‘আমরা অবশ্যই উচ্চ আদালতে যাব, কারণ তারেক রহমানের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য আইনী লড়াই করার সুযোগ রয়েছে,’ বলেন তিনি।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের আরও বলেন, ‘হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানের বক্তব্যে আছে তারেক রহমানের নির্দেশেই তারা সেদিন হামলা চালিয়েছিল। সুতরাং হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ডের অবশ্যই সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত।’
বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ২০০৪ সালের আজকের এইদিনে সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাইম টার্গেট করে সন্ত্রাসীদের দিয়ে রক্তস্রোত বয়ে দিয়েছিল বিএনপি-জামাত সরকার।
তিনি বলেন, ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হত্যা এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ইতিহাসের এ দুটি ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা।
কাদের আরও বলেন, ‘সরকারি দল এবং বিরোধী দলের মধ্যে যে কর্ম সম্পর্ক থাকা দরকার আমি মনে করি ২১ আগস্ট এর ঘটনার মধ্যদিয়ে তা চিরদিনের জন্য শেষ হয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, এমনকি এরপরও বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চেয়েছে আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা পুত্রহারা মাকে সান্ত্বনা দিতে তার বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন। কী দুর্ব্যবহার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে করা হয়েছে। বাংলার মানুষ জানে। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংলাপের রাস্তা বিএনপি বন্ধ করে দিয়েছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কর্ম সম্পর্ক বিএনপিই নষ্ট করেছে। ‘২১ আগস্ট রক্তাক্ত ঘটনার মধ্য দিয়ে যেটা তারা তৈরি করেছে, সে দেওয়াল ভুলে যাওয়া আমাদের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব না।’
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন প্রাণ হারান।
অল্পের জন্য বেঁচে যান বতর্মান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তবে গ্রেনেডের প্রচণ্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ হামলায় তিন শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন।
গ্রেনেড হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুটি মামলা করা হয়। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের অধীনে একটি এবং হত্যার জন্য আরেকটি মামলা।
সব প্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলার দুই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালাত।
এছাড়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বাকি ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।