দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কারাগারের মধ্যে আদালত বসানো হয়েছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) খালেদা জিয়ার মামলায় তার অনুপস্থিতিতে শুনানি চালিয়ে যাওয়ার আদেশ দেয় আদালত। আমরা মনে করি, এই আদেশ ন্যায়বিচার ও মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত ক্ষোভের সাথে বলতে চাই, আমরা এই আদেশ মেনে নিতে পারছি না। জনগণ তা গ্রহণ করছে না। আমরা মনে করি, এই আদেশ পরিবর্তন করা উচিৎ।’
শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী এবং দেশের নাগরিক হিসেবে খালেদা জিয়ার যেসব সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য তা সরকারের দেয়া উচিৎ।
খালেদা জিয়া ‘অত্যন্ত অসুস্থ’ উল্লেখ করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য শুনানি বন্ধ করে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বিচার বিভাগের প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
বৃহস্পতিবার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারিক কার্যক্রম বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় বিশেষ আদালত।
আদালত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ২৪, ২৫ ও ২৬ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছে।
আদালতের আদেশের প্রতিবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন, বর্তমানে বিচার ব্যবস্থা, বিশেষ করে নিম্ন আদালত সম্পূর্ণভাবে সরকার নিয়ন্ত্রিত। এর ফলে দেশের মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এক সপ্তাহে পরপর তিন দিন মামলার শুনানি রাখায় বিএনপি নেতা প্রশ্ন করেন, বিচারকাজ শেষ করার জন্য এতো তাড়া কেন? আমরা বুঝতে পারি যে সরকার খালেদা জিয়াকে দীর্ঘ সময় কারাগারে রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু আদালতের কাছে আমরা এটি প্রত্যাশা করি না, জনগণও করে না। জনগণ চায় আদালত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করুক।
খালেদার স্বাস্থ্যের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ ও সরকার গঠিত মেডিকেল বোর্ডও স্বীকার করেছে তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। এমনকি তিনি হাঁটতেও পারছেন না। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করার সুপারিশ করেছে বোর্ড।
ফখরুল আশা করেন, তাদের নেত্রীর প্রতি ‘অমানবিক’ আচরণ প্রদর্শন থেকে বিরত হবে সরকার।
তিনি আবারো কোনো বিশেষায়িত হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করানোর দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমেদ, রফিকুল ইসলাম মিয়া, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।