সোমবার দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: কুয়াকাটা পৌর নির্বাচনের প্রচারণায় সংঘর্ষে আহত ২৪
সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কেন্দ্রে ত্রাস সৃষ্টি করে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করছে। ভোটারদের প্রথম ফিঙ্গার প্রিন্ট নেয়ার পরে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে এবং বাকি কাজ আওয়ামী লীগের দলীয় লোকজন সেরে নিচ্ছে।’
নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের সনত কুমার বিশ্বাস, বিএনপির মো. আবুল খয়ের খান ও স্বতন্ত্র অচিন্ত্য কুমার মন্তল ও গৌতম কুমার রায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ছিলেন।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জ পৌর নির্বাচন: নৌকার প্রার্থীকে বর্তমান মেয়রের সমর্থন
সংশ্লিষ্টরা জানান, সোমবার বেলা ১১টার দিকে চালনা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের শিশু কানন প্রি-ক্যাডেট স্কুলকেন্দ্রে ভোট চলাকালে দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সনত কুমার বিশ্বাস ও স্বতন্ত্র জগ প্রতীকের প্রার্থী অচিন্ত্য কুমার মন্ডলের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে কেন্দ্রে উত্তেজনা তৈরি হলে পুলিশ লাঠি পেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরও পড়ুন:ফরিদপুর পৌর নির্বাচন: মেয়র পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী আ’লীগে ১৭, বিএনপির ৫
কেন্দ্রের দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা সরদার ইব্রাহিম হোসেন সোহেল বলেন, দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সাথে সাথে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চালনা এমএম কলেজ কেন্দ্রে ওই দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে অপর একটি হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এদিকে, বিএনপির প্রার্থী অসুস্থ থাকায় খুলনা মহানগরীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। প্রথম থেকে তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় নামেননি।
আরও পড়ুন:ফরিদপুরে ২ পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, প্রার্থীদের তোড়জোড়
পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ‘কয়েকটি কেন্দ্রে থেকে আওয়ামী লীগের কর্মীরা আমাদের এজেন্টদের বের করে দেয়। এছাড়া অনিয়ম করার অভিযোগে আমরা ভোট বর্জন করছি। যেখানে একজন ভোটার তার ভোট সঠিকভাবে প্রদান করতে পারছে না। সেখানে ভোট করে আর কি হবে। ফিংগার প্রিন্ট দেয়ার পরে ইভিএমে আওয়ামী লীগের লোকজন ভোট দিয়ে দিচ্ছে।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী গৌতম কুমার রায় বলেন, ‘আমার এজেন্টদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দিচ্ছে। ভোটারদের সঠিকভাবে ভোট দিতে দিচ্ছে না। ভোটারদের আঙুলের ছাপ মেশিনে দেয়ার পরে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা গোপনকক্ষে ঢুকে জোর করে মেশিনের বাটুন চেপে ভোট প্রদান করছে। অভিযোগ করেছি, তবে ভোট বর্জন করবো না।’
আরও পড়ুন: চাঁদপুর পৌর নির্বাচন: সহিংসতায় নিহত ১
এ ব্যাপারে দাকোপ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী মাহামুদ হোসেন জানান, ‘মৌখিকভাবে শুনেছি বিএনপি ভোট বর্জন করেছে। বিভিন্ন নির্বাচনের দিনে দ্বিতীয়ার্ধে বিএনপি ভোট বর্জনের এমন কাজ করে থাকে। এতো সুন্দর ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার নির্বাচনের পরও যদি ভোট বর্জন করে তাহলে করার কিছু নেই।’
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের নভেম্বরে চালনা পৌরসভার যাত্রা শুরু হয়। ওই সময়ে বিএনপি নেতা মো. আবুল খয়ের খান পৌর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালের নির্বাচনে সাবেক মেয়র অচিন্ত্য কুমার মন্ডলের কাছে পরাজিত হন বর্তমান মেয়র সনত কুমার বিশ্বাস। সেবার এ তিন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেন। ২০১৫ সালের নির্বাচনে এর উল্টো হয়। সনত বিশ্বাস আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে বিজয়ী হন এবং বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী শেখ আব্দুল মান্নান তৃতীয় হন। ওই নির্বাচনে অচিন্ত্য মন্ডল আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।