করোনাভাইরাস থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ঋণ কোনো অবস্থাতেই যেন ঋণখেলাপি বা শ্রেণিকরণের আওতায় না আনা হয় সে জন্য শুরু থেকেই দাবি জানিয়ে আসছিল এফবিসিসিআই।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ ফাহিম বলেন, ‘বৃহস্পতিবারের সিদ্ধান্ত এ কঠিন সময়ে চাপে থাকা ব্যবসায়ীদের জন্য দম নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার এক প্রজ্ঞাপনে জানায়, সম্প্রতি করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব বাণিজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশের ব্যবসা ক্ষেত্র, আমদানি-রপ্তানিখাতসহ দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। ফলে অনেক ঋণগ্রহীতাই সময়মতো ঋণের অর্থ পরিশোধে সক্ষম হবেন না বলে ধারণা করা যাচ্ছে। এতে চলমান ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশ জারি করে যে গত ১ জানুয়ারি ঋণের শ্রেণিমান যা ছিল, আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ওই মানেই রাখতে হবে এবং ঋণ পরিশোধে কেউ ব্যর্থ হলে ৩০ জুন পর্যন্ত কাউকে ঋণখেলাপি হিসেবে ঘোষণা করা যাবে না।
‘আমি এফবিসিসিআই ও সারা দেশের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানাই। এতে ব্যবসায়ীরা অনেকটা স্বস্তি পাবে,’ শেখ ফাহিম বলেন।
গত জানুয়ারি থেকে চীনে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকে, যার প্রভাবে দেশের বাণিজ্য খাতে সাময়িক সংকট তৈরি হতে থাকে। সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলায় এবং ব্যবসায়ীদের কী ধরনের সমস্যা হতে পারে সে বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাথে আলোচনা চালিয়ে আসছিল এফবিসিসিআই।
তারই ধারাবাহিকতায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি এফবিসিসিআই সভাপতি মতিঝিলের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংক ঋণসহ অন্যান্য আর্থিক প্রক্রিয়া ব্যবসায়ী ও বাণিজ্যের অনুকূলে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি করোনাভাইরাসের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে যে ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সে জন্য উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে বিলম্বের কারণে কোনো প্রকার শাস্তি প্রদান না করা, বেতন ও ভাতা প্রদানে চলতি মূলধন সহযোগিতা অব্যাহত রাখা, রপ্তানির ক্ষেত্রে ব্যাক টু ব্যাক এলসি সহযোগিতাসহ অন্যান্য ব্যাংকিং সুবিধা প্রদানের দাবি জানান। পাশাপাশি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে চিঠি দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ব্যাংকিং সুবিধা প্রদানের জন্য আহ্বান জানান।