বুধবার দুপুরে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আবেদনটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
এর আগে, সোমবার খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণের আবেদন জানালে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ তা নথিভুক্ত করে রাখেন। একই সঙ্গে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণের বিষয়ে আদেশ দেবেন বলে উল্লেখ করেন।
পরে নথিভুক্ত করে রাখার আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন জানানো হবে উল্লেখ করে মঙ্গলবার সকালে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী আপিল শুনানি মুলতবি রাখতে হাইকোর্ট বেঞ্চকে অনুরোধ করেন। কিন্তু হাইকোর্ট ওই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করলে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা শুনানি না করেই আদালত ত্যাগ করেন। পরে হাইকোর্ট রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের যুক্তিতর্ক শুনানি গ্রহণ করে বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টায় পরবর্তী আদেশের জন্য ধার্য করেন।
এরই মধ্যে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণের আবেদন নথিভুক্ত করে রাখার আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন জানায়।
বুধবার দুপুরে ওই আবেদনের ওপর চেম্বার বিচারপতির আদালতে শুনানি হয়।
শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি কোনো আদেশ না দিয়ে আবেদনটি আগামী রবিবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে নিয়মিত আপিল বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। পরে বিকালে এই বিষয়টি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের বেঞ্চকে অবহিত করলে আপিল বিভাগের আদেশ দেখে আগামী রবিবার পরবর্তী আদেশ দেবেন বলে উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় বিচারিক আদালত। সেই থেকেই তিনি কারাবন্দী রয়েছেন। তারেক রহমানসহ বাকি পাঁচ আসামিকে দেয় ১০ বছর করে কারাদণ্ড।
এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় খালাস চেয়ে খালেদা জিয়া আপিল করেন। এছাড়া কারাবন্দী দুই আসামি কাজী সলিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদও আপিল করেন। গত ১২ জুলাই থেকে এসব আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়।
২৭ কার্যদিবস শুনানি হয়েছে। এ অবস্থায় সোমবার অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণের আবেদন জানানো হয়।
ওই আবেদনের শুনানিকালে খালেদার আইনজীবীরা বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার অর্থ ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা কুয়েতের আমির জিয়াউর রহমানের স্মৃতি রক্ষার্থে এতিমখানা করতে দিয়েছেন। এই মামলার অর্থের উৎস পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন। অর্থের উৎস পাওয়া গেলে মামলার মূল বিবেচ্য বিষয় ট্রাস্টের অর্থ পাবলিক ফান্ড না প্রাইভেট ফান্ড তা পরিষ্কার হতো।
এই মামলার রাষ্ট্রপক্ষের ২৬তম সাক্ষী ও তৎকালীন বাংলাদেশের সৌদি রাষ্ট্রদূত খন্দকার আবদুস সাত্তার সাক্ষ্যে বলেছেন, সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংক সাম্বা গ্রুপে একীভূত হয়েছে। তিনি অর্থের উৎসের বিষয়ে সাম্বা গ্রুপের মি. তালাতের কাছে চিঠি লিখেছেন। তিনি নিশ্চয়তা দিয়েছেন তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে এবং তা পাওয়া মাত্র দেয়া হবে। তবে এরপর অর্থের উৎসের বিষয়ে আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এজন্য আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে অর্থের উৎস নিশ্চিত হতে হলে অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণ করতে হবে।
অপর দিকে দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই অর্থ এসেছে সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে। এ বিষয়টি মামলার ২৬তম সাক্ষীর মাধ্যমে পরিষ্কার হয়েছে। এই পর্যায়ে ২৬ বা ২৭ দিন যুক্তি উপস্থাপনে শেষে অতিরিক্ত সাক্ষ্যগ্রহণের এই আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়।