজবুল্লাহর ব্যবহৃত হাজার হাজার যোগাযোগ ডিভাইস পেজার বিস্ফোরিত হয়। ওই ঘটনায় ৩৯ জন নিহত এবং প্রায় তিন হাজার মানুষ আহত হয় যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। এই হামলায় লেবানন ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করলেও এ বিষয়ে তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত বেড়ে ৪৫
১ মাস আগে
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৩৮ হাজার ছাড়িয়েছে: গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে প্রায় ৯ মাস ধরে চলা যুদ্ধে ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা ৩৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) এই তথ্য জানিয়েছে গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৮ জনের লাশ হাসপাতালে আনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ১১ জনে।
চলমান এই যুদ্ধে আরও ৮৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
হতাহতদের মধ্যে কতজন সামরিক ও বেসামরিক তা স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি মন্ত্রণালয়। তবে নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু বলে জানা গেছে।
এদিকে গাজায় পর্যায়ক্রমে যুদ্ধবিরতির জন্য মার্কিন সমর্থিত প্রস্তাবের সর্বশেষ প্রতিক্রিয়া নিয়ে বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা বৈঠক করার কথা ছিল। কারণ, ৯ মাসের যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এক সপ্তাহের বিরতির পর আবারও শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলের ‘যুদ্ধ-পরবর্তী পরিকল্পনা’ হামাসের প্রত্যাখ্যান
অন্যদিকে, ইসরায়েল ও লেবাননের হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধ আরও বেড়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে তারা আগের দিন ইসরায়েলি বিমান হামলায় একজন সিনিয়র কমান্ডার হত্যার প্রতিশোধ নিতে উত্তর ইসরায়েলে ২০০টিরও বেশি রকেট ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
তুলনামূলকভাবে সংঘাত কম হলেও সীমান্তে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। যা মধ্যপ্রাচ্যকে আরও ভয়ংকর যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ বলেছে, মিত্র হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হলে তারা হামলা বন্ধ করবে।
দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের বিনিময়ে হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের সবাইকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিশ্বের সমর্থন পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই তা পুরোপুরি মেনে নেয়নি।
হামাস গত মাসে যুদ্ধবিরতির শর্ত ‘সংশোধনের’ প্রস্তাব করেছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না করে কয়েকটি বিষয়কে অকার্যকর বলেছে। মূল প্রস্তাবটি ইসরায়েলের ছিল বলে নিশ্চিত করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে এটি যুদ্ধ সমাপ্ত করবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। যা হামাসের দাবিগুলোর মধ্যে একটি প্রধান দাবি।
আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী মিশর ও কাতারকে আরেকটি বার্তা পাঠিয়েছে বলে বুধবার নিশ্চিত করেছে হামাস। যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা বলেছেন, বাইডেন প্রশাসন প্রতিক্রিয়াটি পরীক্ষা করে দেখছে, এটিকে গঠনমূলক বলে অভিহিত করেছে তবে আরও কাজ করা দরকার বলে জানিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ গাজায় রাতভর ইসরায়েলি হামলায় ৯ ফিলিস্তিনি নিহত
ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আলোচনাকে ঘিরে সর্বশেষ অগ্রগতি নিয়ে আলোচনার জন্য নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠক আহ্বান করবেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা এ কথা বলেন। সংশোধিত প্রস্তাবের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ইসরায়েল সম্ভবত আরও পরামর্শ করবে।
হামাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা বাসেম নাঈম বলেছেন, তারা আমেরিকার প্রস্তাব গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করেনি এবং দু'পক্ষের মধ্যকার ব্যবধান কমানোর জন্য কিছু ধারণা দিয়ে সাড়া দিয়েছে। হামাসের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়া মিশরীয়, কাতার ও তুর্কি কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ বিনিময় করেছেন বলে বুধবার রাতে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে মধ্যস্থতাকারী গ্রুপটি।
গত ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের একাধিক সেনা ঘাঁটি ও কৃষক সম্প্রদায়ের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন। এসময় আরও ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস। যাদের মধ্যে ১০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলিকে নভেম্বরে সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির সময় মুক্তি দেওয়া হয়েছে। হামাসের হাতে এখনও প্রায় ৮০ জন জিম্মি এবং ৪০ জনের লাশ রয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় ৩৭ হাজর ৯০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই যুদ্ধের ফলে গোটা অঞ্চল জুড়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ইসরায়েল। ফলে গাজার ২৩ লাখ জনসংখ্যার বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বাসিন্দারা ব্যাপক ক্ষুধা ও সংকটের মধ্যে পড়েছেন। যা চরম দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।
আরও পড়ুন: অবিস্ফোরিত বোমা গাজাবাসীর জন্য বড় হুমকি: জাতিসংঘ
৪ মাস আগে
ইসরায়েল থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করেছে ব্রাজিল
গাজা যুদ্ধ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কয়েক মাস ধরে চলা উত্তেজনার পর ইসরায়েল থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নিয়েছে ব্রাজিল।
বুধবার (২৯ মে) ব্রাজিলের অফিসিয়াল গেজেটে এই পদক্ষেপের কথা জানানো হয়।
অন্যদিকে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এ বিষয়ে ব্রাজিল সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বার্তা পাওয়া যায়নি। তবে গণমাধ্যমের খবরের পরিপ্রেক্ষিতে ব্রাজিলের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের জন্য তলব করা হয়।
গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের শুরু থেকেই বারবার সমালোচনা করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। একে ‘হলোকাস্ট’ অর্থাৎ ‘ইহুদী গণহত্যা’র সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। এ কারণে ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত ফ্রেডেরিকো মেয়ারকে জেরুজালেমের জাতীয় হলোকাস্ট যাদুঘরে জনসমক্ষে তিরস্কারের জন্য তলব করেছিলেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ।
আরও পড়ুন: রাফায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত
এ সময় মেয়ারকে দেশে ডেকে পাঠান লুলা। তবে, রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়াবে এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতিও হতে পারে। যদিও ইসরায়েলে ব্রাজিলের দূতাবাস এখনো বহাল রয়েছে তবে এই পদে কোনো রাষ্ট্রদূত নেই।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ইসরায়েলের শীর্ষ কূটনীতিকের কাছে মেয়ারের হেনস্তার প্রতিক্রিয়ায় বুধবারের এই প্রত্যাহার।
ব্রাজিলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলে ব্রাজিলের নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগের বিষয়টি যথাসময়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হবে। আপাতত তেল আবিবে ব্রাজিলের দূতাবাস চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের নেতৃত্বে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
মেয়ারকে জেনেভায় স্থানান্তর করা হয়েছে এবং তিনি সেখানে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় ব্রাজিলের স্থায়ী মিশনে যোগ দেবেন।
এদিকে দেশটির ইসরায়েলপন্থী গোষ্ঠী ইসরায়েলি কনফেডারেশন অব ব্রাজিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছে, তারা এই পদক্ষেপের জন্য 'দুঃখ' প্রকাশ করছে।
আরও পড়ুন: আমাদের কিছুই নেই: হামলায় খাদ্যের সন্ধানে থাকা ফিলিস্তিনিরা
তারা জানিয়েছে, ‘ব্রাজিল সরকারের একতরফা পদক্ষেপ ব্রাজিলের যে ভারসাম্য ও সংলাপের কূটনৈতিক ঐতিহ্য তা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছে এবং ব্রাজিলকে মধ্যপ্রাচ্যে মধ্যস্থতাকারী ও সমর্থনকারী হিসেবে কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালনে বাধা দিচ্ছে।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে প্রায় ১২০০ বেসামরিক লোক হত্যা ও ২৫০ জনকে জিম্মি করার পর এর প্রতিক্রিয়ায় গাজা যুদ্ধের সূচনা করে ইসরায়েল।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৩৬ হাজার ৯৬ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। আর ইসরায়েলের দাবি, তারা ১৫ হাজার হামাস সেনাকে হত্যা করেছে।
দক্ষিণ ব্রাজিলের ফেডারেল ইউনিভার্সিটি অব সান্তা ক্যাটারিনার আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ড্যানিয়েল আইরেস বলেন, বুধবারের পদক্ষেপ ছিল 'প্রতীকী' এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন না করে লুলা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি সম্পর্ক বজায় রাখতে চান এবং ৭ অক্টোবরের হামলার 'ইসরায়েল যেভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে তার তীব্র সমালোচনা' করতে ব্রাজিল সরকারের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে চান।
পৃথকভাবে, এই সপ্তাহে আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেন কর্তৃক ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিকে স্বাগত জানিয়েছে ব্রাজিলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ব্রাজিল ২০১০ সালে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। মঙ্গলবারের তিনটি পশ্চিম ইউরোপীয় দেশের সমন্বিত প্রচেষ্টা ইসরায়েলের উপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়িয়ে তুলেছে।
হলোকাস্টের সঙ্গে গাজায় ইসরায়েলের হামলার তুলনা প্রত্যাখান করে ইসরায়েল বলেছে, হামাসের অতর্কিত হামলার প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ হিসেবে গাজায় অভিযান চালানো হয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে কলম্বিয়া। এর আগে ইসরায়েলের কাছ থেকে অস্ত্র কেনা স্থগিত করেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো। গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে নাৎসি জার্মানির কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন তিনি। গাজায় অভিযানকে কেন্দ্র করেবলিভিয়া ও বেলিজও ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে নরওয়ে-আয়ারল্যান্ড ও স্পেন
৫ মাস আগে
গাজায় হামলা বন্ধে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আদালতের আদেশ, যুক্তরাষ্ট্র আরও বিচ্ছিন্ন অবস্থানে
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহতে সামরিক অভিযান বন্ধ করতে ইসরাইলকে নির্দেশ দিয়েছে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। আদালতের এই রায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সম্পর্কের মধ্যকার দূরত্ব আরও বাড়িয়ে দিল।
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড ও স্পেনের স্বীকৃতি দেওয়ার কথা ঘোষণার একদিন পরই শুক্রবার হেগভিত্তিক আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের এই রায় ইসরায়েলকে আরও চাপের মুখে ফেলেছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পাশাপাশি হামাস নেতাদের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়েছেন পৃথক একটি আন্তর্জাতিক আদালতের চিফ প্রসিকিউটর।
ইসরায়েলের ক্ষেত্রে বিশ্ব সম্প্রদায় থেকে বাইডেন প্রশাসনের অবস্থান ভিন্ন। রাফায় বড় ধরনের আক্রমণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও অন্যদিকে বাইডেন প্রশাসন জোর দিয়ে বলছে তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েল এখন পর্যন্ত এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, যা ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করেছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার তিন দেশের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়
গত অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে দেশটির ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পূর্ণ শক্তি নিয়ে সামরিক ও রাজনৈতিক সমর্থন দিয়ে আসছে বাইডেন প্রশাসন। এখন আবার জনবসতিপূর্ণ রাফায় পূর্ণ মাত্রার সামরিক অভিযান না চালাতে ইসরায়েলকে চাপ দিচ্ছে তারা।
এ সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত যা দেখেছি তা হলো, ওই এলাকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান ছিল সীমিত ও লক্ষ্যবস্তু নির্ধারিত ছিল। ঘনবসতিপূর্ণ শহরাঞ্চলের কেন্দ্রস্থলে কোনো বড় সামরিক অভিযান ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এখন দেখতে হবে এখান থেকে কী ঘটে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘গাজায় অভিযান এখনো রাফাহর কেন্দ্রস্থলের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় পৌঁছায়নি।’
চলতি মাসের শুরুর দিকে হোয়াইট হাউস ঘোষণা করে, তারা প্রায় সাড়ে তিন হাজার বোমার চালান স্থগিত করছে, যার মধ্যে দুই হাজার পাউন্ড ওজনের বিস্ফোরক রয়েছে। এই ধরনের বিস্ফোরকের কারণেই বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে বাইডেন প্রশাসন।
সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, 'যদি তারা রাফাহতে যায়, তাহলে আমি সেই অস্ত্র সরবরাহ করব না।’
আরও পড়ুন: ইউরোপীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনিরা
ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে গিয়ে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, রাফাহতে হামাসের হাতে অপহৃত ইসরায়েলি জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার চুক্তির আলোচনাকে দুর্বল করে দেবে এবং বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে অস্ত্র পাঠানোর বিষয়টির ওপরও প্রভাব ফেলবে।
তবে এই সপ্তাহে সুলিভান ইসরায়েল ও সৌদি আরব সফর থেকে ফিরে আসার পরে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বক্তব্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। তিনি বলেন, রাফাহ থেকে হামাসকে সমূলে উৎখাতে ইসরায়েলের পরিকল্পনায় পরিবর্তন এসেছে সেটি তাকে জানানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সফরকালে নেতানিয়াহু ও অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সুলিভানের সাক্ষাৎকালে রাফাহ নিয়ে বাইডেনের অনেক উদ্বেগের সমাধান দিয়েছে ইসরায়েলি পক্ষ।
ওই কর্মকর্তা বলেন, বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলি পরিকল্পনাকে সবুজ সংকেত দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কিন্তু ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনার উদ্যোগ থেকে বোঝা যাচ্ছে তারা বাইডেনের উদ্বেগকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে।
বাইডেনের উদ্বেগের কথা মাথায় রেখে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনায় এই পরিবর্তন রাফাহতে আটকে থাকা ফিলিস্তিনিদের জন্য সান্ত্বনাস্বরূপ। গত কয়েক মাসে অন্যান্য এলাকা থেকে পালিয়ে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছিল কিন্তু প্রায় ৯ লাখ মানুষ শহরটি ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে নরওয়ে-আয়ারল্যান্ড ও স্পেন
ইসরায়েল অন্য প্রধান সীমান্ত ক্রসিং কেরেম শালোম দিয়ে শত শত সাহায্যবহনকারী ট্রাক নিয়ে এসেছে, তবে জাতিসংঘ এবং ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অভিযানের কারণে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য খাবার, পানি ও অন্যান্য সরবরাহ গ্রহণ করা তাদের পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট বলছে, দিনে প্রতিদিন অন্তত ৬০০ ট্রাক খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তা প্রয়োজন। তাহলে উত্তরে ইউএসএআইডি ও জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রধানের ব্যাখায় যে দুর্ভিক্ষের সূত্রপাত হতে যাচ্ছে তা রোধ করা যাবে এবং দক্ষিণে এটি ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো যাবে।
এমনকি সমুদ্রপথে একটি মার্কিন জেটি অল্প পরিমাণে সহায়তা আনতে শুরু করলেও ইসরায়েলি আক্রমণ শুরুর পর থেকে যে পরিমাণ সরবরাহের প্রয়োজন তার তুলনায় স্বল্প পরিমাণই পেয়েছে গাজাবাসীরা।
আরও পড়ুন: যুদ্ধাপরাধে ইসরায়েল ও হামাসের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তারের আবেদন
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ইসরায়েলকে দেওয়া আইসিজের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে নেতৃস্থানীয় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। তারা আশা করেছিল যে এই রায় ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স বলেছে, এই রায়ে নিশ্চিত হয়েছে যে গাজায় ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকরা কতটা 'বিপর্যয়কর' পরিস্থিতিতে আছে এবং 'অবিলম্বে আরও মানবিক সহায়তার ব্যাপক মাত্রায় প্রয়োজন' রয়েছে।
তবে গাজায় আক্রমণ বন্ধ, এই অঞ্চলে মানবিক সহায়তা বাড়ানো এবং যুদ্ধাপরাধ তদন্তকারীদের জন্য গাজায় প্রবেশ নিয়ে আদালতের আদেশ মেনে চলতে ইসরায়েলকে বাধ্য করার কোনো সুযোগ নেই।
শুক্রবারের আইসিজের এই রায়ের পর ইসরায়েলের গতিপথের কোনো পরিবর্তনের লক্ষণ দেখা যায়নি। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ জনের মৃত্যু হয়, যাদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ সৈন্য এবং আরও ২৫০ জনকে বন্দি করা হয়। তারপর থেকে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে যাদের অধিকাংশই বেসামরিক।
আদালতের দাবিগুলো যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের কাছে যা চেয়েছে তার চেয়েও বেশি যদিও ওয়াশিংটন ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা গাজায় আরও অভিযান চালানো বিপক্ষে।
বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন দ্য হাউজ ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটিকে বলেন, 'রাফাহর ওপর পূর্ণ সামরিক হামলা বেসামরিক জনগণের যে ক্ষতি করতে পারে তা নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে আসছি। রাফাহকে রক্ষার সুস্পষ্ট এবং বিশ্বাসযোগ্য কোনো পরিকল্পনাও নেই।’
ব্লিংকেন আরও বলেন, প্রশাসন বিশ্বাস করে না যে ইসরায়েল যে ফলাফল অর্জন করতে চাইছে রাফাহতে একটি বড় আক্রমণের মাধ্যমে তা অর্জন করতে পারবে। এটি হামাসের সঙ্গে কার্যকরভাবে এবং টেকসইভাবে মোকাবিলার মাধ্যমে করতে হবে।
রাফায় পূর্ণাঙ্গ সামরিক হামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ব্লিংকেন। তিনি মনে করেন, হামাসের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও অনেক উপায় রয়েছে যেগুলো আরও কার্যকর এবং আরও টেকসই হতে পারে।
আরও পড়ুন: রাফাহর আরও গভীরে প্রবেশ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী
৫ মাস আগে
ইরান হামলা করলে আত্মরক্ষায় পাল্টা আঘাত হানতে প্রস্তুত ইসরায়েল
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বৃহস্পতিবার বলেছে, সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে প্রাণঘাতী বিমান হামলার প্রতিশোধ নিলে তারা আত্মরক্ষা করতে এবং পাল্টা আঘাত হানতে প্রস্তুত রয়েছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে সিরিয়ায় ইরানি কনুলেটে হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে তেহরান। ওই হামলা ইসরায়েল চালিয়েছে বলে বিশ্বাস করে মার্কিন সামরিক বাহিনীও। তবে ইসরায়েল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের বাকি অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
গাজায় ছয় মাসের যুদ্ধ ফিলিস্তিনি অঞ্চলকে মানবিক সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ১০ লাখেরও বেশি মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে জীবনযাপন করছে।
আরও পড়ুন: রুশ নিয়ন্ত্রিত জাপোরিঝঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রে ড্রোন হামলা
ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের প্রধান সামান্থা পাওয়ার বুধবার আইনপ্রণেতাদের বলেছেন, গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ চলছে বলে যে 'বিশ্বাসযোগ্য' প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তা তিনি মেনে নিয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চলতি সপ্তাহে বলেছেন, গাজায় মানবিক ত্রাণ প্রবাহ বাড়াতে ইসরায়েল যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলা ও স্থল হামলায় অন্তত ৩৩ হাজার ৩৬০ ফিলিস্তিনি নিহত ও ৭৪ হাজার ৯৯৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে কতজন বেসামরিক ও কতজন যোদ্ধা রয়েছে তা আলাদা করে জানাতে না পারলেও নিহতদের দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু বলে জানায় মন্ত্রণালয়।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হওয়ার পর যুদ্ধ শুরু হয়, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র বাহিনী প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, ইরান হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নিলে তারা দেশটিকে রক্ষা করতে এবং পাল্টা হামলা চালাতে প্রস্তুত রয়েছে।
ইরান গত সপ্তাহে দামেস্কে বিমান হামলায় নিহত তার দুই জেনারেলের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। তারা এ হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করলেও ইসরায়েল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
ইরান বা ওই অঞ্চলে সমর্থিত বহু সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার আশঙ্কায় ইসরায়েল অতিরিক্ত বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট প্রস্তুত রেখেছে এবং অন্যান্য সেনাদের সক্রিয় করেছে।
সেনাবাহিনীর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইরানি ভূখণ্ড থেকে হামলা হলে এটি স্পষ্ট যে, মধ্যপ্রাচ্যকে উত্তেজিত করতেই ইরান হামলা চালাবে। ’
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইসরায়েল আক্রমণাত্মক ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা উন্নত করেছে। 'যেখানে প্রয়োজন সেখানে কীভাবে কাজ করতে হবে তা আমরা জানব।’
হাগারি বলেন, মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল এরিক কুরিলা ইসরায়েলি সামরিক নেতাদের সঙ্গে কৌশলগত মূল্যায়নের জন্য ইসরায়েলে পৌঁছেছেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে তীর্থযাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনায় নিহত ১৭
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ সপ্তাহে বলেছেন, ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি এখনো আগের মতোই দৃঢ়।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ইসরায়েলি বিক্ষোভ, জিম্মি মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ এবং গাজায় হামাসের হাতে আটক কয়েক ডজন জিম্মির মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার রাতে তেল আবিবের রাস্তায় নেমে আসে বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভকারীরা জিম্মিদের বড় বড় ছবি এবং ইংরেজি ও হিব্রু ভাষায় লেখা স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করে।
অক্টোবরে দেশটিতে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পর থেকে চলতি মাসের শুরুতে হাজার হাজার ইসরায়েলি জেরুজালেমে জড়ো হয়, যা সরকারবিরোধী সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। প্রায় ছয় মাসের যুদ্ধ নেতানিয়াহুর নেতৃত্ব নিয়ে নতুন করে বিভক্তি তৈরি করেছে, যদিও দেশটির অধিকাংশই মূলত যুদ্ধের পক্ষে রয়েছে।
নেতানিয়াহু বলেন, আগাম নির্বাচন ইসরায়েলকে ছয় থেকে আট মাসের জন্য অচল করে দেবে এবং জিম্মি আলোচনাকে থামিয়ে দেবে। তিনি হামাসকে ধ্বংস করার এবং সমস্ত জিম্মিকে ঘরে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তবে সেই লক্ষ্যগুলো অধরা রয়েছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়েরে বৃহস্পতিবার বারবার জোর দিয়ে বলেছেন, গাজার কিছু অংশে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি "আসন্ন", ইউএসএআইডি প্রশাসক সামান্থা পাওয়ারকে নরম করে বলেছেন, সেখানে এরইমধ্যে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গেছে তা "বিশ্বাসযোগ্য"।
জিন-পিয়েরে বলেন, ‘এ কারণেই আমরা গাজায় পৌঁছানো মানবিক সহায়তা বাড়ানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে গাজায় ত্রাণ বহনকারী ট্রাকের সংখ্যা বেড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি গাজার পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ, তাই আমরা অবশ্যই এই প্রতিবেদনগুলো সম্পর্কে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা চব্বিশ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছি, যাতে গাজায় আরও বেশি সহায়তা পাওয়া যায়।’
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজায় ত্রাণের প্রবাহ বাড়াতে ইসরাইলকে চাপ দেওয়া অব্যাহত রাখবে।
মার্কিন চাপের মুখে ইসরায়েল নাটকীয়ভাবে গাজায় সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। গত সপ্তাহে বলেছে যে তারা আরও একটি কার্গো ক্রসিং খুলবে এবং অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি অঞ্চলে আগের চেয়ে আরও বেশি ট্রাক পাঠাবে। কিন্তু কয়েকদিন পরও এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক কর্মকর্তারা বলছেন, মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর গাজায় বিপুল সংখ্যক লোক অনাহারে রয়েছে।
যদিও ইসরায়েল বলছে, তারা এই অঞ্চলে প্রবেশকারী ত্রাণ ট্রাকের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বাড়িয়েছে, জাতিসংঘের কর্মীরা কেবল সামান্য বৃদ্ধির কথা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সরাসরি ইরানে হামলা চালানোর হুমকি ইসরাইলের
৭ মাস আগে