বাংলাদেশ ব্যাংক
ইসলামী ব্যাংকিংয়ের পৃথক বিধিমালা প্রণয়ন, বিভক্ত ব্যাংকাররা
দেশে ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে পৃথক বিধিমালা প্রণয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগ নিয়ে ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
বিধিমালা প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন নির্বাহী পরিচালক বলেন, প্রস্তাবিত বিধিমালায় প্রচলিত ব্যাংকগুলো এখন থেকে সরাসরি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং সেবা দিতে পারবে না। এর পরিবর্তে ব্যাংকগুলোকে ইসলামী ব্যাংকিং পরিচালনার জন্য সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
কর্মকর্তা বলেন, ‘এ আইন কার্যকর হলে প্রচলিত ব্যাংকগুলো শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং সেবা দিতে পারবে না।’
তবে কিছু ব্যাংকার যুক্তি দেখিয়েছেন, এই পদক্ষেপটি ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) অধীনে বাংলাদেশের দীর্ঘকালীন প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।
১৯৮০-এর দশকে আইডিবিতে সইকারী দেশের তালিকায় যুক্ত হয় বাংলাদেশ। যা প্রচলিত ব্যাংকগুলোকে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ে প্রবর্তনকে সহজতর করেছে।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল মান্নান প্রস্তাবিত নীতিমালার প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি ইউএনবিকে বলেন, 'প্রচলিত ব্যাংকিংয়ের জন্য ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডোর পরিবর্তে সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের বিষয়ে নতুন আইন (বিধিমালা) আইডিবির ঘোষণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।’
তিনি বলেন, আইডিবির ঘোষণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকগুলোতে শরিয়াহ পরিপালন ও তহবিল ব্যবস্থাপনা পর্যবেক্ষণের জন্য একটি স্বতন্ত্র বিভাগ স্থাপন করতে পারে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান প্রচলিত ব্যাংকগুলোর ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডো ও শাখাসমূহের বর্তমান সাফল্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘উইন্ডোজ বা শাখার মাধ্যমে যেসব ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকিং করছে তাদের সবার অবস্থা ভালো। একটি ইসলামি অন্যটি প্রচলিত ব্যাংকিং করে তুললেই ভালো ফল পাওয়া যাবে বলে আমি মনে করি না। আমরা যদি পৃথক ব্যালান্সশিট ও আয় বিবরণী প্রস্তুত করি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করি, তাহলে এটি আরও কার্যকর ও সময়োপযোগী হবে।’
মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, 'তারা যদি সঠিকভাবে মনিটরিং করে এবং শরিয়া বোর্ড যদি যথাযথভাবে থাকে, তাহলে আমার মনে হয় এখানে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’
তবে কিছু বিশ্লেষক পরিস্থিতিকে ভিন্নভাবে দেখছেন।
আরও পড়ুন: ব্যাংকে চাকরি প্রার্থীদের বয়সসীমা বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক
প্রচলিত ব্যাংকগুলোর অধীনে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের আর্থিক সক্ষমতার কথা স্বীকার করে তারা শরিয়াহ পরিপালনের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেন।
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন বর্তমান চর্চার সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ‘প্রচলিত ব্যাংকের ব্যালান্স শিটও ইসলামী শাখার মতোই। এটি কতটা শরিয়া ভিত্তিক ও সঠিক?'
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী ইসলামী ব্যাংকিংয়ের বর্তমান রূপের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পৃথক বিধিবিধানের ধারণাকে সমর্থন করেন।
তিনি বলেন, 'আমি ব্যক্তিগতভাবে আলাদা আইনের পক্ষে। এখানে আমরা আসলে ব্যবসা পরিচালনার জন্য শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং করছি না। আমরা এটা করছি টাকা কামানোর জন্য। ইসলামের নামে মানুষের কাছ থেকে কিছু টাকা নিচ্ছি। যখন চালু হয়, তখন কি এটা আসলেই ইসলামী ব্যাংকিং? মোট পোর্টফোলিওর ১.০ শতাংশও পিএলএস নয়। তাহলে এটাকে ইসলামী ব্যাংকিং বলা হচ্ছে কেন?’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মতে, খসড়া আইনটি এখনও পর্যালোচনাধীন। কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনেয়ারা শিখা বলেন, আইনটি চূড়ান্ত করার আগে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা জরুরি।
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, 'আইন প্রণয়নের সময় অংশীজনদের সঙ্গে নানা ধরনের পরামর্শ ও বিশ্লেষণ করতে হয়। আন্তর্জাতিক নীতিগুলো কী? আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রচলিত ব্যাংকগুলো কখনো ইসলামিক শাখা খোলে না।’
সব অংশীজনদের মতামত নিয়ে ইসলামিক ব্যাংক কোম্পানি আইন চূড়ান্ত করা হবে।
ইসলামী ব্যাংকিং ইসলামের চেতনা, নীতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি ব্যাংকিং ব্যবস্থা, যা ইসলামী শরিয়াহর নীতি অনুসারে পরিচালিত হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশে ৩০টি প্রচলিত ব্যাংক ছাড়াও ১০টি পূর্ণাঙ্গ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। প্রচলিত এসব ব্যাংক ৩৩টি ইসলামি ব্যাংকিং শাখা এবং শরিয়াহভিত্তিক সেবার জন্য প্রায় ৭০০ উইন্ডো পরিচালনা করে।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে কোটিপতির অ্যাকাউন্টের সংখ্যা কমেছে: বাংলাদেশ ব্যাংক
৬ দিন আগে
ব্যাংকে চাকরি প্রার্থীদের বয়সসীমা বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাংকগুলোতে প্রবেশ স্তরের চাকরির জন্য নতুন বয়সসীমা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের (বিআরপিডি) পরিচালক মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকীর সই করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে সরাসরি নিয়োগের বয়সসীমা আগের ৩০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩২ বছর নির্ধারণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে কোটিপতির অ্যাকাউন্টের সংখ্যা কমেছে: বাংলাদেশ ব্যাংক
গত ১৮ নভেম্বর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত একটি অধ্যাদেশে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং সংবিধিবদ্ধ সংস্থার পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান নয় এমন সরকারি করপোরেশন এবং স্ব-শাসিত সংস্থার জন্য সরাসরি নিয়োগের বয়সসীমা বাড়িয়ে ৩২ বছর করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘অধ্যাদেশের আলোকে এখন ব্যাংকগুলোকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছরের পরিবর্তে ৩২ বছর নির্ধারণের নির্দেশনা দেওয়া হলো।’
২০১৩ সালের ২৩ জুন বিআরপিডি সার্কুলার নম্বর ০৮-এ বর্ণিত পূর্বের নির্দেশনাও বাতিল করা হয়। তবে, প্রত্যাহার করা নির্দেশিকাগুলোর অধীনে পূর্বে নেওয়া পদক্ষেপগুলো বৈধ থাকবে।
আরও পড়ুন: ডলার বিনিময় হার সংস্কার নিয়ে ভাবছে বাংলাদেশ ব্যাংক-আইএমএফ
১ সপ্তাহ আগে
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে কোটিপতির অ্যাকাউন্টের সংখ্যা কমেছে: বাংলাদেশ ব্যাংক
গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যাংক ব্যবস্থায় এক কোটি বা তার বেশি টাকার হিসাবধারীর সংখ্যা কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের জুলাই-সেপ্টেম্বর তিন মাসের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্তত ২৬ হাজার কোটটি টাকা তুলে নিয়েছেন মানুষ। যাদের সবাই এক কোটিপতি অর্থ উত্তোলন করেছেন।
এসব টাকা উত্তোলনের কারণে ব্যাংক হিসাবের ব্যালেন্স দেড় হাজারের বেশি মানুষের কোটি টাকার নিচে নেমেছে।
দেশে প্রকৃত কোটিপতির সঠিক সংখ্যা অনিশ্চিত থাকলেও ব্যাংকে কোটি টাকার হিসাবের সংখ্যা থেকে একটি আনুমানিক সংখ্যা বলা যেতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারির পর থেকে এসব অ্যাকাউন্ট উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
আরও পড়ুন: ডলার বিনিময় হার সংস্কার নিয়ে ভাবছে বাংলাদেশ ব্যাংক-আইএমএফ
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৯৭৫ সালে এক কোটি টাকার বেশি হিসাব ছিল মাত্র ৪৭টি।
২০১৫ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭ হাজার ৫১৬ জনে। ২০২০ সালের মার্চে কোভিড-১৯ মহামারির শুরুতে এ ধরনের অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৬২৫টি, যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজারে।
অর্থনীতিবিদরা সাম্প্রতিক উত্তোলনের জন্য রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের মধ্যে আতঙ্ককে দায়ী করেছেন।
তাদের মতে, দুর্বল ব্যাংকগুলো কোটিপতিদের বড় অঙ্কের অর্থ বিতরণ করতে হিমশিম খায়। যার ফলে অনেকে তাদের মূলধন শক্তিশালী ব্যাংকে স্থানান্তর করতে বাধ্য হয়।
ফলে শক্তিশালী ব্যাংকগুলোতে একক হিসাবে একীভূত তহবিল এক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এই প্রবণতার ভিত্তিতে এক কোটি টাকা বা তদূর্ধ্ব হিসাবের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করা হয়েছিল।
কিন্তু প্রত্যাশার বিপরীতে সংখ্যাটা কমেছে।
আরও পড়ুন: নতুন নকশার নোট বাজারে ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক
১ সপ্তাহ আগে
ডলার বিনিময় হার সংস্কার নিয়ে ভাবছে বাংলাদেশ ব্যাংক-আইএমএফ
ঢাকায় চলমান মধ্যমেয়াদি পর্যালোচনা বৈঠকে ডলারের বিনিময় হার ব্যবস্থাপনায় আরও গতিশীল পদ্ধতি খুঁজছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা শিখা বলেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চলমান স্থবিরতা মোকাবিলা করার লক্ষ্যে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) আলোচনা করেছেন তারা।
বিনিময় হারে আপেক্ষিক স্থিতিশীলতা সত্ত্বেও, রূপান্তরগুলো ধীর হয়ে গেছে। দর পরিবর্তনের প্রত্যাশায় অনেকে তাদের ডলার ধরে রেখেছেন বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: নতুন নকশার নোট বাজারে ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক
শিখার মতে, এমন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য নীতিনির্ধারকরা আরও কার্যকর এবং অভিযোজিত বৈদেশিক মুদ্রার বাজার নিশ্চিত করতে বিনিময় হারে নিয়ন্ত্রিত ওঠানামা তৈরির কৌশলগুলো পরীক্ষা করে দেখছেন।
আলোচিত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে একটি ক্রলিং পেগ সিস্টেমের প্রবর্তন রয়েছে, যা মুদ্রার মূল্যে ধীরে ধীরে এবং পূর্বঘোষিত সমন্বয়ের অনুমতি দেয়।
শিখা বলেন, ‘আমরা বাজারে স্থিতিশীলতা এবং নমনীয়তার ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য প্রক্রিয়াগুলো অন্বেষণ করছি। ক্রলিং পেগের বিষয়টি বিবেচনাধীন থাকলেও এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আলোচনা শেষ হলে আরও স্পষ্ট চিত্র ফুটে উঠবে।’
বৈশ্বিক মুদ্রার অস্থিরতার মধ্যে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য এই আলোচনাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আইএমএফ ও বাংলাদেশের মধ্যে চলমান সহযোগিতার অংশ এই মধ্যমেয়াদি পর্যালোচনায় বর্তমান আর্থিক সহায়তা কর্মসূচির অগ্রগতিরও মূল্যায়ন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আইসিবিকে স্বল্প সুদে ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন দিল বাংলাদেশ ব্যাংক
বৈঠক শেষ হওয়ার পরে আরও বিস্তারিত আশা করা হচ্ছে।
১ সপ্তাহ আগে
নতুন নকশার নোট বাজারে ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক
বহুল আলোচিত বাংলাদেশি ২০ টাকা, ১০০ টাকা, ৫০০ টাকা ও এক হাজার টাকা মূল্যমানের নতুন নোট আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাজারে আসবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক এই তথ্য প্রকাশ করার পর আসন্ন নোটের নকশার উপাদান নিয়ে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন,নতুন নোট আসা নিশ্চিত। তবে নকশার সঠিক উপাদানগুলো নিশ্চিত করার সময় এখনও আসেনি।
মুজিব থাকছে কিনা?
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো নকশায় সম্ভাব্য পরিবর্তনের ইঙ্গিতে দিয়েছেন। নতুন নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের আইকনিক প্রতিকৃতি আর নাও থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা।
ধারণা করা হচ্ছে, নতুন মুদ্রায় বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক বা জুলাই বিপ্লবের দেয়ালচিত্র তুলে ধরা হতে পারে, যা একটি স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক মূল্যবোধকে তুলে ধরবে।
তারা বলেন, সরকার নতুন নোট মুদ্রণের অনুমোদন দিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষ করার পরে ছয় মাসের মধ্যে সেগুলোর প্রচলন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আইসিবিকে স্বল্প সুদে ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন দিল বাংলাদেশ ব্যাংক
নকশা সংস্কার
সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত অন্তর্দৃষ্টি থেকে বোঝা যায় যে, প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো বাংলাদেশের ব্যাংক নোটের দৃশ্যমান পরিচয়কে নতুন আকার দিতে প্রস্তুত।
যদি এটি বাস্তবায়িত হয়, তবে নকশাগুলো শেখ মুজিবুর রহমানের স্থলে ধর্মীয় স্থান, ঐতিহ্যবাহী বাংলা মোটিফ এবং কৌতূহলের জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতির উদ্দীপক চিত্রগুলো স্থান পাবে।
এই পুনর্বিন্যাসটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গোটা সম্প্রদায় থেকে জাতির পিতার প্রতিকৃতি পর্যায়ক্রমে বাদ দেওয়ার একটি বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ।
এই মাসে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে, আগামী বছরের জুনের মধ্যে এই নোটগুলো প্রচলনের পরিকল্পনা রয়েছে।
উত্তরাধিকারের রূপান্তর
বাংলাদেশে ২ টাকা থেকে ১০০০ টাকা মূল্যমানের প্রতিটি কাগজের নোটে বর্তমানে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি এবং নোটের উভয় পাশে তার প্রতিকৃতি রয়েছে।
এমনকি ধাতব মুদ্রাতেও তার ছবি রয়েছে। এটি তার স্থায়ী উত্তরাধিকারকে তুলে ধরে। নতুন নোট চালু করা হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক জনগণকে আশ্বস্ত করেছে যে, বিদ্যমান সমস্ত মুদ্রার প্রচলন থাকবে।
জাতি যখন অধীর আগ্রহে এই বিশাল পরিবর্তনের জন্য অপেক্ষা করছে। আসন্ন নোটগুলো বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে একটি নতুন আখ্যানের সঙ্গে একত্রিত করার প্রতিশ্রুতি দেয়। এটি দেশের এগিয়ে যাওয়ার যাত্রাকে তুলে ধরে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ব্যাংকের সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকার তারল্য সহায়তা
২ সপ্তাহ আগে
আইসিবিকে স্বল্প সুদে ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন দিল বাংলাদেশ ব্যাংক
ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) জন্য প্রাথমিক সুদহার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ নির্ধারণ করে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) আইসিবির চেয়ারম্যান আবু আহমেদ জানান, ঋণের দুই-তৃতীয়াংশ করপোরেশনের বিদ্যমান ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হবে এবং অবশিষ্ট অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হবে।
আরও পড়ুন: বিবিসি বাংলার প্রয়াত পাঁচ সাংবাদিককে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর ঋণ সহজীকরণে সার্বভৌম গ্যারান্টি দেয় সরকার।
এই গ্যারান্টির ভিত্তিতে গত ২৭ নভেম্বর আইসিবিকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে ১০ শতাংশ সুদে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
পরে আইসিবি বাংলাদেশ ব্যাংককে জানায় ১০ শতাংশ সুদের হার প্রতিষ্ঠানটির জন্য টেকসই নয় এবং তা কমিয়ে ৪ শতাংশ করার অনুরোধ করে।
ওই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশোধিত সুদহারে ঋণ অনুমোদন করে।
আবু আহমেদ বলেন, বৃহত্তর অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ জোরদার করার পাশাপাশি ঋণ পরিশোধে আইসিবির সক্ষমতা বৃদ্ধি করাই এই আর্থিক সহায়তার লক্ষ্য।
আরও পড়ুন: বিবিএসের তথ্য জালিয়াতির অভিযোগের মধ্যেই নতুন 'পরিসংখ্যান নীতিমালা' বাস্তবায়নের উদ্যোগ সরকারের
২ সপ্তাহ আগে
দুই গুরুত্বপূর্ণ পদ হারালেন ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহারকে স্পর্শকাতর দুই বিভাগ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২৮ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করে, যা রোববার (২৯ নভেম্বর) থেকে কার্যকর হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের পালন করছিলেন।
আরও পড়ুন: ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জানুয়ারি-মার্চে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.১২ শতাংশ: বিবিএস
গত ২৩ নভেম্বর গভর্নরের কার্যালয়ের সামনে দুই ডেপুটি গভর্নর- নূরুন নাহার ও ড. হাবিবুর রহমানের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। সর্বদলীয় ঐক্যের ব্যানারে দফায় দফায় বিক্ষোভ করেন কয়েক’শ কর্মকর্তা-কর্মচারী। পরে গভর্নরের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস পেয়ে সাময়িকভাবে আন্দোলন স্থগিত করেন বিক্ষোভকারীরা।
২০২৩ সালের এপ্রিলে তিন বছরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান নুরুন নাহার। তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান যা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়।
৩ সপ্তাহ আগে
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকার তারল্য সহায়তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকার তারল্য সহায়তা
তারল্য সংকটে পড়া কয়েকটি ব্যাংককে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা তারল্য সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সদর দপ্তরের জাহাঙ্গীর আলম সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পদক্ষেপের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করেন গভর্নর।
ব্যাংকিং খাতে তারল্য বাড়াতে টাকা না ছাপানোর সিদ্ধান্ত থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক সাময়িকভাবে সরে এসেছে বলে স্বীকার করেছেন ড. মনসুর।
আরও পড়ুন: জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর মুডির অবনমন অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রতিফলন নয়: বাংলাদেশ ব্যাংক
তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই পদক্ষেপ সাময়িক। এটি খাতটির স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এবং আর্থিক প্রবাহ বজায় রাখার জন্য নেওয়া হয়েছে। ‘কঠোর আর্থিক নীতি অপরিবর্তিত রয়েছে এবং বাজারে অতিরিক্ত তারল্য কমানোর জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
নতুনভাবে সংযোজন করা তহবিলের সম্ভাব্য অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগের বিষয়ে গভর্নর বলেন, বর্তমান পদক্ষেপগুলো সাম্প্রতিক অতীতে যা দেখা গিয়েছিল তার পুনরাবৃত্তি নয়। সেসময় অর্থ মুদ্রণের ফলে অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল।
ড. মনসুর বলেন, 'চুরির সুযোগ দূর করে স্বচ্ছ ও নিরাপদে তহবিল বরাদ্দের বিষয়টি এবার নিশ্চিত করেছি আমরা।’
আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিশ্রুতির ওপরও জোর দেন গভর্নর।
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ব্যাংকে প্রত্যেক মানুষের আমানত নিরাপদ ও সুরক্ষিত। আমানতকারীদের আস্থা ধরে রাখতে অবিরাম প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘ব্যাংকগুলোতে নগদ অর্থের সাময়িক ঘাটতি মেটাতে গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় অর্থ উত্তোলনের সুযোগ করে দিতে তারল্য সহায়তা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ সহায়তা সহজতর করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের অস্থায়ী প্রয়োজন মেটাতে সাময়িকভাবে অর্থ মুদ্রণ করবে।’
ব্যাংকে সব আমানত সুরক্ষিত রয়েছে বলে জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন গভর্নর। জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়া বা অযথা অর্থ উত্তোলন না করার আহ্বান জানান তিনি।
বাজারে প্রবর্তিত অতিরিক্ত তারল্য মুদ্রাস্ফীতির চাপ রোধে বিভিন্ন ধরনের বন্ডের মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে এস আলম গ্রুপের হুঁশিয়ারি
৩ সপ্তাহ আগে
জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর মুডির অবনমন অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রতিফলন নয়: বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সার্বভৌম ক্রেডিট রেটিং অবনমনের মুডির সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) বলেছে, এতে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে অর্জিত উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঠিক প্রতিফলন হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি মুডি'স ১৯ নভেম্বর বাংলাদেশের সার্বভৌম রেটিং বি১ থেকে বি২-এ নামিয়ে এনেছে এবং স্বল্পমেয়াদে ইস্যুয়ার রেটিং নট প্রাইম হিসেবে বহাল রেখেছে। এছাড়া দৃষ্টিভঙ্গিকে নেতিবাচক দিকে নিয়েছে।
অবনমনের কারণ হিসাবে রাজনৈতিক ঝুঁকি এবং সম্ভাব্য অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেছে রেটিং এজেন্সিটি।
বৃহস্পতিবারের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আরও বলেছে, এ বছরের শুরুতে ঐতিহাসিক রাজনৈতিক রূপান্তরের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শুরু করা মূল সংস্কার ও উন্নতিকে উপেক্ষা করা হয়েছে এই মূল্যায়নে।
এতে বলা হয়, ছাত্র-নেতৃত্বাধীন অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের আগস্টে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। নতুন সরকার অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা, দুর্নীতি রোধ এবং সুশাসন শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে ব্যাপক সংস্কার শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমেছে ১.১৭ শতাংশ: বিবিএস
অর্থনৈতিক সংস্কার ও স্থিতিশীলকরণ ব্যবস্থা
বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমান প্রশাসনের অধীনে বেশ কয়েকটি মূল পদক্ষেপ এবং অর্জনের রূপরেখা দিয়েছে যা বিশ্বাস করে যে এটি ইতিবাচক অর্থনৈতিক অগ্রগতি প্রদর্শন করে।
১. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও শাসন ব্যবস্থার সংস্কার: রাজনৈতিক দল ও প্রধান অংশীজনদের ব্যাপক সমর্থন নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনপ্রশাসন, আর্থিক খাত এবং দুর্নীতি বিরোধী প্রচেষ্টার মতো ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কার সাধন করেছে।
২. ব্যাংকিং খাত সংস্কার: বাংলাদেশ ব্যাংক ১১টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন এবং তারল্য ও কর্মক্ষমতা উন্নয়নে দৈনিক তদারকির কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিসহ ব্যাংকিং খাতের বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করেছে। এই সিদ্ধান্তে ইতোমধ্যেই এই ব্যাংকগুলোতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসার লক্ষণ দেখা গেছে।
৩. সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা: সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে ব্যালেন্স অব পেমেন্টে বড় ধরনের ভারসাম্যহীনতা, বৈদেশিক রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং মূল্যস্ফীতির চাপ। তবে ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে বৈদেশিক খাতের সূচকগুলো স্থিতিশীল হয়েছে। শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রপ্তানি প্রবৃদ্ধির কারণে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ১২০ টাকায় স্থির রয়েছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে স্থিতিশীল হয়েছে এবং বাহ্যিক অ্যাকাউন্টের ভারসাম্যহীনতায় উন্নতি হয়েছে।
৪. মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ: মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক চাহিদা ও সরবরাহ-পার্শ্ব নীতির সমন্বয় বাস্তবায়ন করেছে। চাহিদার দিক থেকে, নীতি হার সাড়ে ৮ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোসহ আর্থিক কঠোর ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। সরবরাহের দিক থেকে, প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর কর কমানো হয়েছে এবং বিশেষত কৃষিতে সরবরাহ চেইনের বিঘ্ন মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বন্যার কারণে খাদ্য মূল্যস্ফীতি উচ্চ থাকলেও গত তিন মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতির উন্নতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিবিসি বাংলার প্রয়াত পাঁচ সাংবাদিককে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ
আরও বিস্তৃত মূল্যায়ন প্রয়োজন
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করে সংস্থাটি চলমান সংস্কার প্রচেষ্টা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার বৃহত্তর চিত্র উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যুক্তি দিয়ে বলেছে, রেটিং এজেন্সির মূল্যায়ন একটি ‘পশ্চাদমুখী দৃষ্টিভঙ্গি’ এবং নতুন সরকারের অধীনে ইতিবাচক পরিবর্তনগুলো পুরোপুরি বিবেচনা করেনি।
বাংলাদেশের সংস্কার ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আরও পুঙ্খানুপুঙ্খ ও সরেজমিন পর্যালোচনা করার জন্য সংস্থাটির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ‘মূল্যায়ন করার সময় মুডি'স দুরদৃষ্টি দেয়নি’। বাংলাদেশ ব্যাংক বিশ্বাস করে, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমর্থন এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব উভয়ের সমর্থনে অব্যাহত সংস্কারের মাধ্যমে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির আরও বিস্তৃত মূল্যায়নের আহ্বান জানিয়েছে। যার মধ্যে মূল অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ এবং প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ জড়িত। বাংলাদেশ ব্যাংক দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছে, কেবল এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমেই মুডি'স বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের একটি সুষ্ঠু ও সঠিক মূল্যায়ন দিতে পারে।
আরও পড়ুন: বিবিএসের তথ্য জালিয়াতির অভিযোগের মধ্যেই নতুন 'পরিসংখ্যান নীতিমালা' বাস্তবায়নের উদ্যোগ সরকারের
১ মাস আগে
২৬৫ কোটি টাকা তারল্য সহায়তা পেল আরও ৩ ব্যাংক
চলমান নগদ অর্থের প্রবাহ সংকটের মধ্যে দেশের ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের আওতায় ২৬৫ কোটি টাকার তারল্য সহায়তা পেয়েছে আরও তিনটি ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনেয়ারা শিখা বলেন, আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যাংক ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক ঋণ চুক্তির মাধ্যমে এ তহবিল সরবরাহ করেছে।
এর আগে সংকটে পড়া আরও পাঁচ ব্যাংককে ৬ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা তারল্য সহায়তা দেওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে মোট তারল্য সহায়তার পরিমাণ দাঁড়াল ৬ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমেছে ১.১৭ শতাংশ: বিবিএস
সহায়তা গ্রহণকারী দুর্বল ব্যাংকগুলোর নাম প্রকাশে নীতিগত বিধিনিষেধের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই ব্যবস্থা ব্যাংকিং খাতের তারল্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।’
এসব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তারল্য সংকটের মূল কারণগুলো মোকাবিলা এবং ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বৃহত্তর কাঠামোগত সংস্কার জরুরি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন: আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমেছে ১.১৭ শতাংশ: বিবিএস
১ মাস আগে