ইসকনের সাম্প্রতিক আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ইসকনের সঙ্গে পতিত স্বৈরাচারের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সংগঠনের নামও বলতে চাই না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের (ইসকন) শাখা রয়েছে। তাদের জিজ্ঞেস করুন, বাংলাদেশ ছাড়া আর কোন দেশে তারা সুনির্দিষ্ট দাবি নিয়ে মিছিল করে লংমার্চ ঘোষণা করে?'
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনার শাসনামলের পতনের পর ইসকন কেন আন্দোলন শুরু করেছিল। তার শাসনামলে দমন-পীড়নের সময় তারা নীরব ছিল, সেই প্রশ্নও রাখেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেব বলেন, বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও ইসকনের নেতারা কীভাবে ভারত সরকারকে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ করতে পারেন।
নজরুল প্রশ্ন রেখে বলেন, বাংলাদেশ কি কারও নিয়ন্ত্রণাধীন দেশ, নাকি অন্য কোনো দেশের কর্মকাণ্ডের অধীন?
খেলাফত আন্দোলনের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে 'ফ্যাসিবাদ ও তার সহযোগীদের মোকাবিলায় আমাদের করণীয়' শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
ইসকন ইস্যুতে ভারত সরকারের বক্তব্যের সমালোচনা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে শিশুসহ কয়েক হাজার মানুষ নিহত হওয়ার সময়, এমনকি চট্টগ্রামে একজন আইনজীবী নিহত হওয়ার সময়ও ভারত কোনো বিবৃতি দেয়নি।
আরও পড়ুন: ফ্যাসিবাদী প্রত্যাবর্তনের পথ সুগম করবেন না: বিএনপি
তিনি বলেন, ‘একজনকে গ্রেপ্তার করা হলে আপনারা বিবৃতি দেন। কিন্তু যখন কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, তখন কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। এটা পক্ষপাতদুষ্ট। কোনো ব্যক্তি বা রাষ্ট্র যেই করুক না কেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড অগ্রহণযোগ্য।’
একজন শ্রমিক নেতা হিসেবে নজরুল ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সাম্প্রতিক আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, তাদের দাবি যৌক্তিক।
তিনি আরও বলেন, 'আপনারা যদি মনে করেন রিকশা চলাচলের অনুমতি দেওয়া উচিত নয়, তাহলে শুরুতেই তাদের থামানো উচিত ছিল। এখন হাজার হাজার রিকশা রয়েছে। অনেক লোক জীবিকা অর্জনের জন্য এসবের উপর নির্ভরশীল। আপনি শুধু শুধু বলতে পারেন না যে তাদের অনুমতি দেওয়া হবে না- কে এটা মেনে নেবে?'
তবে নজরুল উল্লেখ করেন যে, আন্দোলনের প্রকৃতি পুরোপুরি স্বাভাবিক ছিল না। ‘আমি শ্রমিক আন্দোলন বুঝি। এটি স্বাভাবিক বলে মনে হয়নি। তখন দেখলাম আন্দোলনের নেতারা সবাই ছাত্রলীগের সদস্য। দাবিটি যৌক্তিক ছিল, কিন্তু যেভাবে আন্দোলন পরিচালনা করা হয়েছে তা ষড়যন্ত্র বলে প্রতীয়মান হয়েছে।’
বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট বা জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অপচেষ্টা রুখতে ঐক্য, সচেতনতা ও সতর্কতার আহ্বান জানান নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, 'আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, শ্রমিক শ্রেণি, নাগরিক সমাজ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপে বসার আহ্বান জানাচ্ছি। এমন একটি ঐক্য গড়ে তোলার জন্য কাজ করুন যাতে কেউ আমাদের চ্যালেঞ্জ করার সাহস না পায়।’
আরও পড়ুন: এখন সময় ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ গড়ার: তারেক