ব্যাংকিং খাত সূত্রে জানা গেছে, বুধবার থেকে সরকারি নির্দেশ কার্যকর করা শুরু করেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। রাষ্ট্রয়ত্ত্ব ব্যাংকগুলো আগে থেকেই এটি কার্যকর করা শুরু করেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের আদেশ অনুযায়ী আমরা বুধবার থেকে সিঙ্গেল ডিজিট ব্যাংক রেট কার্যকর করেছি। তবে তা পুরোপুরি কার্যকর করতে এ মাস লেগে যেতে পারে।’
এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এক বিজ্ঞপ্তিতে, দেশের ব্যবসা ও অর্থনীতি প্রসারিত করতে সব তফসিলী ব্যাংককে পহেলা এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ব্যতীত সব ধরনের ঋণের ওপর ৯ শতাংশ হারে সুদ আদায় করার কথা জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যাংকের বর্তমান উচ্চ সুদহার দেশের ক্ষুদ্র, মাঝারি এবং বৃহৎ শিল্পগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
এতে আরও বলা হয়, ‘উচ্চ সুদের কারণে ব্যবসা করার ব্যয় বাড়ছে এবং শিল্পগুলো তাদের প্রতিযোগিতা হারাচ্ছে।’
বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, শ্রেণিবদ্ধ ঋণের ক্ষেত্রে নির্দেশাবলী প্রযোজ্য হবে না।
নির্ধারিত ৯ শতাংশ সুদের ক্ষেত্রেও যদি কেউ ঋণখেলাপি হয়, সে ক্ষেত্রে ব্যাংক অতিরিক্ত ২ শতাংশ সুদ আদায় করতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
তবে রপ্তানিমুখী খাতে বিদ্যমান ৭ শতাংশ সুদহার অপরিবর্তিত থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে, গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, পহেলা এপ্রিল থেকে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশ এবং আমানতের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সুদহার ৬ শতাংশ হবে।
ব্যাংকগুলোর পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের সাথে বৈঠক শেষে তিনি এ ঘোষণা দেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পহেলা জানুয়ারি থেকে সিঙ্গেল ডিজিট সুদহার বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ঋণের ক্ষেত্রেই এটি বাস্তবায়ন চান, তাই পহেলা এপ্রিল থেকে আমরা এটি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
গত ২০ জানুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এবং পরিচালন বাজেটের আওতায় প্রাপ্ত অর্থ, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা এবং সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির নিজস্ব তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাংলাদেশে ব্যাংকিং ব্যবসায় নিয়োজিত বেসরকারি ব্যাংক অথবা অব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান অথবা উভয় ধরনের প্রতিষ্ঠানে আমানত রাখার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানায় অর্থ মন্ত্রণালয়।
বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনা প্রয়োজন উল্লেখ করে ওই প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ওই উৎসগুলোর উদ্বৃত্ত অর্থ সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ সুদ হারে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকে এবং মোট উদ্বৃত্ত অর্থের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ সুদ হারে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে মেয়াদী আমানত রাখা যাবে।