আওয়ামী লীগ
আ.লীগকে রাজনীতিতে ফেরানোর যেকোনো প্রচেষ্টা প্রতিহত করতে এনসিপির অঙ্গীকার
বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের যেকোনো প্রচেষ্টা প্রতিহত করার অঙ্গীকার করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ সময় বিচার, অনুশোচনা, পাপমোচন ছাড়া আওয়ামী লীগের পক্ষে যেকোনো তৎপরতা ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসনের শামিল বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শুক্রবার (২১ মার্চ) রাজধানীর বাংলামোটরে অবস্থিত রূপায়ন টাওয়ারে জাতীয় নাগরিক পার্টির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণহত্যাকারী ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগ ও সব সহযোগী সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং এই মাফিয়া গোষ্ঠীকে রাজনীতিতে ফেরানোর যেকোনো প্রচেষ্টাকে এনসিপি প্রতিহত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে।’
আরও পড়ুন: ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ মঞ্চ’ প্ল্যাটফর্মের আত্মপ্রকাশ
তিনি বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) অবিলম্বে জুলাই গণহত্যাসহ ফ্যাসিবাদী রেজিমির সংঘটিত গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চায়। সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মন্তব্য করেছেন— আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। আমরা তার এই বক্তব্যের নিন্দা জানাই।’
‘আওয়ামী লীগ কর্তৃক সংঘটিত পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা হত্যাকাণ্ড, আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড, গুম, ক্রসফায়ার, ভোট ডাকাতিসহ জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রশ্নে কার্যকর অগ্রগতি দৃশ্যমান হওয়ার আগে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পদ থেকে এ ধরনের বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘এনসিপি মনে করে, বিচারিক কার্যক্রমের পরিণতি দৃশ্যমান হতে হবে। আত্মপ্রকাশের পর থেকে আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছি— কৃত অপরাধের বিচার, দায় স্বীকার, অনুশোচনা, পাপ মোচন ব্যতীত আওয়ামী লীগের দল হিসেবে ক্রিয়াশীল থাকার পক্ষে যেকোনো ধরনের তৎপরতা ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের শামিল। এনসিপি জুলাই গণহত্যাসহ বিগত ফ্যাসিবাদী রেজিমে সংঘটিত অপরাপর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চয়তা চায়।’
আরও পড়ুন: ‘পলাতক স্বৈরাচারের’ পুনর্বাসন নিয়ে সরকারকে তারেক রহমানের হুঁশিয়ারি
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আক্তার হোসেন এবং দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ সদস্যসচিব তাসনিম জারা প্রমুখ।
আরও পড়ুন: সৎ ব্যক্তি নেতৃত্বে এলে আ.লীগ কেন রাজনীতি করতে পারবে না, প্রশ্ন রিজভীর
২৬ দিন আগে
‘পলাতক স্বৈরাচারের’ পুনর্বাসন নিয়ে সরকারকে তারেক রহমানের হুঁশিয়ারি
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পলাতক স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের সুযোগ দেওয়া যাবে না। অন্তর্বর্তী সরকারের এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত নয়, যেন পলাতক স্বৈরাচার ও তাদের দোসররা পুনর্বাসনের সুযোগ পায়।
শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকালে রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিসক্লাবে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক ও পেশাজীবীদের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গৌণ ইস্যুকে মুখ্য ইস্যু বানাতে গিয়ে নিজেদের অজান্তে এই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যের মধ্যে সংশয়-সন্দেহের জন্ম দেওয়া হয়েছে বা হচ্ছে।’
‘সরকারের এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না, যেন রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে পলাতক স্বৈরাচারের দোসররা পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ পায়।’
আরও পড়ুন: সৎ ব্যক্তি নেতৃত্বে এলে আ.লীগ কেন রাজনীতি করতে পারবে না, প্রশ্ন রিজভীর
তিনি বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের হাতে এখনো রাষ্ট্র থেকে লুন্ঠন করা জনগণের পকেট থেকে লুন্ঠন করা হাজার হাজার কোটি টাকা রয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়ার অর্থ সারা দেশে ঘাপটি মেরে থাকা পলাতক স্বৈরাচারের দোসরদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘দীর্ঘ দেড় দশকের মাফিয়া শাসনকালে তরুণ প্রজন্মের প্রায় সাড়ে তিন কোটি ভোটারসহ কেউ ভোট দিতে পারেননি। সুতরাং এই ভোটারদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার জন্য সবার আগে প্রয়োজন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান। নাগরিকরা রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাশালী না হলে কোনো সংস্কারই কিন্তু টেকসই হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে সংস্কার ও নির্বাচনকে দৃশ্যত যেভাবে মুখোমুখি করে ফেলা হয়েছে, এটি নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক। যারা সংস্কার শেষ করার পর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলছেন, তাদের উদ্দেশ্য করে বলতে চাই যেটি শেষ হয়ে যায় সেটি সংস্কার নয়। কারণ সংস্কার কখনো শেষ হয় না, সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।’
২৬ দিন আগে
আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না: জামায়াত আমীর
আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘জনগণ অগ্রাধিকার ভিত্তিতেই গণহত্যার বিচারটাই দেখতে চায়। এর বাইরে অন্য কিছু ভাবার কোনো সুযোগ নেই।’
শুক্রবার (২১ মার্চ) সকালে ফেসবুক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা. শফিকুর রহমান লিখেছেন, ‘দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনের পর ২৪-এর ৩৬ জুলাই আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের একান্ত মেহেরবাণীতে উপহার হিসেবে পেয়েছি। এজন্য মহান রবের দরবারে অসংখ্য-অসংখ্য শুকরিয়া।’
‘এ সময় দেশেকে অস্থিতিশীল করার জন্য পতিত ফ্যাসিবাদীরা দেশের ভেতরে এবং বাইরে নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।’
আরও পড়ুন: সৎ ব্যক্তি নেতৃত্বে এলে আ.লীগ কেন রাজনীতি করতে পারবে না, প্রশ্ন রিজভীর
তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের নির্যাতিত ১৮ কোটি মানুষের দাবি, গণহত্যাকারীদের বিচার, ২৪-এর শহিদ পরিবারগুলোর পুনর্বাসন, আহত ও পঙ্গু অসংখ্য ছাত্র, তরুণ, যুবক ও মুক্তিকামী মানুষের সুচিকিৎসা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে ১৫ বছরের সৃষ্ট জঞ্জালগুলোর মৌলিক সংস্কার সাধন করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা।’
এ সময় জনগণ অগ্রাধিকার ভিত্তিতেই গণহত্যার বিচার দেখতে চায়। এর বাইরে অন্য কিছু ভাবার কোন সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে মিছিল
২৬ দিন আগে
সৎ ব্যক্তি নেতৃত্বে এলে আ.লীগ কেন রাজনীতি করতে পারবে না, প্রশ্ন রিজভীর
গণহত্যা-লুটপাটে জড়িত নয়, এমন নিরপরাধ কারও নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আপত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সেইসঙ্গে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘সৎ ব্যক্তি নেতৃত্বে এলে আওয়ামী লীগ কেন রাজনীতি করতে পারবে না?’
শুক্রবার (২১ মার্চ) রাজধানীর উত্তরার দক্ষিণখানে ফায়দাবাদ মধ্যপাড়া হাজী শুকুর আলী মাদরাসা সংলগ্ন মাঠে দুস্থদের মধ্যে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ে কথা হচ্ছে, কিন্তু বিচার নিয়ে কথা হচ্ছে না। দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিচারের পর আওয়ামী লীগকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। আর জনগণ ক্ষমা করলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’
‘আওয়ামী লীগ পুরোনো দল। অপরাধীদের বিচার হওয়ার পর যারা হত্যা-লুটপাটে জড়িত নয়, তাদের যদি জনগণ রাজনীতি করার সুযোগ দেয় আমাদের কিছু বলার নেই।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে মিছিল
তিনি বলেন, ‘যে লোক আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসবেন, তিনি যদি কোনো অপরাধ না করেন, ছাত্র হত্যা না করেন, অর্থ লোপাট বা পাচার না করেন- তাহলে সেই আওয়ামী লীগ কেন রাজনীতি করতে পারবে না? এটি হচ্ছে আমার বক্তব্য।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই রাজনীতিক বলেন, ‘যারা টাকা পাচার করেছে, যারা শিশু-কিশোর, আহনাফ, আবু সাঈদ, মুগ্ধদের হত্যা করেছে, এসব ঘটনায় জড়িতদের বিচার হতে হবে। শ্রমিক, রিকশাচালক, ছাত্র-ছাত্রী যাদের হত্যা করেছে, তাদের বিচার আমরা করি না কেন?’
তিনি বলেন, ‘অনেক কথা উঠেছে- আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে কিনা। কিন্তু এই কথা উঠছে না, যারা গণহত্যা চালিয়েছে তাদের বিচার হবে কিনা।’
‘কারা (গণহত্যা) চালিয়েছে—এটা কি মানুষ দেখেনি? কোন পুলিশের ওসি, ডিসি, এসি এখানে ভূমিকা রেখেছে? কার নির্দেশে এসব ঘটেছে? রক্তপাত ঘটানোর জন্য আওয়ামী লীগের কোন নেতারা নির্দেশ দিয়েছেন?’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘শেখ হাসিনা আল্লাহকে বিশ্বাস করতেন কিনা সন্দেহ আছে। তার ঈশ্বর বা সৃষ্টিকর্তা ছিল টাকা। যার ঈশ্বর টাকা হয়, তিনি তো কোনোদিন ভালো কাজ করবেন না। তাদের প্রত্যেকেরই ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘরবাড়ি আছে। তারা সরকারি অর্থ লোপাট করেছে, ব্যাংক খালি করে দিয়েছে। লাখো কোটি টাকা পাচার করেছে। এ পাচারে অধিকাংশই শেখ হাসিনার আত্মীয়স্বজন পছন্দের লোকজন জড়িত। তাদের তো বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ
তিনি বলেন, ‘মিথ্যা অঙ্গীকার দিয়ে তারা দুবার ক্ষমতায় এসে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। একবার তার বাবা সব দল বন্ধ করে দিয়ে বাকশাল করলেন, আর তার মেয়ে নতুন কায়দায় নতুনভাবে আরও ভয়াবহ বাকশাল তৈরি করে বিরোধী দলের কথা বলা, মানুষের কথা বলা, যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ন্যূনতম কেউ আওয়াজ করলে তার স্থায়ী ঠিকানা হয় কারাগার, আর অস্থায়ী ঠিকানা হয় তার বাড়ি। এই ছিল শেখ হাসিনার আমল। সুতরাং সেই রাজত্ব যাতে ফিরে না আসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ফ্যাসিবাদের হালুয়া-রুটি যে খেয়েছে, তার বিচার করতে হবে। যে মাংস খেয়েছে এবং ওই মাংসের ঝোল খেয়েছে, তারও বিচার হতে হবে। তাহলে ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটানোর চেষ্টা আর কেউ করবে না।’
২৬ দিন আগে
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য প্রত্যাহার এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুর সোয়া ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক-সংলগ্ন মূল ফটকের (ডেইরি গেইট) সামনে একটি প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সদস্য সচিব ও জাবি শিক্ষার্থী জিয়াউদ্দিন আয়ানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা তীব্র আন্দোলন করে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের দাগ লেগে আছে খুনি হাসিনার হাতে। কেউ যদি তাকে পুনর্বাসনের ন্যূনতম প্রচেষ্টা চালায় তাহলে ছাত্র-জনতা তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। গণঅভ্যূত্থানের মাধ্যমে যে আওয়ামী লীগকে মাইনাস করা হয়েছে, তাদের যদি কেউ পুনর্বাসনের চেষ্টা চালায় তাহলে তাদেরও মাইনাস করা হবে।
মিছিলে শিক্ষার্থীদের, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘হাসিনার দোসরেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ কর, করতে হবে করতে হবে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুঁখে দাও দিতে হবে’, ‘ভারতীয় প্রেসক্রিপশন, এই বাংলায় চলবে না’—স্লোগান দিতে শোনা যায়।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে মিছিল
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘আমরা দেখেছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ধারণ করতে পারে নাই। ৫ আগস্টের পর কোনো যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য আমাদের আবারও রাজপথে নামতে হবে—এটা আমরা কল্পনায়ও ভাবি নাই।’
‘আমরা দেখেছি, গতকাল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। এই বক্তব্যকে আমরা প্রত্যাখান করছি সেইসঙ্গে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকার বা অন্য কেউ যদি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের ন্যূনতম প্রচেষ্টা চালায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’
গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘স্বৈরাচারী পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি গত জুলাই বিপ্লবে হাজার হাজার ছাত্রজনতার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এখনও হাজার হাজার মানুষ আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে হাসপাতালের বেডে জীবন কাটাচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি এসব দেখছে না? তাদের কি চোখে পড়ে না? এত কিছুর পরেও তারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালায় কার হুকুমে?’
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, পার্শ্ববর্তী দেশের কোনো প্রেসক্রিপশন যদি এদেশে বাস্তবায়নের কোনো অপচেষ্টা চালানো হয়, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেব।’
বাগছাসের কেন্দ্রীয় সংসদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক ও জাবি শিক্ষার্থী তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘সংগ্রামী ছাত্র-জনতা আপনারা দেখেছেন, ৩৬ দিনের দীর্ঘ আন্দোলন শেষে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের রায় দিয়েছে। স্বৈরাচারী আওয়ামী শক্তি দীর্ঘ ১৭ বছর বাংলাদেশকে একটি আবদ্ধ কারাগারে পরিণত করেছিল, কিন্তু এদেশের জনগণ পরাধীনতার শিকল ভেঙে দিয়ে খুনি হাসিনাকে লাল কার্ড দেখিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘কেউ যদি দিল্লি থেকে বা অন্য কোথাও থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে এসে এদেশকে চালাতে চায় তাহলে তারা ভুল করবে। বাংলাদেশ কীভাবে চলবে, তা ঠিক করবে এদেশের ছাত্র-জনতা। আমরা আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের যেকোনো অপচেষ্টা রুঁখে দিতে রাজপথে সর্বদা তৎপর থাকব।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সাভার প্রতিনিধি জুলকারনাইন বলেন, ‘আমরা রক্ত দিতে শিখে গেছি। কীভাবে দাবি আদায় করতে হয়, তাও শিখে গেছি আমরা। কেউ যদি আমাদের চোখ রাঙায়, তাদের পাল্টা জবার দেওয়ার ভাষা আমাদের জানা আছে।’
তিনি বলেন, ‘সামরিক-বেসামরিক কোনো শক্তি যদি খুনি হাসিনাকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালায়, তাহলে ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল শক্তিকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করা হবে।’
গতকাল (বৃহস্পতিবার) ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে আমাদের কোনো পরিকল্পনা নেই।
এরপর গভীর রাতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চালের মূখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ সংক্রান্ত একটি ফেসবুক স্টাটাস দিলে, সেটি কেন্দ্র করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
২৬ দিন আগে
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে মিছিল
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মিছিল করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পরিকল্পনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেই প্রধান উপদেষ্টার এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দিবাগত রাত দুইটায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, জুলাই গণহত্যায় আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত এবং প্রধান উপদেষ্টার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পরিকল্পনা নেই এ বক্তব্য প্রত্যাখানের দাবিতে হল থেকে রাস্তায় বের হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে একদল শিক্ষার্থী।
মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে শুরু হয়ে মল চত্বর, ভিসি চত্ত্বর হয়ে টিএসসিতে এসে শেষ হয়।
পরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি চায় না ছাত্রজনতা। আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেয়া মানে জুলাই শহীদের সঙ্গে প্রতারণা করা।
মিছিলে অংশ নেয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহিম বলেন, আওয়ামী লীগকে ফেরাতে নানা ধরণের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এসব ষড়যন্ত্রে যারা মদত দেবে, তারা যেই হোক না কেন ছাত্রসমাজ রুখে দাঁড়াবে।
আরও পড়ুন: গুলশানে দুর্বৃত্তের গুলিতে যুবক নিহত
আরেক শিক্ষার্থী তাবাসসুম বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে ন্যূনতম অনুশোচনা নেই। দেড় হাজার মানুষ হত্যার পর তারা ক্ষমা পর্যন্ত চাননি। অথচ সামনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অন্তর্ভুক্ত করতে এখন থেকে নানা ফন্দি-ফিকির হচ্ছে। বাংলাদেশের মাটিতে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দিবে না ছাত্রসমাজ।
যতদিন পর্যন্ত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ না হবে, ততদিন পর্যন্ত লড়াই চলবে জানিয়ে বিক্ষোভকারীরা বলেন, জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচার হতেই হবে। গণভোটের মাধ্যমে হলেও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। তার আগ পযন্ত কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এসময়, শুক্রবার বিকেল তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বিক্ষোভের ঘোষণা দেয়ার পাশাপাশি সারাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভের আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।
২৭ দিন আগে
আ.লীগের সাবেক এমপি নাসিম ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিং আইনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম ও তার স্ত্রী ডা. জাহানারা আরজুর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৯ মার্চ) দুদকের নোয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল নোমান বাদী হয়ে ফেনীর বিশেষ জজ আদালতে মামলাদুটি করেছেন বলে নিশ্চিত করেন ওই কার্যালয়ের আদালত পরিদর্শক (কোর্ট ইন্সপেক্টর) মো. ইদ্রিস।
অভিযুক্ত নাসিম ফেনী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। তিনি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একসময়ের প্রটোকল কর্মকর্তা ছিলেন। তার স্ত্রী বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক।
মামলায় নাসিমের বিরুদ্ধে ৭৪ কোটি ৫২ লাখ ১৭ হাজার ৭৫৭ টাকা এবং তার স্ত্রী ডা. জাহানারা আরজুর বিরুদ্ধে ১২ কোটি ৪৭ লাখ ২৬ হাজার ১৮৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আরেক মামলা থেকে খালাস পেলেন তারেক রহমান
আদালত পরিদর্শক মো. ইদ্রিস বলেন, ‘দুদকের নোয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফারুক আহমেদ ও সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল নোমান অনুসন্ধান করে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে মামলা দুটি করেছেন।’
মামলা সূত্রে জানা গেছে, আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম ১৯৮৬ সালে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। ২৩ বছর পর ২০০৯ সালে যুগ্ম সচিবের পদ থেকে তিনি স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দিয়ে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন তিনি। গত বছর ফেনী-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হন নাসিম।
তিনি ফেনী, চট্টগ্রাম, পিরোজপুর, কক্সবাজার, মৌলভীবাজার, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মোট ১২৬টি দলিলের মাধ্যমে পাঁচটি ফ্ল্যাট ও দুটি প্লটসহ মোট ৩৯ কোটি ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৬০৫ টাকার স্থাবর সম্পত্তি ক্রয় করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া তার নামে ১৪টি ব্যাংক হিসাবে মোট ৮ কোটি ২৫ লাখ ৪৮ হাজার ১০৮ টাকা জমা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে বলে মামলা সূত্রে জানা যায়।
আরও পড়ুন: অস্ত্র মামলায় ১৭ বছরের দণ্ড থেকে খালাস পেলেন বাবর
এ ছাড়াও, ১৫টি কোম্পানিতে ৩৪ কোটি ৬২ লাখ ৩৯ হাজার ৯৫৪ টাকার শেয়ারসহ তার নামে ঢাকা-চট্টগ্রামে ২৭ লাখ ৩৩ হাজার ৪৬ টাকায় ১০টি ক্লাবের সদস্যসহ স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে মোট ৮৪ কোটি ৮৭ লাখ ৩৫ হাজার ৭১৩ টাকার সম্পদের খোঁজ পাওয়া যায়। পারিবারিক ব্যয়সহ এ হিসাবের পরিমাণ ১০২ কোটি ৩৮ লাখ ৭ হাজার ৪৯১ টাকা।
অন্যদিকে, তার স্ত্রী ডা. জাহানারা আরজুর নামে ফ্ল্যাট, প্লট ও জমিসহ মোট ১২ কোটি ৪৭ লাখ ২৬ হাজার ১৮৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করায় দুদক আইনসহ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়েছে।
২৭ দিন আগে
রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ নেতার গ্রেপ্তারকে ঘিরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ
রাজশাহী নগরীতে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করানোর চেষ্টাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ এবং সাংবাদিকের একটিসহ আরও দুইটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
শুক্রবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ রাত ১১টা পর্যন্ত চলে।
সংঘর্ষে পুলিশের নগর বিশেষ শাখার (সিটিএসবি) এক সদস্যসহ চারজন আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন—মহানগর মহিলা দলের ক্রীড়া সম্পাদক লাভলী খাতুন, তার আড়াই বছর বয়সী কন্যা লামিয়া, সিটিএসবি সদস্য তোফাজ্জল হোসেন ও রেলওয়ের কর্মচারী মো. রনি। আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষের সময় তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়, যার মধ্যে একটি ছিল আজকের পত্রিকার সাংবাদিক জাহিদ হাসান সাব্বিরের। তিনি ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তার মোটরসাইকেল সড়কের পাশে রাখা অবস্থায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। তবে অপর দুইটি মোটরসাইকেলের মালিকের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে মহিলা দলের নেত্রী লাভলী ও তার অনুসারীরা কাদিরগঞ্জ এলাকার একটি বহুতল ভবন ঘেরাও করেন। ওই ভবনের একটি ফ্ল্যাটে পরিবারসহ বসবাস করেন বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ বাবু।
এদিকে লাভলী দাবি করেন, তিনি মোস্তাক আহমেদকে ভবনে ঢুকতে দেখেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালালেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সিসিটিভি ফুটেজ ও নিরাপত্তা প্রহরীর খাতায় মোস্তাকের নাম থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযান শেষে তার ভাই সাব্বির বাবুকে গ্রেপ্তার করা হলেও মোস্তাক পলাতক রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোস্তাক আহমেদকে না পাওয়ায় মহিলা দল নেত্রী লাভলী মহানগর সাবেক যুবদল নেতা মারুফ হোসেন জীবনকে দায়ী করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মারুফের অনুসারীরা দড়িখড়বোনা এলাকায় লাভলীর বাড়িতে হামলা চালায় এবং ভাঙচুর করে। এরপর প্রতিশোধ হিসেবে লাভলীর অনুসারীরা মারুফের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা করে ভাঙচুর চালায়।
সংঘর্ষটি দড়িখড়বোনা, উপশহর মোড়, রেলগেট, সপুরা ও শালবাগান এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র ও হাতবোমার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তবে সংঘর্ষের দীর্ঘ সময় পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকর উপস্থিতি দেখা যায়নি। তবে রাত ১১টার দিকে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে মোটরসাইকেলে দেওয়া আগুন নেভায়।
সংঘর্ষের পর রাতে সাড়ে ১১টার দিকে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করেন মহিলা দল নেত্রী লাভলী। তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপিরই একটি গ্রুপ তার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। লাভলী আরও দাবি করেন, আওয়ামী লীগ নেতার ভাই সাব্বিরকে তুলে দেওয়ার আগে তাকে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, যা তিনি ফিরিয়ে দেন। এ কারণে তার বাড়িতে হামলা চালানো হয়।
এ বিষয়ে মারুফ হোসেন জীবনের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে তার পক্ষ থেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সংঘর্ষের কারণ আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক নন, বরং লাভলীর পরিবারের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধ।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বাড়ানো হয় যৌথবাহিনীর টহল। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয়: তারেক রহমান
৪০ দিন আগে
যেভাবেই হোক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করবো: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
যেভাবেই হোক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করবেন বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে রাজধানীর বারিধারা ডিওএইচএসে নিজ বাসভবনে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথাগুলো বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দোসররা দেশকে অস্থিতিশিল করার চেষ্টা করছে। দেশ থেকে স্থানান্তর হওয়া টাকা দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে তারা।’
আরও পড়ুন: প্রয়োজনে র্যাব নতুন করে গঠন করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমাদের মা-বোনদের যেন কোনো সমস্যা না হয়, সে ব্যাপারে আমরা সব সময় সজাগ আছি। আইনশৃঙ্খলা আমি এসে যেভাবে পেয়েছি, তার চেয়ে উন্নতি হয়েছে কি না, সেটা আপনাদের ওপরই ছেড়ে দিলাম।’
এ সময় পদত্যাগ এবং তার ব্যর্থতার প্রসঙ্গ তিনি বলেন, ‘যে কারণে আমাকে পদত্যাগ করতে বলা হচ্ছে, ওই কারণগুলো যদি আমি উন্নতি করে দিতে পারি, তাহলে তো আর কোনো পদত্যাগের প্রশ্ন ওঠে না। তারা তো চাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন উন্নতি হয়, আমি সেই ব্যবস্থা করছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের থেকে অনেক উন্নতি হয়েছে এবং এটা আরও উন্নতি হতে থাকবে।’
আরও পড়ুন: উত্তরার ঘটনায় সঙ্গে-সঙ্গেই অ্যারেস্ট করা হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সারাদেশে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে, কিন্তু অপরাধীদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না—এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, গ্রেপ্তার কিন্তু করা হচ্ছে। তবে যে পরিমাণ গ্রেপ্তার করা উচিত, সেই পরিমাণ হয়তো হচ্ছে না। যেমন, বাসে ডাকাতির জন্য ইতিমধ্যে তিনজনকে সাভার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হচ্ছে এবং গ্রেপ্তার চলতে থাকবে।
৫২ দিন আগে
ডেভিল হান্টে সিলেট আ. লীগের আরও ৬ নেতা গ্রেপ্তার
চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের আরও ৬ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে এসএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: অপারেশন ডেভিল হান্ট: খুলনায় আটক ১৮
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- জৈন্তাপুর কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমদ (৩১), সিলেট নগরীর বাগবাড়ির মৃত মো. জুয়েল আহমদের ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী মো. সোহাগ (২৮), শাহপরাণ থানাধীন ধনকান্দি গ্রামের মৃত সুশীল বিশ্বাসের ছেলে জেলা ছাত্রলীগের সদস্য ইন্দ্রজিৎ বিশ্বাস (২৮), মহানগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান (৫৪), খাদিমনগর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কর্মী বাদশাহ মিয়া (৫০) ও জকিগঞ্জের হাতিডহর গ্রামের আবদুল লতিফের ছেলে জুয়েল আহমদ (২৬)।
গ্রেপ্তার আসামিদের মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
৫৭ দিন আগে