জাবি
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ছাত্রদলের মানববন্ধন
গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি জনগণের উপর ইসরায়েলের বর্বর হামলার প্রতিবাদে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বেলা সোয়া ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের (ডেইরি গেইট) সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। মানববন্ধনে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ইসরায়েলের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান। সেইসঙ্গে ফিলিস্তিনে হামলা বন্ধে বিশ্ব মোড়লদের এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানান তারা।
এ সময় জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য তানজিলা হোসেন বৈশাখী বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে ফিলিস্তিনে যা হয়েছে, তা অতীতের যেকোনো ভয়াবহতাকে হার মানায়। গণতন্ত্রের দোহায় দেওয়া যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনে হামলাকে হালাল বানিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময় ফিলিস্তিনের পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে। আমরা বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানাই দ্রুত ফিলিস্তিনের সমস্যা সমাধান করুন।‘
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীদের ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ কর্মসূচি: জাবি প্রশাসনের সংহতি
শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিক বলেন, ‘ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যে বর্বর গণহত্যা সংগঠিত হয়েছে, পৃথিবীর কোথাও এমন গণহত্যার কোনো নজির নাই। এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘঠিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহল যদি এখনই কার্যকর ভূমিকা পালন না করে তাহলে ফিলিস্তিন মুছে যাবে।’
জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, ‘আমরা দেখেছি আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের উপর ইসরায়েল নারকীয় তান্ডব চালিয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘসহ বিশ্বশক্তিগুলো নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা এই মানববন্ধন থেকে বলতে চাই, অবিলম্বে এই হামলা বন্ধ করতে হবে। বিশ্বশক্তিগুলোকে হামলা বন্ধে এগিয়ে আসতে হবে। ফিলিস্তিনে মানবতার চরম বিপর্যয় বন্ধ করতে হবে।’
৮ দিন আগে
ছুটিতে প্রাণহীন জাবি, ক্যাম্পাসেই ঈদ নিরাপত্তারক্ষীদের
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ছুটি হয়েছে ক্যাম্পাস। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরেছে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী, ঈদের আগের দিন চলছে শেষ মুহূর্তের ঘরে ফেরার তোড়জোড়। ফলে সবুজ-শ্যামল ক্যাম্পাসে নেই প্রাণচাঞ্চল্য; নেই রিকশার টুংটাং বেলের শব্দ, গাড়ির হর্ণের বিরক্তিকর আওয়াজ, চিরচেনা কোলাহল। স্থবিরতা নেমে এসেছে চারদিকে।
শহিদ মিনার চত্বরে শিক্ষার্থীদের জটলাও চোখে পড়ছে না। ক্যাফেটেরিয়া, লাইব্রেরিতেও কাউকে দেখা যাচ্ছে না। চিরযৌবনা ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) যেন মলিন হয়ে আছে। আবাসিক হলগুলোর ক্যান্টিন-ডাইনিংয়ে ঝুলছে তালা। বটতলার দোকানিরা তাদের দোকানের শাটার নামিয়ে কবেই বাড়ি ফিরেছে! রেইনট্রি গাছে শুধু কাকেদের ডাক শোনা যায়। খাবার না পেয়ে ক্যাম্পাসের কুকুর-বিড়ালগুলোও পাশের এলাকায় আস্তানা গেড়েছে।
সাংবাদিক সমিতির অফিসটার সামনে ধুলার আস্তরণ জমে গেছে। কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে পায়চারি করছেন দুই-তিনজন নিরাপত্তারক্ষী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে কয়েকটি রিকশা অপেক্ষা করছে, যদি কেউ বের হয়—এই আশায়।
বলছিলাম জাঁকজমকের রাজধানী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কথা। ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতিতে ভরপুর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস সবসময় প্রাণচাঞ্চল্যে মুখর থাকলেও ঈদের ছুটিতে জনমানবহীন হয়ে পড়েছে।
ক্যাম্পাস ছুটি হয়েছে গত ২০ মার্চ। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে ফাঁকা হতে শুরু করে ক্যাম্পাস। যারা টিউশনি করান, কোচিংয়ে ক্লাস নেন কিংবা অন্য কোনো পার্ট টাইম কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাদের কারও কারও এখনও বাড়ি ফেরা বাকি। এদের মধ্যে যারা বাড়ি ফিরবেন, ঈদের আগমুহূর্তে তারা ব্যাগ গোছানোর তোড়জোড় শুরু করেছেন সকাল থেকেই।
আরও পড়ুন: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জাবিতে হামলা: ২৮৯ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, ৯ শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত
১৮ দিন আগে
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জাবিতে বিক্ষোভ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য প্রত্যাহার এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুর সোয়া ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক-সংলগ্ন মূল ফটকের (ডেইরি গেইট) সামনে একটি প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সদস্য সচিব ও জাবি শিক্ষার্থী জিয়াউদ্দিন আয়ানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা তীব্র আন্দোলন করে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের দাগ লেগে আছে খুনি হাসিনার হাতে। কেউ যদি তাকে পুনর্বাসনের ন্যূনতম প্রচেষ্টা চালায় তাহলে ছাত্র-জনতা তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। গণঅভ্যূত্থানের মাধ্যমে যে আওয়ামী লীগকে মাইনাস করা হয়েছে, তাদের যদি কেউ পুনর্বাসনের চেষ্টা চালায় তাহলে তাদেরও মাইনাস করা হবে।
মিছিলে শিক্ষার্থীদের, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘হাসিনার দোসরেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ কর, করতে হবে করতে হবে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুঁখে দাও দিতে হবে’, ‘ভারতীয় প্রেসক্রিপশন, এই বাংলায় চলবে না’—স্লোগান দিতে শোনা যায়।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে মিছিল
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘আমরা দেখেছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ধারণ করতে পারে নাই। ৫ আগস্টের পর কোনো যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য আমাদের আবারও রাজপথে নামতে হবে—এটা আমরা কল্পনায়ও ভাবি নাই।’
‘আমরা দেখেছি, গতকাল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। এই বক্তব্যকে আমরা প্রত্যাখান করছি সেইসঙ্গে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকার বা অন্য কেউ যদি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের ন্যূনতম প্রচেষ্টা চালায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’
গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘স্বৈরাচারী পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি গত জুলাই বিপ্লবে হাজার হাজার ছাত্রজনতার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এখনও হাজার হাজার মানুষ আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে হাসপাতালের বেডে জীবন কাটাচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি এসব দেখছে না? তাদের কি চোখে পড়ে না? এত কিছুর পরেও তারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালায় কার হুকুমে?’
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, পার্শ্ববর্তী দেশের কোনো প্রেসক্রিপশন যদি এদেশে বাস্তবায়নের কোনো অপচেষ্টা চালানো হয়, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেব।’
বাগছাসের কেন্দ্রীয় সংসদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক ও জাবি শিক্ষার্থী তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘সংগ্রামী ছাত্র-জনতা আপনারা দেখেছেন, ৩৬ দিনের দীর্ঘ আন্দোলন শেষে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের রায় দিয়েছে। স্বৈরাচারী আওয়ামী শক্তি দীর্ঘ ১৭ বছর বাংলাদেশকে একটি আবদ্ধ কারাগারে পরিণত করেছিল, কিন্তু এদেশের জনগণ পরাধীনতার শিকল ভেঙে দিয়ে খুনি হাসিনাকে লাল কার্ড দেখিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘কেউ যদি দিল্লি থেকে বা অন্য কোথাও থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে এসে এদেশকে চালাতে চায় তাহলে তারা ভুল করবে। বাংলাদেশ কীভাবে চলবে, তা ঠিক করবে এদেশের ছাত্র-জনতা। আমরা আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের যেকোনো অপচেষ্টা রুঁখে দিতে রাজপথে সর্বদা তৎপর থাকব।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সাভার প্রতিনিধি জুলকারনাইন বলেন, ‘আমরা রক্ত দিতে শিখে গেছি। কীভাবে দাবি আদায় করতে হয়, তাও শিখে গেছি আমরা। কেউ যদি আমাদের চোখ রাঙায়, তাদের পাল্টা জবার দেওয়ার ভাষা আমাদের জানা আছে।’
তিনি বলেন, ‘সামরিক-বেসামরিক কোনো শক্তি যদি খুনি হাসিনাকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালায়, তাহলে ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল শক্তিকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করা হবে।’
গতকাল (বৃহস্পতিবার) ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে আমাদের কোনো পরিকল্পনা নেই।
এরপর গভীর রাতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চালের মূখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ সংক্রান্ত একটি ফেসবুক স্টাটাস দিলে, সেটি কেন্দ্র করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
২৭ দিন আগে
ঈদ উপলক্ষে ১৬ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে জাবি
আসন্ন ঈদুল ফিতর ও স্বাধীনতা দিবস মিলিয়ে মোট ১৬ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এ বি এম আজিজুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, পবিত্র রমজান, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, জুমাতুল বিদা, শবে কদর এবং ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আগামী ২৩ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ১৬ দিন ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় অফিস কার্যক্রম বন্ধ থাকবে ২৬ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ১২ দিন।
অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান জানান, আগামী ২৫ মার্চ হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ কর্মদিবস। এরপর বুধবার (২৬ মার্চ) স্বাধীনতা দিবসের ছুটির মাধ্যমে অফিস বন্ধ হয়ে আগামী ৭ এপ্রিল সোমবার থেকে পুনরায় অফিস কার্যক্রম শুরু হবে।
আরও পড়ুন: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জাবিতে হামলা: ২৮৯ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, ৯ শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত
তিনি বলেন, ‘তবে শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা আগামী বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) পর্যন্ত চলবে। এরপর ছুটি শুরু হবে। এ কারণে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষা-বন্ধ থাকবে।’
গত ২ মার্চ রমজান মাস শুরু হয়। সেই হিসেবে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে আগামী ৩১ মার্চ বা ১ এপ্রিল দেশে ঈদ উদযাপিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২৯ দিন আগে
জাবিতে বসন্তের আগমন, প্রকৃতিতে স্নিগ্ধতার ছোঁয়া
‘পূর্ণিমা রাতে ঐ ছোটাছুটি করে কারা? দখিনা পবনে দোলে, বসন্ত এসে গেছে!’ জানালা ভেদ করে সূর্যের আলোকচ্ছ্বটা প্রবেশ করছে কক্ষে। পাখপাখালির কলতানে মুখরিত চারপাশ। শীতের আড়মোড়া ভেঙে, রুক্ষতা বিদায় করে, ফুলের সুবাসে, কোকিলের মিষ্টি মিহি সুরে ঘুম থেকে জেগে ওঠা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলো জনমানবশূন্য। শুষ্কতার আবেশে ঘোর রিদ্যতা। চারিদিকে শুনশান, নীরব-নিস্তব্ধতা।
আপন নীড়ে ফিরে গেছে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আগত পরিব্রাজক পাখিরা। গাছে গাছে নতুন পাতা গজিয়েছে। সবুজের সমারোহ প্রাণ খুলে হাসতে শুরু করেছে। প্রকৃতি যেন তার রূপের ডালি মেলে জগৎবাসীকে জানান দিচ্ছে—শীতের ইতি ঘটেছে, ঋতুরাজ বসন্ত এসেছে।
বসন্তের শুরুতে রূপ-লাবণ্যের সবটাই যেন প্রকৃতিপ্রেমীদের উজাড় করে দেয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলা-নিকেতন, মায়ার নগরী, বাসন্তী রানী, প্রকৃতিকন্যা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। গাছের ডালে ডালে ঝরে পড়া পাতার পর নতুন সবুজ কচি পাতার অঙ্কুর, কোকিলের কুহু কুহু ধ্বনি, পলাশ-শিমুলের রক্তিম আভা, সেইসঙ্গে গন্ধরাজের অমৃত সুবাসে ক্যাম্পাসের প্রতিটি আনাচ-কানাচে উৎসবের আমেজ বসন্তকে যেন আরও রূপবান করে তুলেছে।
কোকিল-শ্যামা গাছের ডালে বসে গাইতে শুরু করেছে। ভ্রমরেরা মেলেছে ডানা। আকাশে ভেসেছে মেঘের ভেলা। গাছে গাছে শিমুল-পলাশ, কৃষ্ণচূড়ার মেলা। চারদিকে পরিবর্তনের ছোঁয়া। জাহাঙ্গীরনগরে লেগেছে তারুণ্যের হাওয়া। প্রকৃতি সেজেছে বর্ণিল সাজে।
বাংলা সাহিত্যে বিশাল স্থান অধিকার করে আছে বসন্ত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশসহ বহু কবি বসন্তের সৌন্দর্য, প্রেম ও প্রাণচাঞ্চল্যের কথা লিখেছেন।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো।’
যদিও বৈশাখকে আহ্বান করে লেখা, তবুও এর ভেতরে বসন্তের এক ধরনের প্রস্তুতির বার্তা পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: বর্ণিল আয়োজনে ঢাবিতে বসন্ত বরণ
৩৫ দিন আগে
পুলিশকে মারধরের প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ
মব সন্ত্রাসের প্রতিবাদ, এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিংয়ের বিচার, পুলিশকে মারধর এবং লাকী আক্তারের গ্রেফতারের দাবিতে মধ্যরাতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দিবাগত রাত ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় জড়ো হয় একদল শিক্ষার্থী। এরপর তারা মিছিল নিয়ে ছেলেদের হলগুলোর সামনে দিয়ে ট্রান্সপোর্ট (পরিবহন চত্ত্বর) অতিক্রম করে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। তারপর মেয়েদের হলগুলোর সামনে দিয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে ফের বটতলায় এসে একটি প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে মিছিলটি শেষ করেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা দেখেছি কীভাবে শাহবাগ ফ্যাসিস্টের ভিত্তিপ্রস্তর হিসাবে কাজ করেছে। আমরা এও দেখেছি, ২০১৩ সালে কীভাবে তৎকালীন প্রজন্মের চোখে ধুলো দিয়ে এদেশের দেশপ্রেমিক নাগরিককে এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং এর মাধ্যমে খুন করেছে। আমরা তাদের হুঁশিয়ার করে বলতে চাই—এটা ২০১৩ নয়; এটা ২০২৫। আবার যদি কেউ কোনো শাহবাগ কায়েম করতে চায়, তাহলে তোমাদের বিষদাঁত ভেঙে দেওয়া হবে।
মিছিল শেষে সমাবেশে ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শোয়েব হাসান বলেন, ‘আমরা শাহবাগীদের হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, তোরা ছাত্রলীগ নিয়ে আয়, লাকিকে নিয়ে আয়, শাহরিয়ার কবিরকে নিয়ে আয়, কিন্তু ২০১৩ সালে এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং এর মাধ্যমে দেশপ্রেমিক নাগরিকদের তোরা যেভাবে খুন করেছিস, তার হিসাব আমরা পই পই করে নেব। আমরা দেখেছি সেই সব শাহবাগীরা কোন কোন পতাকাতলে লালিত পালিত হয়েছে। আমরা কাউকেই ভুলি নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যতদিন বেঁচে আছি, আর কোনো মব, আর কোন এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং, আর কোনো শাহবাগ এই বাংলাদেশে কায়েম হতে দেব না। এই প্রজন্ম যতদিন জীবিত থাকবে, রক্তপিপাসু শাহবাগীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চলমান থাকবে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, আপনারা অনতিবিলম্বে শাহবাগী লাকি আক্তারকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসুন, অন্যথায় আমরা কঠর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।’
গনিত বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাফায়াত মীর বলেন, ‘এই শাহবাগ ভারতীয় আধিপত্যবাদের পক্ষে, এই শাহবাগ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, এই শাহবাগ দেশপ্রেমিক নাগরিকদের হত্যায় নৃত্য করেছিল। আমরা দেখতে পাচ্ছি, ২০১৩ এর সেই পুরনো শকুন আবারো দেশকে ভারতীয় আধিপত্যবাদের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার নীলনকশা বাস্তবায়নে তৎপর রয়েছে। যেকোন মূল্যে এদের মোকাবিলা করতে হবে।’
আরও পড়ুন: সৌহার্দ্য সম্প্রীতির মেলবন্ধনে জাবিতে গণ-ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম এই শাহবাগীরা ২৪ এর পরে নিজেদের শুধরে নেবে। কিন্তু না, এরা আবারো দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আমরা বলতে চাই, আমরা ২৪ এর সৈনিকরা এখনো বেঁচে আছি। শাহবাগীদের যেকোন ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমরা জীবন দিতেও প্রস্তুত।’
সিএসই বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আলী জাকি শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা দেখেছি কীভাবে শাহবাগ ফ্যাসিস্টের দোসর হিসাবে কাজ করেছে। আমরা এও দেখেছি কীভাবে শাহবাগ বিচারিক হত্যাকান্ডে নেতৃত্ব দিয়েছে। আমরা এও দেখেছি শাপলার গণহত্যাকে এই শাহবাগ কীভাবে বৈধতা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশপ্রেমিক নাগরিকদের হত্যায় মদত দেওয়ার পরেও এই সন্ত্রাসী লাকি প্রকাশ্য দিবালোকেও ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা দেখেছি, দেশের সকল স্তরের মানুষরা এই শাহবাগীদের বিচার চায়। আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই অনতিবিলম্বে লাকি আক্তারের গ্রেফতার নিশ্চিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, নইলে ২৪ এর চেতনাকে হরণ করা হবে। আপামর ছাত্রসমাজ তা কখনই মেনে নেবে না।
৩৬ দিন আগে
সৌহার্দ্য সম্প্রীতির মেলবন্ধনে জাবিতে গণ-ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির মেলবন্ধনে চতুর্থ বর্ষের (৫০তম ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে গণ-ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) জাবির কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইফতার শেষে আয়োজকরা জানান, রমাদানের শিক্ষাকে ধারণ করে গত বছরের ন্যায় এ বছরও বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে এই গণ-ইফতার কর্মসূচি পালিত হলো। প্রত্যেক বছর এই ইফতার কার্যক্রম চালু থাকবে।
আয়োজক কমিটির সদস্য তাহজিব হাসান বলেন, ‘গতবছর নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতারে বাঁধা দিয়েছিল তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তার প্রতিবাদে গতবছরই আমাদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা জাবিতে গণ-ইফতার কর্মসূচি পালন করে। সেই ধারা অব্যাহত রাখার জন্যই আমরা এই আয়োজন করেছি। এই ধারা চলমান থাকবে।
আয়োজক কমিটির আরেক সদস্য জিয়াউদ্দিন আয়ান বলেন, ‘আমাদের আজকের এই আয়োজনে অনেকেই অনেকভাবে সহযোগিতা করেছে। এত সুন্দর একটা আয়োজন করতে পেরে ভালো লাগছে। আশা করি আগামী বছরও এমন আয়োজন হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, ‘আজকের যে ইফতার কর্মসূচি আয়োজন করেছে শিক্ষার্থীরা, তাদের এই আয়োজনকে স্বাগত জানাই। এখানে এসে ইফতার করেই যে আমরা চলে যাবো, গিয়ে সব কিছু ভুলে যাবো এমনটা যেন না হয়। এখান থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। এই রমজানে আমরা যে সংযমের শিক্ষাটা নেব এটা যেন সারাটা জীবন নিজের মাঝে ধরে রাখতে পারি। আমরা যেভাবে গুনাহমুক্ত ভাবে দুনিয়াতে এসেছি সেভাবেই যেন আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে পারি এই শিক্ষাটা রমজান থেকেই অর্জন করতে হবে।’
আরও পড়ুন: ধর্ষকদের শাস্তি ও নারীদের নিরাপত্তার দাবিতে জাবিতে মানববন্ধন
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশেদুল আলম বলেন, ‘আমার চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আজকে গণ-ইফতারের মতো এত সুন্দর একটা আয়োজন সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এমন আয়োজন রমজানের সৌন্দর্যকে যেন আরও বাড়িয়ে তুলেছে। মাহে রমাদানের শিক্ষা আমাদের সবাইকে ধারণ করা উচিত।’
৩৬ দিন আগে
জাবিতে অটোরিকশা বন্ধে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ, কার্ট গাড়ি চালুর সিদ্ধান্ত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় প্রায় চার মাস ধরে বন্ধ আছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে পরীক্ষামূলকভাবে জাবিতে ইলেকট্রনিক কার্ট গাড়ি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
৬৯৭.৯৬ একরের বৃহৎ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ছিলো ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। কিন্তু তা বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগে দিনাতিপাত করছেন শিক্ষার্থীরা। তারা যাতায়াতে প্যাডেলচালিত রিকশা ব্যবহার করছেন। কিন্তু তা ব্যবহারে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সফলতা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টরা জানান, গত চার মাস আগে জাবিতে অটোরিকশা বন্ধ হয়ে যায়। যার কারণে যাতায়াতে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে প্রশাসন কিছু প্যাডেলচালিত অটোরিকশা অনুমোদন দিলেও তা ফলপ্রসূ হচ্ছে না। এই রিকশার বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। চলাচলে সময় অপচয়, অত্যাধিক ভাড়া আদায়, উঁচু রাস্তায় নেমে যাওয়াসহ আরও নানান সীমাবদ্ধতার কথা জানা যায়।
এছাড়া প্রতিদিন রুটিন করে ক্যাম্পাসের ভিতর শাটল বাস চললেও শিক্ষার্থীদের কাঙ্ক্ষিত চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। অনেককে দীর্ঘসময় রিকশার জন্য অপেক্ষা করতে হয় অথবা বাসে উঠে বসে থাকতে হয়, সময়মতো বাস পাওয়া যায় না। যার ফলে ক্যাম্পাসে ইজি বাইক বা কার্ট গাড়ি চালু করা জরুরি হয়ে পড়ে। অবশেষে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ক্যাম্পাসে কার্ট গাড়ি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
এ বিষয়ে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আবু রায়হান বলেন, এতবড় ক্যাম্পাসে চলাচল করার জন্য অটোরিকশা লাগে। যাদের বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল আছে, তাদের কোনো অসুবিধা নেই কিন্তু যাদের এসব নেই তাদের ভোগান্তির শেষ নেই। দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকেও রিকশা পাওয়া যায় না। ক্লাস পরীক্ষায় দেরি হয়, সময় অপচয় হয়। শুনলাম প্রশাসন কার্ট গাড়ি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।
আরও পড়ুন: জাবিতে ‘হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের’ পরিচয়ধারী এক ভুয়া শিক্ষার্থী আটক
ক্যাম্পাসে কার্ট গাড়ি চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান গবেষণা কারখানার সিনিয়র নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান জানান, রমজানে শিক্ষার্থীদের কষ্টের কথা মাথায় রেখে দুইটি গাড়ি নিয়ে এসেছি । আমাদের ক্যাম্পাসের রাস্তাগুলো যেহেতু উঁচু-নিচু তাই পরীক্ষামূলকভাবে ট্রায়াল দেবো। এটাতে ৮-১০ টি সিট থাকে। এটা পরিবেশবান্ধব হওয়ায় কোন সমস্যা নেই। আশা করি একটা ভালো ও স্থায়ী সমাধান আসবে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের কষ্টের কথা মাথায় রেখেই আমরা দীর্ঘদিন থেকে এমন কিছু করার পরিকল্পনা করছিলাম। কয়েকটি মিটিংও করেছি এ ব্যাপারে। এছাড়া কয়েকটি গাড়ি কোম্পানির সাথে আমাদের কথাও হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা পরীক্ষামূলকভাবে দুইটি গাড়ি নিয়ে এসেছি। ভালো ফলাফল পেলে মার্চের মাঝামাঝি নাগাদ আমরা আরও ১০-১৫ টি গাড়ি নিয়ে আাসবো। আর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আশা করি আগামী দুই তিন মাসের মধ্যেই আমরা একটা ভালো সমাধান দিতে পারবো এবং এই সার্ভিস সম্পূর্ণভাবে চালু করতে পারবো।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৭ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা করিম রাঁচির অটোরিকশার ধাক্কায় নিহতের ঘটনায় ক্যাম্পাসে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ হয়ে যায়।
৪১ দিন আগে
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ
সারাদেশে চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার চত্বর থেকে একটি মিছিল নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে (ডেইরি গেইট) অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। এতে যান চলাচল স্তিমিত হয়ে পড়ে। অবরোধ শেষে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে গেলে যান চলাচল আবারো স্বাভাবিক হয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, গত কয়েক দিন দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। প্রায় প্রতিদিনই ধর্ষণ, ছিনতাই, হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মানুষের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। এর ফলে তিনি উপদেষ্টা পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ, ছিনতাই ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামন উজ্জ্বল বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। জুলাই বিপ্লবে সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা হামলার স্বীকার হচ্ছেন। ডেভিল হান্টের নামে বিপ্লবীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নাই। সারাদেশে ভয়াবহভাবে খুন, ছিনতাই ও ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটছে। আমরা আতংকিত হয়ে পড়ছি। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, প্রশাসনের সকল গুরুত্বপূর্ণ পদে এখনো আওয়ামী লীগের দালালরা বসে আছে। আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে হুশিয়ার করে বলতে চাই, এসব আওয়ামী দোসরদের অতিদ্রুত গ্রেফতার করতে হবে এবং দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। আর তা না পারলে আপনাকে পদত্যাগ করতে হবে।’
এ ছাড়াও তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘বিপ্লব পরবর্তী নতুন সরকারের দায়িত্ব ছিলো দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন করা। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি দেশের প্রশাসনের সেদিকে কোন মনোযোগ নেই। তারা দেশের জনগণের পালস বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা দেশের জনগণের চাহিদার মূল্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।’
আরও পড়ুন: জাবিতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, দেশের কোন রাজনৈতিক শক্তি যদি অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আপনাদের বাধা দিয়ে থাকে, তাহলে আপনারা তা জাতির সামনে প্রকাশ করুন। নাহলে অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় আপনার পদত্যাগের জন্য আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে দেশের দুই হাজার মানুষ জীবন দিয়েছে আজকের এই দিনটি দেখার জন্য নয়। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ছে প্রশাসনের অবহেলার কারণে।’
তিনি আরও বলেন, যদি সরকার মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়; খুন, ছিনতাই, ধর্ষণ এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে দেশের প্রশাসনের দায়িত্বে থাকার নৈতিক অধিকার হারাবে তারা।
৫২ দিন আগে
কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলার প্রতিবাদে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে এই বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে আবার বটতলায় এসে প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
এসময় ‘জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো’; ‘লীগ গেছে যে পথে, দল যাবে সেই পথে’; ‘টেম্পু না শিক্ষা, শিক্ষা শিক্ষা’; ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’; ‘সন্ত্রাসীদের আস্তানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’; ‘চাঁদাবাজদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’; ‘সন্ত্রাস করে দুই দল, লীগ আর ছাত্রদল’; ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’; ‘চাঁদাবাজি না শিক্ষা, শিক্ষা শিক্ষা’; ‘ছাত্রদল হামলা করে, ইন্টিরিম কি করে’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে জাবি ক্যাম্পাস।
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ছাত্র নাহিদ হাসান ইমন বলেন, ‘দেশের কোনো একটি রাজনৈতিক দলকে মসনদে বসানোর জন্য দেশের জনগণ আন্দোলন বা গণঅভ্যুত্থান করেনি। আমরা কুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা বিএনপি এবং ছাত্রদলকে অনুরোধ করছি, তারা যেন আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিস্ট না হয়। যদি তারা তেমন করে, তবে তাদেরও আওয়ামী লীগের মতোই পরিণতি হবে।’
আরও পড়ুন: কুয়েটের ১০ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার, বিভিন্ন মেয়াদে তিনজনের সাজা
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌহিদ সিয়াম বলেন, ’আমরা যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, এই নতুন বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে কেউ পার পাবে না। আমরা ছাত্রদলকে বলে দিতে চাই, আপনারা জুলাইকে ভুলে যাবার চেষ্টা করবেন না। আপনারা জুলাইকে ধারণ করুন। আপনারাও আমাদের সাথে হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ রেখে স্বৈরাচার পতনে ভূমিকা রেখেছেন। আপনারা এমন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে গেলে হাসিনার মতোই অবস্থা হবে আপনাদের।’
সমাবেশে তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘আজকে কুয়েটে যখন আমার ভাইদেরকে হামলা করা হয়, তখন আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। কুয়েটে সন্ত্রাসীদের ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একটি লোভী রাজনৈতিক দল দেশের মানুষকে নিয়ে বিভ্রান্তির রাজনীতি করছে। আমরা আপনাদের বলে দিতে চাই, সাত মাস আগে স্বৈরাচারকে হটাতে আমাদের বেশি সময় লাগেনি, আপনারা যদি এভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা অব্যাহত রাখেন তাহলে আপনাদেরকেও ক্যাম্পাস থেকে বিতারিত করতে আমাদের সময় লাগবে না।’
৫৭ দিন আগে