আন্দোলন
সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির আন্দোলনের বিজয় নিশ্চিত: নজরুল ইসলাম খান
সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির আন্দোলনের বিজয় নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, তাদের চলমান আন্দোলনের বিজয় নিশ্চিত, কারণ সরকার দমনমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিরোধী দলকে দমন করতে পারবে না।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘যারা আন্দোলন করছে, তাদের এখন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমাদের নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ সবাইকে শুধু রাজপথে নামার জন্য কারাগারে রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ৭ জানুয়ারির তফসিল বাতিলের দাবি বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) শ্রমিকদের সমাবেশে কাল্পনিক মামলা দায়ের এবং বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের পাইকারি গ্রেপ্তার বন্ধ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি নেতা।
তিনি আরও বলেন, ‘যারা অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের মুক্তি দিতে এবং আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি মেনে নিতে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বলপ্রয়োগ ও দমন-পীড়নের মাধ্যমে আন্দোলন দমন করা যাবে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বের কোনো স্বৈরাচারী সরকার দমন-পীড়ন চালিয়ে জনগণের মন জয় করতে পারে না। এই সরকারও তা করতে পারবে না। আমাদের সংগ্রাম গণতন্ত্রের জন্য এবং জনগণের ভোটাধিকারের জন্য। আমরা অবশ্যই এই লড়াইয়ে জয়ী হব।’
গার্মেন্টস শ্রমিক হত্যার বিচার, আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও সুচিকিৎসা এবং সাম্প্রতিক আন্দোলনে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদ।
গ্রেপ্তার হওয়া শ্রমিকদের মুক্তি, চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহাল এবং পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার জন্য সরকারের উপর চাপ বাড়ানোর লক্ষ্যেও এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মান্না বলেন, সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিরোধী দলগুলোর চলমান আন্দোলন বন্ধ করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি মানুষ ভোট দিতে যাবে না। কিন্তু তারা (সরকার) নাটকের মতো মঞ্চে অনেক কেন্দ্র প্রস্তুত করবে। পরে সন্ধ্যায় তারা ঘোষণা করার চেষ্টা করবে যে আমরা নির্বাচনে জয়ী হয়েছি।’
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানিতে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে এমন জল্পনা-কল্পনা রয়েছে উল্লেখ করে মান্না বলেন, জাতীয় নির্বাচনের নামে কীভাবে নাটক করা যায় তা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সরকার এ ধরনের গুরুতর বিষয় নিয়ে ভাবছে না।
তিনি দাবি আদায়ের পাশাপাশি জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন অব্যাহত রাখার জন্য শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি বলেন, সরকার জনগণ ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের মতামত উপেক্ষা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্যান্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখলের ‘প্রহসনের’ নির্বাচন করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র শ্রম অধিকার নিয়ে একটি নতুন নীতি ঘোষণা করেছে।’
তারা বলেন, ‘এ ধরনের একতরফা নির্বাচন হলে এবং শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘিত হলে তারা আমাদের পোশাক খাতের উপর নতুন বিধিনিষেধ বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে।’
সাকি অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকার বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন ছাড়াই শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে যাচ্ছে। সরকারের এই প্রচেষ্টা কোনোভাবেই সফল হতে দেওয়া যাবে না।’
একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানেসরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য তিনি শ্রমিকসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: শাহজাহান ওমরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে ঝালকাঠি জেলা বিএনপি
৭ জানুয়ারি নির্বাচন: তফসিল ঘোষণার পর থেকে ১৫ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি
‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদারের পরিকল্পনা বিএনপির’
২৮ অক্টোবরের সহিংসতার পর দলের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতা দৃশ্যত আত্মগোপনে চলে গেলেও, আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর চলমান আন্দোলন জোরদার করতে ফের রাজপথে নামতে পারেন বিএনপি নেতারা।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, একতরফা নির্বাচন ঠেকাতে তারা ইতোমধ্যে হরতাল, অবরোধ ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও বিভিন্ন সরকারি অফিস ঘেরাওয়ের মতো কঠোর কর্মসূচি দিয়ে বিরতিহীন আন্দোলন করার কৌশল তৈরি করেছেন।
তারা বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে কী করতে হবে সে বিষয়ে তাদের দল সমমনা দলগুলোরও মতামত নিয়েছে এবং অধিকাংশ দল কোনো বিরতি ছাড়াই অবরোধ বা হরতাল কার্যকর করার পরামর্শ দিয়েছে।
তাদের কৌশল অনুযায়ী, আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) একটি নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা এবং তফসিল বাতিল করার জন্য ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
ইসি যদি তাদের আল্টিমেটামে কর্ণপাত করে, তাহলে তারা তাদের কর্মসূচি নিয়ে সারাদেশে রাজপথে তাদের শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করবে।
সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনকে তার দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য।
বিএনপি নেতারা বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ রাষ্ট্রযন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে ইসি কীভাবে সংবিধানে প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে তা তারা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন।
বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তার বন্ধ এবং গ্রেপ্তার দলের সিনিয়র নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিতে ইসির ভূমিকাও তারা পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানান।
আরও পড়ুন: তৈরি পোশাক শিল্পকে অন্য দেশে নিয়ে যেতে চায় সরকার: রিজভী
বিএনপির দাবি, ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ এবং পরবর্তী হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১০ হাজার ৭৭০ বিরোধী নেতা ও অনুসারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান খোকন প্রমুখকে দলের মহাসমাবেশ ও সহিংসতার পর গ্রেপ্তার করা হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির ১৯ সদস্যের মধ্যে জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান এখন রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। তবে গ্রেপ্তার এড়াতে তারা এখন গোপনে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করছেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ স্থায়ী কমিটির তিন সদস্য বিদেশে অবস্থান করছেন।
অন্য দলের নীতিনির্ধারকরা হয় মারা যান বা শারীরিক অসুস্থতার কারণে নিষ্ক্রিয় থেকে যান।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ অন্যান্য সক্রিয় সদস্যরাও পলাতক রয়েছেন এবং দলের নেতা-কর্মীদের গোপন আস্তানা থেকে পথ দেখান।
দলের স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আন্দোলন জোরদার করতে দলীয় কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর জন্য নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেই তারা তাদের গোপন স্থান থেকে বেরিয়ে আসবেন।
তিনি বলেন, জেলা পর্যায়ে মহাসড়ক ও সড়কে পিকেটিং বাড়ানোর মাধ্যমে অবরোধ কর্মসূচিকে আরও কার্যকর করে ঢাকাকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘বর্তমান সরকারের অধীনে আমাদের দল সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে না। তাই তফসিল ঘোষণার পর আমাদের নেতা-কর্মীরা রাজপথে নেমে আন্দোলনে নামবেন।’
আরও পড়ুন: একতরফা নির্বাচনের লক্ষ্যেই বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ: রিজভী
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সব রাষ্ট্রযন্ত্র কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার অব্যাহত থাকলে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা আরও প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এছাড়া সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতা নিয়ে দেশ-বিদেশে প্রশ্ন উঠবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, সরকার মনে করতে পারে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে বিএনপি দুর্বল হয়ে পড়বে।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু এটা হবে না। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন বাতিলের উদাহরণ আমরা দেখেছি। বিএনপি রাজপথে থেকে সব পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে। জনগণ এবার সরকারকে নির্বাচনের নামে নাটক করতে দেবে না।’
বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য বিএনপির আন্দোলন এবার ব্যর্থ হবে না। ‘তফসিল ঘোষণা হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আমাদের কোনো উপায় থাকবে না। আমরা তুমুল গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে আমাদের দাবি পূরণে বাধ্য করব।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, তাদের দল কোনো অবস্থাতেই আন্দোলন থেকে পিছপা হবে না।
তিনি বলেন, বিরোধী দলগুলোর মতামত উপেক্ষা করে একতরফা তফসিল ঘোষণা করা হলে তা প্রমাণ করবে সরকার ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যাপারে আন্তরিক নয়।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন নেই: বিএনপি
আন্দোলন মানে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো নয়: তথ্যমন্ত্রী
আন্দোলন করার অধিকার সবার আছে, কিন্তু আন্দোলন মানেই গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো নয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সমপ্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, অবরোধের নামে বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াও জনগণ সমর্থন করে না।
রবিবার (১২ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: তথ্যমন্ত্রী সম্পর্কে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
হাছান বলেন, আন্দোলন করার অধিকার সবার আছে। সরকারের পদত্যাগ চাওয়ার অধিকার আছে। আমার পদত্যাগ চাওয়ার অধিকার আছে। ‘সেই অধিকার সবার আছে। কিন্তু সেটা মানে এই নয় যে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো। এটিকে কেউ সমর্থন করেনি। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনেক সদস্য তাদের এই কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে। আরও অনেকে বিদেশ থেকে নিন্দা জানিয়েছে। বিএনপি নানাভাবে অনেককে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ড কেউ সমর্থন করেনি, করতে পারে না্।’
তিনি আরও জানান, অবরোধের নামে আগের রাত থেকে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো হচ্ছে। আজ অবরোধ ডাকলে, গতকালই শুরু হয় গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো। মানুষ ভেবেছিল, যেহেতু আগামীকাল অবরোধ, সেহেতু আজ গাড়ি-ঘোড়ার ওপর বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা হামলা চালাবে না। কিন্তু গতকাল থেকেই তা শুরু হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি এটি হতে পারে না। এগুলোকে শুধু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বললে কম হবে।
‘মানুষের সহায়-সম্পত্তিতে চোরাগোপ্তা হামলা চালানো হচ্ছে। একটি গাড়ি পোড়ানো মানে একটি পরিবারকে পুড়িয়ে দেয়। একটি পরিবারের স্বপ্ন পুড়িয়ে দিয়ে তাদের স্বপ্নকে পথে বসানো। যারা রাজনীতি করেন, তারা এ কাজ করতে পারেন না। হ্যাঁ, তারা রাস্তায় নেমে এসে ব্যারিকেড দিক, মানুষকে বলুক—আমরা অবরোধ ডেকেছি, আপনারা পালন করুন। সেটি তো তারা করে না।’
চলতি সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে বলে নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হচ্ছে। কিন্তু বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে, তারা কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। এ নিয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনে যাওয়া কিংবা না যাওয়া—সেই অধিকার যেকোনো রাজনৈতিক দলের আছে। তারা নির্বাচনে যেতে পারে, না-ও যেতে পারে। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করার এখতিয়ার কারো নেই।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন প্রতিহত করার কথা বলা মানেই দেশ ও গণতন্ত্রবিরোধী কথাবার্তা। যারা এমন ধরনের বক্তব্য রাখবে কিংবা অপচেষ্টা চালাবে, তাদের বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলব। সরকার ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে গণতন্ত্রের অভিযাত্রা অব্যাহত রাখা। এ জন্য যা কিছু করা দরকার, সেটা করা হবে।’
আরও পড়ুন: ডিস লাইন ডিজিটালাইজড করার সময় বাড়ানো হবে: তথ্যমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টু প্লাস টু বৈঠক করেছে ভারত। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়েও কথা হয়েছে। সে বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই বৈঠক ছিল একান্তই দ্বিপাক্ষিক। সেখানে কী আলোচনা হয়েছে, সেটা পত্রপত্রিকায় এসেছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নির্বাচন ও উন্নয়ন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারত যেটি বলেছে, সেটি যথার্থ বলেছে। কাজেই বাংলাদেশের নির্বাচন ও উন্নয়ন এ বিষয়ে এ দেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। নির্বাচনের মাধ্যমে কে ক্ষমতায় আসবে, তাও বাংলাদেশের জনগণ ঠিক করবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে বিদেশে চিকিৎসার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয় প্রধান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি সরকারের হাতে নেই, এটা তো আইনের হাতে, আদালতের হাতে। সরকার চাইলেও তাকে মুক্তি দিতে পারবে না। সরকারের হাতে যতটুকু ক্ষমতা ছিল, তার সাজা স্থগিত রেখে তাকে ঘরে মুক্ত থাকার ব্যবস্থা করা, সেটা সরকার করে দিয়েছে।
এ সময়ে মাতারবাড়ি সমদ্রবন্দরের কারণে সামুদ্রিক বাণিজ্যের দুয়ার ও সম্ভাবনা খুলে গেছে বলেও জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর হবে। এটি ছোটোবেলা থেকে শুনে এসেছি, হয়নি। এবার সত্যিকার অর্থে গভীর সমুদ্রবন্দর মাতারবাড়িতে হয়েছে। এটি আমাদের সামুদ্রিক বাণিজ্যের বিশাল দুয়ার খুলে দিয়েছে। সেখানকার পুরো এলাকা বদলে গেছে। কক্সবাজার শহর বদলে গেছে। এভাবে দেশের প্রতিটি শহর ও গ্রাম বদলে গেছে। মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরেরই একটি অংশ। গতকালকের অনুষ্ঠান চট্টগ্রাম বন্দরের আয়োজনেই হয়েছে।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন এই উন্নয়ন করে যাচ্ছেন, তখন দেশ ধ্বংসের জন্য পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে জনগণের ওপর। তারা কোনো উন্নয়ন দেখতে পান না। এই ধ্বংস ও পেট্রোল বোমার বিরুদ্ধে সবাই মিলে সোচ্চার হলে আমি মনে করি, এগুলো বন্ধ হবে,’ বলেন হাছান মাহমুদ।
আরও পড়ুন: হামলার দায় ফেসবুক এড়াতে পারে না: তথ্যমন্ত্রী
গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনে বিএনপির ইন্ধন রয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
পোশাক শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর আন্দোলনে বিএনপির ইন্ধন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
রবিবার (১২ নভেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপির কর্মীরাই গার্মেন্টস শ্রমিকদের উসকে দিচ্ছে। সব দিকে ফেল করে গার্মেন্টস খাতে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে বিএনপি।
আরও পড়ুন: সব দল সম্পৃক্ত করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা করছি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এর আগেও গার্মেন্টস কর্মীদের বেতন বাড়িয়েছেন, আবার বেতন বাড়িয়েছেন। গার্মেন্টস সমস্যা মালিক সমাধান করবে।
রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, জাতিসংঘের এমন বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, এ কথা সঠিক নয়। তারা ২৮ তারিখ একজন পুলিশকে হত্যা করেছেন, অনেককে আহত করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সঠিক কাজ করছেন। নেত্রীকে পিটানো, বিচারপতির বাড়িতে হামলা, পুলিশকে হামলা এসব ঘটনা ভিডিও দেখে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
এদিকে বেগম জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিয়ে মুক্তি দিতে, জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধানের বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাজা স্থগিত করে বাসায় রেখে চিকিৎসা ব্যবস্থা করে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী।
মন্ত্রী আরও বলেন, বিদেশ গেলে কী হবে জানি না। তবে বিদেশ থেকে চিকিৎক আনার সুয়োগ করে দিয়ে সর্বোচ্চ চিকিৎসার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করলে, নির্বাচনে আসবে কি না তাদের বিষয়।
মন্ত্রী বলেন, গাড়ি-ট্রেন সব চলছে, মানুষের মধ্যে একটা আতঙ্ক কাজ করছে। এ ছাড়া যারা পেট্রোলের বোতল নিয়ে ঘুরছে তাদের জনগণই প্রতিহত করবে।
ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে দেওয়ার পরেও তৈরি পোশাক শিল্পে অস্থিরতা চলছে- এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ মজুরি বাড়িয়েছেন। শ্রম মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ অনুযায়ী পোশাক ব্যবসায়ীরা এই বেতন বাড়িয়েছেন। ৮ হাজার থেকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা করেছেন।
তাদের মনে অনেক সংশয় আছে বলে আমরা শুনতে পেয়েছি যে সেকেন্ড গ্রেড, থার্ড গ্রেড- এগুলোর কী হবে? গার্মেন্টেসের মালিকপক্ষ এগুলোর সমাধান করে দেবেন। তারাও তো ব্যবসা করেন।
আগুন, ভাঙচুর কিংবা রাস্তা অবরোধ করে এই সমস্যার সমাধান হবে না বলেও জানিয়েছেন আসাদুজ্জামান খান।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই সংলাপে উৎসাহ দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, সবচেয়ে প্রণিধানযোগ্য হচ্ছে, বিক্ষোভের যেসব ভিডিও ফুটেজ পাচ্ছি, তাতে দেখা যাচ্ছে- এরা সবাই বিএনপির কর্মী। কুষ্টিয়ার এক বিএনপির নেতা কোণাবাড়িতে এসে গার্মেন্টস কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করছিলেন। এভাবে যারা ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন কিংবা ধরতে পেরেছি, তারা সবাই বিএনপির কর্মী বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে।
তারা নিরীহ শ্রমিকদের ইন্ধন দিচ্ছেন, তাদের জড়ো করছেন। সব জায়গায় ব্যর্থ হয়ে এই জায়গায় এসে সফলতা পাওয়া যায় কি না, তারই একটা ব্যবস্থা তারা করতে চাচ্ছেন।
আমি মনে করি, শ্রমিকদের যদি আরও কিছু দাবি থাকে, তাহলে তা বিজিএমই’র নেতাদের সঙ্গে বসে ফয়সালা করা যাবে। সেগুলো না করলে নিজেদের ও দেশের ক্ষতি হচ্ছে বলে তাদের চিন্তা করা উচিত।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশের সেরা হাসপাতাল থেকে তিনি চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন এবং বিদেশ থেকেও বিশেষজ্ঞরা এসে তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। কাজেই চিকিৎসার ঘাটতি হচ্ছে বলে আমার মনে হচ্ছে না।
কয়েকদিন পর আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল হবে। কিন্তু বর্তমানে যেভাবে অবরোধের নামে গাড়ি পোড়ানো হচ্ছে, এ নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে।
নির্বাচন পর্যন্ত কী এভাবে চলতে থাকবে, প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি তো সেটা বলিনি। আমি বলেছি, তাদের চরিত্রই এমন। তারা সবসময়ই সন্ত্রাস ডেকে ষড়যন্ত্র করে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে এসব কর্মসূচি দিচ্ছে।
আমি কয়েকটি উদহারণও দিয়েছি। সময়মতো নির্বাচনের ডাক দেবে নির্বাচন কমিশন, সবাই সেখানে অংশ নেবেন। এমনটিই জনগণের প্রত্যাশা।
আমরা এখনো বলি, তারা নির্বাচনে আসবেন, নির্বাচন ছাড়া সরকার পাল্টানোর আর কোনো সুযোগ নেই। কাজেই নির্বাচনে তাদের আসতে হবে, যদি সরকার পরিবর্তন করতে চায়।
যারা জ্বালাও-পোড়াও করছেন, তাদের খুঁজে খুঁজে বের করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ দেশের জনগণও যথেষ্ট সজাগ হয়েছে। জনগণও তাদের ধরিয়ে দিচ্ছে। আমরা অনেক জায়গায় দেখেছি, যারা পেট্রোলের বোতল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছেন, তাদের জনগণ ধরিয়ে দিচ্ছেন। জনগণ যখন ঘুরে দাঁড়াবে, তখন এগুলো অটোমেটিক (এমনি এমনি) বন্ধ হয়ে যাবে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা কারাগারে, এ অবস্থা থাকলে তারা নির্বাচনে আসবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনে আসবেন কি- আসবেন না, এটা তাদের এখতিয়ার। আমাদের কথা হচ্ছে, ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ ঘিরে লঙ্কাকাণ্ডের আগে আমরা বিএনপির কোনো নেতা-কর্মীদের ধরিনি। সেখানে যখন নৃশংসতা ও বর্বরতা চলছে, তখন তারা মঞ্চে বসে ছিলেন। তারা তো দুঃখ প্রকাশ করতে পারতেন জাতির উদ্দেশ্যে যে আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু কর্মী এসব করেছে। এটা আমাদের কাম্য ছিল না।
কিন্তু দুঃখ প্রকাশের পরিবর্তে তারা অব্যাহত হরতালের ডাক দিয়েছেন। একজন বাসের হেল্পার শুয়ে ছিলেন, বাস পাহারা দিচ্ছিলেন, তাকেসহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাসটি।
এতে কী প্রমাণ হয়? বিএনপির বড়ো বড়ো নেতারা কী দায় এড়াতে পারবেন?
তারা বলতে পারতেন- তোমরা বাসে আগুন দিও না, তোমরা এই মানুষ হত্যা কর না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে, তারা এসব থেকে বিরত থাকবে বলেই আশা করছি।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্য থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরাতে এসওপি হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনে বিএনপির কালো হাত আছে: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পোশাক কারখানায় শ্রমিক আন্দোলনে স্পষ্টত বিএনপি ও তার দোসরদের কালো হাত আছে।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথ সভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
উসকানি ও গুজবে নিরীহ শ্রমিকদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শ্রমিক অধিকাংশ দাবি সমাধান হয়ে গেছে। বাকীটা সমাধানে শ্রমিকেরা এগিয়ে আসবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি মনিটরিং করছেন।
শ্রমিকদের কাজে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, শ্রমিকেরা নিজেদের ক্ষতি নিজেরা করবে না। শ্রমিকেরা বিভ্রান্ত হলে ক্ষতিটা দেশের এবং শ্রমিকের নিজের হবে। গুজব রটনাকারীদের ক্ষতি হবে না।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতৃত্বাধীন শক্তিকে প্রতিহত ও পরাজিত করতে হবে: কাদের
কাদের বলেন, বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধীদলের আন্দোলনের নামে চোরাগোপ্তা হামলাকে প্রতিরোধ করতে হবে এবং নির্বাচনের পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে ভিন্নমতের প্রতিকূল স্রোতের সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছি আমরা।
তিনি বলেন, আজকে বিভিন্নভাবে সরকার বিরোধী চক্রান্ত চলছে, দেশে বিদেশে সরকারবিরোধী তৎপরতা চলছে।
কাদের আরও বলেন, ২৮ তারিখে তাদের(বিএনপি) আন্দোলন ব্যর্থতায় পর্যবসিত- এটা বলা যায়। এখন স্বাভাবিক আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পর তারা অস্বাভাবিক পথে চলতে শুরু করেছে। তাদের পুরনো রাজনীতির অভ্যাস অগ্নিসন্ত্রাসের উপাদান যুক্ত করেছে। এসব করে তারা শেখ হাসিনাকে হটানোর জন্য সর্বশেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রকাশ্যে পারছে না, চোরাগোপ্তা হামলা করছে।
যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আফম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুরসহ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।
আরও পড়ুন: পাড়া-মহল্লায় আগুনসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তুলুন: তথ্যমন্ত্রী
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের মধ্যে বুধবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দল যেসব কর্মসূচি ঘোষণা করবে, আমাদের নেতা-কর্মীরা তা পালন করবে। আমাদের গন্তব্য হয় জেলখানা অথবা মহাসড়ক।
আরও পড়ুন: পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিন: প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী
রিজভী বলেন, ‘এই দুইয়ের মাঝখানে কিছুই নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাদের জেলে নিয়ে যেতে পারে, নানাভাবে আঘাত করতে পারে, নির্যাতন করতে পারে, কিন্তু আমরা সবকিছু মেনে নেব এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে।’
ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সদস্য সচিব আল-আমিনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাদা পোশাকের সদস্যরা তুলে নিয়েছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘আমাদের একজন ছাত্রনেতা কোথায় আছেন বা কেমন আছে তা আমরা জানি না। শেখ হাসিনার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো প্রতিদিন এসব কাজ করছে।’
তিনি বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা যাতে আন্দোলন চালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য সামগ্রিক নৈরাজ্যকর ও ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে, কিন্তু সরকার ব্যর্থ হবে।
গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে উন্নত মজুরির দাবিতে আন্দোলনরত গার্মেন্টস শ্রমিকদের উপর পুলিশের হামলায় এক নারী শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।
তিনি দাবি করেন, দেশব্যাপী অবরোধের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১৫ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ১৮টি মামলায় ১ হাজার ৯২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ‘২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের পর থেকে এ পর্যন্ত ১২ হাজার ৪৪৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার ও ৫৭৯টি মামলা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এত নিপীড়ন, নির্যাতন ও নাশকতার মধ্যে দুই দিনের অবরোধের প্রথম দিন চলছে। এই কর্মসূচি সফল হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সারাদেশে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করেনি। কারণ তারা যাত্রী পায়নি। তার মানে আমাদের কর্মসূচির প্রতি মানুষের সমর্থন রয়েছে।’
আরও পড়ুন: রাজপথে বিরোধী দলের ব্যাপক উপস্থিতি সরকারকে বিভ্রান্ত করছে: রিজভী
টিক্কা ও নিয়াজির চরিত্রে অভিনয় করছেন কাদের: রিজভী
বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হলেও ‘বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত’ সরকারের পতনের জন্য বিএনপির এক দফা আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, ‘বিজয় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। রবিবার সকাল থেকে আমাদের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা হবে।’
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা এ কথা বলেন।
এদিকে অবরোধ পালনের সময় সরকারের কোনো প্ররোচনায় সাড়া না দিতে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বিএনপির ঢাকা উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুলসহ ৪ জন গ্রেপ্তার: রিজভী
তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য তারা আন্দোলন করছেন, যাতে তারা নির্ভয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারেন।
তিনি বলেন, জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায়ের জন্য এটি একটি আদর্শ আন্দোলন। যারা গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার পক্ষে এবং স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে, তারা সবাই এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সমর্থন করবে এবং এর সঙ্গে থাকবে।
রিজভী বলেন, নির্বাচনের প্রাক্কালে গভীর রাতে ভোট কারচুপির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশন বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সংসদের সংসদ সদস্যরা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সুবিধা অর্জনের জন্য বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
রিজভী বলেন, ‘তারা সাধারণ মানুষের জন্য ভালো কিছু করেনি।’
তিনি বলেন, ‘২৭২ কার্যদিবসের এই সংসদ আওয়ামী লীগের গুঞ্জনের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। গত পাঁচ বছরে এই অবৈধ পার্লামেন্টে প্রায় ১৬৫টি বিল পাস হয়েছে এবং এর প্রায় সবগুলোই গণবিরোধী। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে এই অবৈধ সংসদে গৃহীত অবৈধ আইনগুলো বুড়িগঙ্গা নদীতে নিক্ষেপ করা হবে।
একাদশ জাতীয় সংসদের কার্যক্রম পরিচালনায় বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দল একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন, পুলিশ ও প্রশাসন তাদের সব শক্তি নিয়ে মাঠে রয়েছে। আমরা সারা দেশ থেকে খবর পাচ্ছি যে, শেখ হাসিনা ও তার সরকার প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে নতুন নোংরা মিশন শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় ২ কোটি সুবিধাভোগী ও কার্ডধারীদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও নেতারা প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি উপজেলায় সরকারের বিভিন্ন বিভাগ থেকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী প্রকল্পের আওতায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সুবিধাপ্রাপ্তদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। ডিসি, এসপি, ইউএনও ও ওসিরা বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করাই এসব সমাবেশের উদ্দেশ্য।’
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা।
রিজভী বলেন, জনগণকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে যে, আগামী নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে না গেলে এই সুবিধা গ্রহণের জন্য তারা যে কার্ড ব্যবহার করেন তা বাতিল করা হবে।
তিনি বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে বিদেশিদের সন্তোষজনক ভোটার উপস্থিতি দেখানোর জন্য শেখ হাসিনা এই ভয়ানক কৌশল নিয়েছেন।’
রিজভী বলেন, শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মাত্র ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির ২৯২ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকারের কোনো কৌশলই বিএনপির আন্দোলন দমন করতে পারবে না: রিজভী
বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান সারোয়ারকে আটক করেছে পুলিশ: রিজভী
সরকারের কোনো কৌশলই বিএনপির আন্দোলন দমন করতে পারবে না: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমান সরকারের পতন আসন্ন। বিরোধী দলের চলমান এক দফা আন্দোলন দমনে তাদের কোনো কৌশল কাজ করবে না।
এক বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, অবরোধ কর্মসূচিতে ভীত হয়ে সরকার বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে, রিমান্ডে নিয়ে নিপীড়ন চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: আব্বাস ও আলালের গ্রেপ্তারের নিন্দা রিজভীর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, 'বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল এবং জনগণের সঙ্গে এর সম্পর্ক রয়েছে। সুতরাং আন্দোলন দমনে আপনাদের (সরকারের) কোনো কৌশল সফল হবে না।
তিনি আরও বলেন, গণহারে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে বিএনপির নেতৃত্ব দুর্বল করা যাবে না। যিনি কারাগার থেকে বের হবেন তিনিই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবি আদায়ে জনগণ বদ্ধপরিকর। এই অবৈধ সরকারের শিগগিরই পতন ঘটবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার একতরফাভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে আবারও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে। এই ঘৃণ্য উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য তারা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কারারুদ্ধ করার ঘৃণ্য খেলায় লিপ্ত হয়েছে।
রিজভী অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদী সরকার বিএনপির নেতৃত্ব নির্মূল করতেই দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের গ্রেপ্তার করছে। জ্যেষ্ঠ নেতাদের ৮/১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হচ্ছে।
সরকার ভেবেছিল, এভাবে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হলে বিএনপির আন্দোলন দমন করা হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গুলশানের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান সারোয়ারকে আটক করেছে পুলিশ: রিজভী
বিএনপির ঢাকা উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুলসহ ৪ জন গ্রেপ্তার: রিজভী
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশ শুক্রবার
সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির প্রবর্তন এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিলের দাবিতে শুক্রবার (৩ নভেম্বর) মহাসমাবেশ করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) বেলা ১২টায় পুরানা পল্টনের কার্যালয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান দলটির নায়েবে আমির মুফতী ফয়জুল করীম।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মহাসমাবেশ সফলে প্রশাসন, পরিবহন মালিক শ্রমিক, সাংবাদিক সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের কাছে তথ্য এসেছে যে কোথাও কোথাও প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নেতা-কর্মীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মহাসমাবেশে না আসার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, যেখানে প্রশাসনের অনুমতি হয়েছে, সেখানে ভয়ভীতি প্রদর্শন মেনে নেয়া হবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার পতনে মহাসমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিক্ষোভ সমাবেশ
তিনি সারাদেশে সকল জেলা, থানা, ইউনিয়ন ওয়ার্ডের ইসলামী আন্দোলন এবং সকল সহযোগী সংগঠনের সকল নেতাকর্মী, ছাত্র-শিক্ষক, শ্রমজীবী, পেশাজীবীসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে আগামীকালের মহাসমাবেশে উপস্থিত হয়ে সমাবেশকে সফল করার আহবান জানান।
বিরোধী দলের কর্মসূচিতে আহত হয়ে মৃত্যুবরণকারী সাংবাদিক, পথচারী ও পুলিশের মৃত্যুতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করে তাদের মাগফিরাত কামনা করে মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, আমাদের মহাসমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। সংঘাত সহিংসতা কাম্য নয়।
মহাসমাবেশ নিয়ে কোন প্রকার অপপ্রচার এবং বিভ্রান্তিতে কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ফয়জুল করীম বলেন, আগামীকালের মহাসমাবেশ স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসমুদ্রে পরিণত হবে। দেশবাসীকে কোন অপপ্রচার ও বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
দেশ, ইসলাম ও মানবতার পক্ষে এ সমাবেশ গুরম্নত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে উল্লেখ করে, তিনি বলেন সাম্প্রতিক সময়ের আন্দোলনে যারা আহত, নিহত হয়েছে তাদের প্রতি সমবেদনা জানান। অন্যায়ভাবে যে সকল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অবিলম্বে তাদের মুক্তিরও দাবি জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মহানবীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য: ইসলামী আন্দোলনের গণমিছিলে পুলিশের বাধা
নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশ করবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেখানে আমরা নির্বাচন কমিশন বাতিলের দাবি করছি, যে নির্বাচন কমিশন প্রার্থীর মৃত্যু কামনা করেন, সে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশগ্রহণের প্রশ্ন কিভাবে আসতে পারে?
বিরোধী দলের কর্মসূচির প্রতি সমর্থন আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির প্রতি আমাদের সমর্থন আছে।
জাতীয় সরকারের রূপরেখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধির সমন্বয়ে জাতীয় সরকার গঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান।
আরও পড়ুন: সিলেট ও রাজশাহী সিটি নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা ইসলামী আন্দোলনের
সরকার পতনের আন্দোলন নভেম্বরেই চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে চায় বিএনপি
ক্ষমতাসীন দলের ভয়াবহ পরিণতির হুঁশিয়ারির মধ্যে বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো সরকার পতনের জন্য কঠোর কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায় শুরু করতে যাচ্ছে। ফলে আগামী মাসের শুরুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে।
বিএনপির একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা ইউএনবিকে বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর তাদের দল ঢাকায় জনসভা করতে পারে। সেই জনসভা থেকেই তারা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস অভিমুখে পদযাত্রা অথবা অফিস ঘেরাও, সচিবালয় বা নির্বাচন কমিশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন এবং ঢাকার প্রবেশপথ অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে।
তবে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
বিএনপির নেতারা বলেন, তাদের কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হচ্ছে আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা রোধ করা এবং অন্তবর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে সরকারকে বাধ্য করা।
এদিকে, সরকারের পদত্যাগ এবং বিদেশে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তিসহ এক দফা দাবিতে বুধবার রাজধানীতে জনসভা করবে বিএনপি।
সমাবেশ থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দেবেন। কঠোর কর্মসূচি এড়ানোর জন্য তাদের এক দফা আন্দোলন মেনে নিতে সরকারকে শেষ সতর্কবার্তা দেওয়ার কথাও রয়েছে তার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য ইউএনবিকে বলেন,নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। তাই তফসিল ঘোষণার অন্তত দুই সপ্তাহ আগে আমরা কঠোর কর্মসূচি শুরু করতে চাই। ‘আমরা মনে করি, আমাদের আন্দোলন ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করবে।’
আরও পড়ুন: চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হোন, পেছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই: ফখরুল
যেসব রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলন করছে, তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে চূড়ান্ত পর্যায়ের আন্দোলনের সম্ভাব্য কর্মসূচি নিয়ে মতামত নিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
বেশিরভাগ দলই সচিবালয় ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘেরাও বা গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয়ের দিকে পদযাত্রার মতো কর্মসূচির পরামর্শ দিয়েছে।
এছাড়া রাজধানীসংলগ্ন জেলা গুলো থেকে ঢাকা অভিমুখে রোড মার্চ, ইসি ও সুপ্রিম কোর্ট অভিমুখে পদযাত্রা এবং শেষ পর্যায়ে হরতাল-অবরোধসহ আরও কিছু কঠোর কর্মসূচির সুপারিশও করা হয়।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, বিএনপি যদি রাজধানী অবরোধের মতো কর্মসূচি নেয়, তাহলে তাদের ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক যুব সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন,‘আমরাও প্রস্তুত। বিএনপি ঢাকা অবরোধের চেষ্টা করলে তাদের অবরুদ্ধ করা হবে। বিএনপিকে অবরুদ্ধ করে রাখা হবে এবং পালানোর কোন পথ থাকবে না। তারা (হেফাজত কর্মীরা) কি রাতের অন্ধকারে শাপলা চত্বর থেকে পালিয়ে যায়নি? বিএনপিকে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, গত বছরের ডিসেম্বরের মতো এবারও সারাদেশ থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঢাকায় জড়ো হতে শুরু করেছে। ‘হোটেলের সব কক্ষ বুক করা হয়েছে। তারা ফ্ল্যাট ভাড়া নিচ্ছেন। তারা আবারও সরকারকে উৎখাত করার স্বপ্ন দেখছে।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ দেশও হারিয়েছে, বিদেশও হারিয়েছে: আমীর খসরু
তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দুর্গাপূজার পর ঢাকাকে কেন্দ্র করে কর্মসূচি দিয়ে চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করা হবে।
তিনি বলেন, তাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে একটি অপ্রতিরোধ্য আন্দোলনের মাধ্যমে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে বর্তমান সরকারের পতন নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীরা নতুন উদ্যম ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চূড়ান্ত আন্দোলনে অংশ নেবেন এবং যেকোনো মূল্যে তা সফল করবেন।
বিএনপি নেতা বলেন, 'ইনশাল্লাহ আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই ভয়ানক ফ্যাসিবাদী সরকারকে পরাজিত করতে সক্ষম হব।
আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, দুর্গাপূজার পর কঠোর কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্ব শুরু করতে প্রস্তুত তারা।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার যে কোনো পদক্ষেপ প্রতিহত করতে আমরা বিভিন্ন কঠোর কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকব। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হবে। আমরা অবশ্যই বিজয়ী হব'।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, সফল আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ' কিভাবে আমাদের আন্দোলনকে শক্তিশালী করা যায় এবং সম্ভাব্য কর্মসূচি গ্রহণ করা যায়, তা নিয়ে আমরা বিরোধী দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে আমরা আমাদের আন্দোলন জোরদার করার মাধ্যমে সরকারকে আমাদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য করতে সক্ষম হব।
সমমনা দলগুলোর পাশাপাশি তারা ইসলামী দলগুলোর সঙ্গেও তাদের আন্দোলনে যোগ দিতে এবং তা সফল করতে আলোচনা করছে।
আরও পড়ুন: পর্দার আড়ালে আসলে কিছুই হয়নি: ফখরুল