এ সিদ্ধান্তের ফলে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে। তবে রপ্তানির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা
ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনার বাজারে নতুন পেঁয়াজ, মজুদ নিয়ে চিন্তিত টিসিবি
বাংলাদেশের হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত সরকার গত ১৪ সেপ্টেবম্বর কোনো পূর্ব ঘোষণা না দিয়ে অভ্যন্তরীণ সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়।
হঠাৎ করে নিত্য প্রয়োজনীয় এ পণ্যের আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দামে অস্থিরতা দেখা দেয়।
আরও পড়ুন:অনলাইনে ২৩ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে টিসিবির পেঁয়াজ
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক মোবারক হোসেন বলেন, সোমবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে ভারতের ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে আমরা একটি চিঠি পেয়েছি।
নতুন করে এলসি করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, চিঠিতে উল্লেখ আছে ভারত সরকার বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানিতে গত সেপ্টেম্বর মাসে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সেটি প্রত্যাহার করে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করার অনুমতি দিয়েছে। ১ জানুয়ারি শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির কারণে বন্দর বন্ধ থাকে। ফলে ২ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে আমদানি শুরু হতে পারে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে পুলিশের উদ্ধার করা চোরাই পেঁয়াজ নিলামে
তবে বাংলাদেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে নিদিষ্ট করে কোনো মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি। তাই ধারণা করা হচ্ছে ৩০০ ডলারের মধ্যেই আমদানি করা যাবে। ভারতের পেঁয়াজ বাজারে আসলে পাইকারি ২০-২৫ টাকার মধ্যে প্রতি কেজি বিক্রি হতে পারে।
মোবারক বলেন, ‘আমদানি করা পেঁয়াজ বাজারে আসলে খুচরা বাজারে প্রতি কেজির দাম ২০-২৫ টাকায় নেমে আসবে।’
এদিকে, হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করব কিনা তা ব্যবসায়ীদের সাথে সভা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানির সিদ্ধান্ত আসতে পারে ৭ অক্টোবর
তিনি বলেন, রপ্তানি বন্ধের আগে আমাদের ১০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজের এলসি করা ছিল। অনেক অনুরোধের পরও সেই পেঁয়াজ ভারত আমাদের দেয়নি। এতে করে আমরা ব্যবসায়ীরা বিপুল অংকের টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
হারুন উর রশিদ বলেন, স্থানীয় কৃষকরা এখন দেশে ব্যাপক পেঁয়াজের চাষ করছেন। কৃষকেরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই বিষয়ের প্রতিও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
পেঁয়াজের দাম কমছে
২০১৯-২০ অর্থবছরের এপ্রিল-জুন সময়ে ১৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পেঁয়াজ রপ্তানি করেছে ভারত।
চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর টানা দ্বিতীয় বছরের মতো পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারির পর দাম কেজি প্রতি ১০০-১২০ টাকায় বেড়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন:মিয়ানমার ও পাকিস্তান থেকে পেঁয়াজ আমদানি
বাংলাদেশের পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ২২ থেকে ২৫ লাখ টন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আমদানি করা পরিমাণ আগে অনেক কম ছিল। যা গত ২০১৯ অর্থবছরে মাত্র ০.৪ মিলিয়ন টন ছিল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এর পরিমান ১১ লাখ টন ছুঁয়েছে।
রান্নাঘরের প্রয়োজনীয় প্রধান এ পণ্যটি আমদানি করার জন্য ত্বরিত পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। বাজার সহনশীল করার জন্য এবং ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে খুচরা বাজারে বিক্রি করছে।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে টিসিবি প্রতি কেজি ২৩ টাকা করে এ পণ্য সরবরাহের ফলে কয়েক সপ্তাহ ধরেই দাম কমছে।
১৬ সেপ্টেম্বর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গণমাধ্যমকে জানান, দেশে ৬ লাখ টন পেঁয়াজের মজুদ রয়েছে এবং জনগণকে আতঙ্কিত না হতে বলেন।
টিসিবির তথ্য অনুসারে, ভারত প্রথমে এই পণ্যটির রপ্তানি বন্ধ করার পর গত বছর বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম ৫৫৭.৮ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল।