অভিযুক্তদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় না আনা হলে আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ করে দেয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অভিষেক মন্ডল।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই ও কম্পিউটার সায়েন্স ভবনের সামনে মারামারির এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত সাব্বির হোসেন নাহিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণি (৪৪তম ব্যাচ) ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। আহত অন্যান্যরা হলেন- জোবায়ের আহমেদ (সরকার ও রাজনীতি, ৪৫তম ব্যাচ), রাকিব (বাংলা, ৪৫তম ব্যাচ), সোহেল রানা (ভূগোল ও পরিবেশ, ৪৫তম ব্যাচ), আহসান ফাহিম (প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান, ৪৫তম ব্যাচ), কামরুল হাসান শাওন (নৃবিজ্ঞান, ৪৪তম ব্যাচ)।
এ ঘটনায় আহতরা বিচার দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দুপুর ২টায় এক ভর্তিচ্ছুকে নিয়ে পরীক্ষকেন্দ্রে পৌঁছে দিতে সিএসই ভবনের সামনে যান সাব্বির। সাব্বির পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে গেলে অভিযুক্তরা তাদের দোকানে টাকার বিনিময়ে মোবাইল ও ব্যাগ রাখার জন্য বলে। এতে প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তদের সাথে সাব্বিরের তর্ক হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তাদের সাথে সাব্বিরের সাথে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এসময় অভিযুক্ত জাকির অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও চড় থাপ্পড় দেয় ও জাহিদ মদের বোতল দিয়ে আঘাত করলে সাব্বিরের মাথা ফেটে যায়।
ছাত্রলীগ নেতা আফনান হোসেন আপন ও নাজিমুল বরণের নেতৃত্বে এ মারামারি হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
প্রক্টরিয়াল টিমের দুই সদস্যের সামনেই শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে যায়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আহত সাব্বিরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অভিষেক মন্ডল বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে ছাত্রলীগের কর্মী আহত হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিচার চেয়েছি। আজকের মধ্যে বিচার না পেলে আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ করে দেয়া হবে।’
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা আফনান হোসেন আপন বলেন, ‘শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির কথায় আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আমি কোনোভাবে মারধরের সাথে জড়িত নই।’ ছাত্রলীগের বিদ্রোহী গ্রুপ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে এমনটি করতে পারেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির দৃষ্টিতে ছাত্রলীগের কেউ অভিযুক্ত হলে তাদেরকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাশাপাশি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা কাম্য নয়। মারামারির এ ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’