আওয়ামী লীগ
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে: মির্জা ফখরুল
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনাকে 'গণহত্যা' আখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকার দেশ শাসন করার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) এক বিবৃতিতে তিনি সাম্প্রতিক দিনগুলোতে নিহত, পঙ্গু ও আহত হওয়া নিরীহ মানুষের সঠিক পরিসংখ্যান প্রকাশের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।
ফখরুল বলেন, সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে ছাত্র-জনতার ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন দমন করা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা অবিলম্বে কারফিউ প্রত্যাহার ও সশস্ত্র বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করাই আ. লীগের লক্ষ্য: মির্জা ফখরুল
তিনি দাবি করেন, ‘আওয়ামী লীগ সব সময় লাশের ওপর দিয়ে হেঁটে ক্ষমতায় এসেছে। ক্ষমতা ধরে রাখতে গত কয়েকদিনে নিরীহ ছাত্র ও জনতাকে পাখির মতো গুলি করে চালানো গণহত্যার ঘটনা পাকিস্তানি আগ্রাসনের স্মৃতি জাগায়।’
ফখরুল বলেন, জনগণের টাকায় কেনা গোলাবারুদ, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদের ওপর কী পরিমাণ ব্যবহার করা হয়েছে তা দেশবাসীকে জানাতে হবে।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, 'রাষ্ট্রীয় টাকায় কেনা হেলিকপ্টার ব্যবহার করে' এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য সরকারকে একদিন জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'যে সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করতে পারে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও স্থাপনার নিরাপত্তা দিতে পারে না, সে সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই।’
নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ভয়ানক ফ্যাসিবাদী শাসকগোষ্ঠীকে পরাজিত করতে এবং জনগণের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে সব দেশপ্রেমিক, রাজনৈতিক দল, ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, শ্রমিক ও পেশাজীবীদের প্রতি বিএনপি আহ্বান জানাচ্ছে।’
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার সব রাষ্ট্রীয় শক্তি ও ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের উচ্ছেদ করে বিএনপির নেতা-কর্মী ও ছাত্রদের গ্রেপ্তার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: খালেদার নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে পরিণতি ভোগ করতে হবে: মির্জা ফখরুল
সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ফখরুল বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত অন্তত তিন হাজার লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ‘এটা জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জাজনক।’
তিনি দাবি করেন, বিরোধী দলের নেতাদের তুলে নিয়ে গিয়ে দমন করার চার-পাঁচ দিন পর আদালতে হাজির করা হচ্ছে, যা আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার গুমের ভয়ংকর সংস্কৃতি অব্যাহত রেখে মানুষের মনে ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। ‘আমি এ ধরনের জঘন্য কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ হামলায় হতাহতের যে নৃশংস নজির সৃষ্টি হয়েছে, তা দেশে-বিদেশের সব স্বৈরশাসকের নির্মম নিষ্ঠুরতাকে ছাড়িয়ে গেছে।
ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ব্যর্থতা ঢাকতে নির্বিচারে বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার করছে।
তিনি আরও বলেন, সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, ‘আজকেও (শুক্রবার) আমাদের দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ অনেক সিনিয়র নেতার বাসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়েছে। সাধারণ মানুষের গ্রেপ্তার, কারাবাস, নিপীড়ন অব্যাহত রয়েছে।’
বিরোধী দলের গ্রেপ্তার হওয়া সব নেতার বিরুদ্ধে দায়ের করা 'মিথ্যা' মামলা প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশ স্বাধীনতা হারাবে: মির্জা ফখরুল
আওয়ামী লীগ সরকার সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে ডুবাচ্ছে: আমীর খসরু
ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ভারী বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার জন্য সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগের দুঃশাসন ও রাজনীতির কারণে বাংলাদেশ সব দিক থেকে ডুবে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘দেশ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে ডুবে গেছে। এখন দেখবেন ঢাকা শহর পানিতে ডুবে যাচ্ছে। আসলে এই ফ্যাসিবাদী সরকারের কারণেই বাংলাদেশ চতুর্দিকে ডুবছে।’
শুক্রবার (১২ জুলাই) এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে কারণ এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের পর্যায়ে সক্ষম ও মেধাবীদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয় না।
তিনি বলেন, ‘প্রশাসন যদি দলীয় লোকদের দ্বারা পরিচালিত হয়, তাহলে ঢাকা শহর ডুবে যাবে, পুরো বাংলাদেশ ডুবে যাবে।’
কয়েকটি বিরোধী দলের প্লাটফর্ম ‘গণতন্ত্র মঞ্চের’ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু।
তিনি বলেন, ‘কোটা পদ্ধতি নিয়ে আমার অবস্থান পরিষ্কার। এই শাসকগোষ্ঠী বাংলাদেশের মেধাবীদের খাটো করতে চায়। আওয়ামী লীগ এভাবে শাসন করতে থাকলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মেধাবীদের কোনো সুযোগ থাকবে না, বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ারও কোনো সুযোগ থাকবে না।’
আরও পড়ুন: সরকারের দুঃশাসন দেশকে ধ্বংস করছে: ফখরুল
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে মেধাবী জাতি হিসেবে দেখে বলে মনে হয় না। ‘একটি ফ্যাসিবাদী সরকার একটি বুদ্ধিমান দেশে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না। বুদ্ধিমান লোকেরা সত্য কথা বলে, সত্যের পথে চলে, আওয়াজ তোলে এবং প্রতিরোধ করে।’
খসরু কোটা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও তাদের ভোটাধিকারের দাবিতে একই দৃঢ় সংকল্প নিয়ে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, বাংলাদেশের নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কোটা আন্দোলন ইতোমধ্যে মানুষের হৃদয় ছুঁয়েছে। ছাত্র ও যুবসমাজ এখন সমগ্র জনগোষ্ঠীর আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করছে।’
তিনি আরও বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল বা পুনর্বহাল শুধু আইনি বিষয় নয়, এটি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক বিষয়।
সরকার যেন দ্রুত নীতিনির্ধারণী ভিত্তিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের জন্য একটি কমিশন গঠন করে আমাদের কর্মসংস্থান কীভাবে হবে সে বিষয়ে একটি কার্যকর ও বিশ্বাসযোগ্য উদ্যোগ গ্রহণ করার দাবিও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরের মতোই চীন থেকে খালি হাতে ফিরে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের হতাশ করেছেন বলেও মন্তব্য করেন সাইফুল হক।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশ ও নাগরিকদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দেশের সম্পদ লুটপাট ও জনগণকে দমন অব্যাহত রেখেছে।
তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বিরোধী দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
সাকি বলেন, ‘এই ফ্যাসিবাদী সরকার কোনও কথাই শুনছে না। জনগণ আশা করে, বিরোধী দলগুলো আবারও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে এবং এই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করবে।’
আরও পড়ুন: চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদলের সমর্থন
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য ফল ও মিষ্টান্ন পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার (২৩ জুন) বিকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর গজনবী রোডের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্রে (মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার-১) প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তার প্রোটোকল অফিসার-২ মো. আবু জাফর রাজু এবং প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এবিএম সরওয়ার-ই-আলম সরকার যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে উপহারগুলো তুলে দেন।
প্রতিটি রাষ্ট্রীয় দিবস ও উৎসব- যেমন স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, ঈদ ও বাংলা নববর্ষের দিনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তাদের স্মরণ করে উপহার পাঠানোয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন তারা।
এছাড়াও স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মত্যাগ এবং দূরদর্শী নেতৃত্ব শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তারা।
মুক্তিযোদ্ধারা ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাঙালিদের মুক্তিসংগ্রামের বিভিন্ন পর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ভূমিকা তুলে ধরেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অদম্য সাহসিকতা, অস্ত্র ও বিস্ফোরক দিয়ে অপারেশন করার প্রশিক্ষণ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন তারা।
যুদ্ধ ময়দানে হারানো সহযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ করে তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
তারা বলেন, দেশের আপামর জনসাধারণ জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে মুক্তিসংগ্রামের দিকনির্দেশনা পেয়েছিল এবং ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে অস্ত্র হাতে নিয়ে পাকিস্তানিদের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করার প্রত্যয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
এ সময় জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যার দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রতি অবিচল আস্থা প্রকাশ করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা এবং তাদের সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে পুনর্বাসনের জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেন তারা।
দেশের অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকলে দেশের প্রান্তিক মানুষের কল্যাণ হয় এবং মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার ভালো থাকে।
মুক্তিযোদ্ধাদের বর্ধিত হারে ভাতা প্রদান, চিকিৎসা ও আবাসনের সুব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তারা।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ একদিন জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর এবং আত্মমর্যাদাশীল ‘সোনার বাংলাদেশ’ অর্থাৎ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বলে আশা প্রকাশ করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
বিএনপি অপশক্তির তোষণ না করলে দেশ আরও এগিয়ে যেত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির তোষণ না করলে আওয়ামী লীগের ৭৫ বছরের দীপ্ত পথচলায় দেশ আরও এগিয়ে যেত বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
রবিবার (২৩ জুন) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, ‘স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরেও আওয়ামী লীগকে এখনও দেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির মোকাবিলা করতে হয়। বিএনপি যদি এসব অপশক্তির তোষণ না করত, তাহলে দেশ আরও বহুদূর এগিয়ে যেত।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে বিশেষ গুরুত্ব দুই প্রধানমন্ত্রীর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানে সরকার গঠন করে। পাকিস্তানের কোনো সংবিধান ছিল না। আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান রচিত হয়। ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা হলেও ১৯৫৬ সালেই রাষ্ট্রভাষা হিসেবে কার্যকর হয়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনুষ্ঠানিকভাবে শ্রদ্ধা নিবেদনও সেসময়েই চালু হয়।
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছিল এবং সব সেক্টর কমান্ডার ও জিয়াউর রহমান ৪০০ টাকা বেতনের কর্মচারী ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী হাছান বলেন, বাংলাদেশ এখন নিম্ন আয় থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয়, ধান ও শাক-সবজি উৎপাদনে তৃতীয় স্থানসহ ১৪টি কৃষিপণ্য উৎপাদনে দেশ বিশ্বের শীর্ষ ১০ দেশের অন্যতম।
প্রধানমন্ত্রীর সদ্যসমাপ্ত ভারত সফর নিয়ে প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত সফর অত্যন্ত চমৎকার, ফলপ্রসূ ও আন্তরিকতাপূর্ণ হয়েছে এবং শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন।
হজপালনে সৌদি আরব সফরে সৌদি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন উল্লেখ করেন ড. হাছান মাহমুদ।
এ সময় সাংবাদিকরা এনবিআর সদস্য মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এরইমধ্যে তাকে এনবিআর সদস্য পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, সোনালী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া প্রক্রিয়াধীন এবং তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন: ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি নেতাদের আর সহ্য হচ্ছে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়
ঈদুল আজহা উপলক্ষে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১৭ জুন) গণভবনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি।
এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলটির শীর্ষ নেতারা।
এরপর ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
আওয়ামী লীগকে রক্ষা করতে, ক্ষমতায় রাখতে সব প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন বেনজীর: ফখরুল
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ সব ধরনের চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমরা যখনই রাস্তায় নামি, তারা (সরকার) আমাদের ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং পুলিশ ও র্যাব আমাদের ওপর হামলা চালায়। বেনজীর ছিলেন পুলিশ ও র্যাবের প্রধান।’
বুধবার (৫ জুন) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী ওলামা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেনজীর রহমানের অপকর্ম, চুরি, দুর্নীতি নিয়ে পত্রিকায় যখন সংবাদ প্রকাশ শুরু হয়, তখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দাবি করেন, সাবেক আইজিপি ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।
তিনি বলেন, 'তিনি (বেনজির) আওয়ামী লীগে নাম লিখিয়েছিলেন কি না আমি জানি না। কিন্তু আওয়ামী লীগকে রক্ষা ও ক্ষমতায় টিকিয়ে থাকার জন্য তিনি সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করেছেন।’
বেনজীর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় র্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন। সে সময় তিনি প্রকাশ্যে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে বলেছিলেন বলে স্মরণ করিয়ে দেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বেনজীর র্যাব ও পুলিশ প্রধান থাকাকালে বিএনপি নেতাকর্মীদের দমন-পীড়ন, হত্যা ও গুম করার চেষ্টা করেছিলেন।
এছাড়াও বেনজীর র্যাবের মহাপরিচালক থাকাকালে বিএনপি নেতাকর্মীদের বানোয়াট ও ভুতুড়ে মামলায় জড়ানোর প্রচলন শুরু হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, আজিজ আহমেদের দুই ভাই চিহ্নিত সন্ত্রাসী জেনেও অনেক কর্মকর্তাকে সরিয়ে তাকে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার।
পরে ২০১৮ সালে নির্বাচনি প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে ক্ষমতাসীন দল আজিজকে ব্যবহার করেছিল বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা।
ফখরুল আরও অভিযোগ করেন, দেশে তিনটি প্রহসনের নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকেও ধ্বংস করেছে।
তিনি বলেন, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে, যাতে জনগণ ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কারণ সেখানকার জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।
মেটার প্রতিবেদন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, তথ্যে ঘাটতি রয়েছে: আওয়ামী লীগ ওয়েবটিম
বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের জন্য মেটার ‘অকার্যকর ব্যবস্থাপনা’ উল্লেখ করে নির্দেশিকা মেনে চলতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের ওয়েব টিমের সমন্বয়কারী তন্ময় আহমেদ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও দলটির নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের নিরলস প্রবাহ রুখতে মেটার ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন তিনি। পোস্টে তন্ময় বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও তার পরিবারকে নিয়ে ফেসবুকে বহুবার বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে।
ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে বিরোধীদের সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর দায়ে সম্প্রতি ৫০টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও ৯৮টি পেজ বন্ধ করে দিয়েছে মেটা। গত ২৯ মে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা বিভিন্ন দেশ থেকে ‘সংঘবদ্ধ অসত্য আচরণ’ (কোঅর্ডিনেটেড ইনঅথেনটিক বিহেভিয়ার) করার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করে।
তন্ময় বলেন, ‘মেটাকে আমি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন ভিত্তিক আইআরআই-এনডিআই জরিপটি দেখতে অনুরোধ করব, যা স্পষ্ট করে যে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার শিকার হয়েছেন।’
‘এটি প্রতিষ্ঠিত সত্য যে, বিএনপি-জামায়াতের কটূক্তি ও মিথ্যা তথ্য কেবল আওয়ামী লীগ নেতাদেরই হয়রানি করেনি, সুশীল সমাজের সদস্যদেরও রেহাই দেয়নি তারা।’
আরও পড়ুন: টুইটার ও ফেসবুকে তারেক রহমানের বক্তব্যের জবাবে যা বললেন তন্ময়
এ সময় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের অভিযোগের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে উসকানি ও ঘৃণামূলক বক্তব্যের বিস্তার বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে ফেসবুক। সম্প্রদায়িক হামলায় বিএনপি-জামায়াত জোট এই প্ল্যাটফর্মটি কোনোপ্রকার বাধা ছাড়াই ব্যবহার করেছিল।
পোস্টে বাংলাদেশের ব্যাপারে ফেসবুকের বস্তুনিষ্ঠতার অভাব নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধাপরাধ-বিরোধী আন্দোলনকারীরা তাদের কণ্ঠ তুলেছে। তারা মনে করেন ফেসবুক তাদের কণ্ঠরোধ করেছে।’
এ সময় মেটার প্রতিবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, ‘যতদূর জানি, আউটসোর্সের মাধ্যমে তৃতীয় এক পক্ষকে দিয়ে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছে মেটা। কেন বিএনপির মিডিয়া সেলের বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো বন্ধ হয়নি, (মেটা) কর্তৃপক্ষ সে বিষয়ে খোঁজ নিতে পারে। তৃতীয় এই পক্ষটির কথায় নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তে কেন একটি রাজনৈতিক দলের সূর প্রতিধ্বনিত হলো?’
‘এটা সবাই জানে যে, বিএনপির মিডিয়া সেল এমন কন্টেন্ট ছড়িয়েছে যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার উসকানি দেয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক চিহ্নিত হলেও তারেক রহমানের অপরাধের বিষয়টি গোপন রেখে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে। এসব বিষয়ে মেটাকে নজর দিতে দেখা যায়নি।’
বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকালে তন্ময় হামলার শিকার হন। সেসময় তার শরীরে ১৩০টির বেশি সেলাই লাগে। সেই স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘অতীতে বহুবার বিএনপি-জামায়াতের বেশ কয়েকজন কর্মী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে, কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ফেসবুক তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
পোস্টের সঙ্গে বিএনপি-সমর্থিত সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলো থেকে ‘সহিংসতা উস্কে দেওয়া ও বিভ্রান্তি ছড়ানো’ মিডিয়া রিপোর্টের একটি কোলাজ যুক্ত করেছেন তিনি। ছবিতে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের যেসব বিষয় মেটা দেখতে চায় না।’
নরসিংদীতে আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা, আহত ২
নরসিংদীর মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হাসানকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় আরও দুইজন আহত হন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে মাধবদী থানার মেহেরপাড়া ইউনিয়নের ভগিরথপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত মাহবুবুল হাসান ভগিরথপুর গ্রামের হাজী ইমাম উদ্দিনের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনরা জানান, মঙ্গলবার রাতে ভগিরথপুর মাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে ৮/১০ জন দলীয় নেতা-কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন মাহবুবুল হাসান। ওবায়দুল্লাহ টেক্সটাইলের সামনে পৌঁছলে ৭/৮ জন অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত তাদের উপর হামলা করে। এসময় গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মাহবুবুল হাসান, সাঈদ হাসান পাপ্পু ও ফরহাদ মিয়া নামে তিনজন আহত হন।
আরও পড়ুন: তাবিজ-কবজ ও যাদু-টোনার অভিযোগে কবিরাজকে কুপিয়ে হত্যা
পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুইজনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়।
খবর পেয়ে সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন নিহতের স্বজন, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
রাজনৈতিক পূর্ব বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি কর্মী সমর্থক ও স্বজনেরা।
প্রত্যক্ষদর্শী রবিন মিয়া বলেন, দলীয় কার্যালয় থেকে মাহবুবুল হাসানসহ তারা বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় সামনে থাকা বালু ট্রাকের আড়াল থেকে ৭/৮ জন অস্ত্রধারী ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপরই মাহবুবুলকে কোপাতে থাকে। এসময় সঙ্গে থাকা লোকজন তাকে বাঁচাতে গেলে তাদের উপরও হামলা করে।
মাহবুবুল হাসানের ছোট ভাই হাফেজ মোহাম্মদ অলিউল্লাহ বলেন, মাদক ব্যবসা, অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে সবসময় প্রতিবাদী ছিলেন। সম্প্রতি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমার ভাই যে পক্ষে কাজ করেছে তারা বিজয়ী হয়েছে। এ হিংসার জেরে পরাজিত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মাহমুদুল কবীর বাশার বলেন, দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে মেহেরপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহবুবুল হাসানসহ তিনজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। মাহবুব হাসানের মাথার পেছনে ঘাড়ে বড় ক্ষতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। গুলির বিষয়ে ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। এসময় সাঈদ হাসান পাপ্পু ও ফরহাদ মিয়া নামে আরও দুইজনকে আহতাবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদ সদর হাসপাতালে গিয়ে হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও ঘটনাটি মাধবদী থানার হওয়ায় তদন্তের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানাবেন বলে জানান। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান হত্যার পর পুলিশ ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি অপরাধীদের ধরতে তৎপরতা চালাচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করা হয়েছে। পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় পাওনা টাকার জেরে স্ত্রীর বড় ভাইকে কুপিয়ে হত্যা
দিনাজপুরে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে আটক ১
আগে আওয়ামী লীগ গাছের মতো ছিল কিন্তু এখন পরগাছা হয়ে গেছে: জিএম কাদের
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। কিন্তু এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা নানা কারণে দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ তার বৈশিষ্ট্য হারিয়েছে। এছাড়া কিছু সরকারি কর্মচারী আর পেশাজীবীদের নিয়ে একটা সংঘবদ্ধ দল হয়েছে আওয়ামী লীগ।
রবিবার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সফরে গিয়ে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: আ.লীগকে কটাক্ষ করে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সমালোচনায় জিএম কাদের
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। তিনি অনেক কথাই বলেন। তারা এখন শক্তিশালী দল হয়েছে বলে শুনি। কিন্তু এটা দানবীয় শক্তি নাকি শুভশক্তি। যদি দানবীয় শক্তি হয় তাহলে সে শক্তিতো আমরা পছন্দ করতে পারি না। কারণ এটা জনগণের কাছে অত্যাচার করার শক্তি।
দেশে রিজার্ভ কমে গেছে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দেশ চলছে। সামনের দিকে আরও বিপদজনক অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা জানি, স্বাভাবিকভাবে তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। আমদানি ব্যয় আগের তুলনায় অনেক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৭-৮ বিলিয়নের জায়গায় এখন ৪-৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করা হচ্ছে। তারপরও ১৫ বিলিয়ন ডলার এখন আমাদের নেই। আমাদের এখন ১১ বিলিয়ন ডলার আছে কি না সন্দেহ।
তিনি আরও বলেন, সত্যিকার অর্থে এগুলো আমাদের জন্য অশনি সংকেত। টাকা নড়বড়ে হয়ে গেছে ডলারের কাছে। ডলারের কাছে টাকার মান প্রতিদিনেই কমছে।
জিএম কাদের বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। মানুষ অসহনীয় পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চায়। কিন্তু আমরা সামনে কোনো মুক্তি দেখতে পারছি না। আইএমএফ যে লোন দিচ্ছে সেটি সামান্য। বিদেশি বিনিয়োগ কমে গেছে। সামনে না খেয়ে থাকার মতো অবস্থা হতে পারে। সরকারকে এসবের জবাবদিহি করতে হবে। কিন্তু সরকার এসব গোপন করছে। তারা গ্যাস, বিদ্যুৎ খাতে লুটপাট করেছে। প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার করেছে।
সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করেছে জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, সংবিধানে বলা হয়েছে, যেকোনো বৈদেশিক চুক্তি করা হলে তা রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সংসদে উপস্থাপন করতে হবে। কিন্তু তা করা হচ্ছে না। তারা সংবিধান মানছে না।
নিজ দল প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, আমরা জনগণের স্বার্থে রাজনীতি করি। জনগণের মনের কথা বলতে চাই। এটা জনগণের দল, জনগণের কল্যাণে সবসময় নিয়োজিত রেখেছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।
আরও পড়ুন: সিন্দবাদের দৈত্যের মতো দেশ শাসন করছে আ.লীগ সরকার: জিএম কাদের
ব্যাংক সংকট সমাধানে সরকার ব্যর্থ : জিএম কাদের
আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে: খাদ্যমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র শেখ হাসিনার হাতেই সুরক্ষিত। কারণ শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকামী মানুষের নেতা।
শুক্রবার (১৭ মে) সকালে নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের অনুষ্ঠান শেষে এসব কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: সরকারি খাদ্য গুদামে হয়রানি করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: খাদ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধার এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় শেখ হাসিনার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন না হলে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতো না। প্রতিষ্ঠা হতো পাকিস্তান মডেলের গণতন্ত্র।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন এবং তার নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি গণতান্ত্রিক রাজনীতির দল নয়। দলগুলোর জন্ম হয়েছে সেনা শাসকদের হাতে। দলগুলোতে গণতান্ত্রিক চর্চাও নেই বলে উল্লেখ করেন খাদ্যমন্ত্রী।
এর আগে নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান খাদ্যমন্ত্রী। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এম এ খালেক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিভাস মজুমদার গোপাল, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ বকুলসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা।
আরও পড়ুন: চকচকে চাল খাওয়া বন্ধ করলে চালের দাম কমবে: খাদ্যমন্ত্রী
কৃষকদের হয়রানি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: খাদ্যমন্ত্রী