তিনি বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর আমরা হানাদার মুক্ত হই। কিন্তু স্বাধীনতার স্বাদ ভোগ করতে পারেনি। ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে সে দিনই আমরা স্বাধীনতার পূর্ণতা লাভ করেছি।’
রবিবার বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিবস উপলক্ষে ভোলা সরকারি স্কুল মাঠে সমাবেশে ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তোফায়েল আহমেদ।
আরও পড়ুন: একাত্তরের পরাজিত শক্তি আবার মাথাচারা দিয়েছে: তোফায়েল
এদিকে, এ সমাবেশকে ঘিরে গত কয়েক দিন ভোলায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসব আমেজ বিরাজ করে। সকাল থেকে ভোলা সদর উপজেলা ১৩টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা থেকে ঢোল, বাদ্য, ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে ভোলা সরকারি স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগ ও দলীয় অংঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হতে থাকেন। সভাস্থলের আশপাশের রাস্তাঘাট ভরে যায়। বেলা ১২টার দিকে ওই মাঠ প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতিতে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, যার জন্ম না হলে আজও আমরা পাকিস্তানের দাসত্বের নিগঢ়ে আবদ্ধ থাকতাম। বার বার বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসি দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার নামে একটি মামলা দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসিতে ঝুলানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এক পাশে ছিলো ফাঁসির কাষ্ঠ, আর এক পাশে ছিলো প্রধানমন্ত্রীর গদি। বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রীর গদি ত্যাগ করে ফাঁসির মঞ্চ বেছে নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: এখন গ্রামে গেলে শহর মনে হয়: তোফায়েল
ভোলা-১ আসনের এ সংসদ সদস্য বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসি দেয়ার জন্য জেলের মধ্যে কবর করেছিলো পাকিস্তান। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন কবরের ভয় আমাকে দেখিওনা। আমিতো জানি তোমরা আমাকে ফাঁসি দিবে। কিন্তু আমি এটাও জানি আমার দেশ স্বাধীন হবে। আমাকে এখানে কবর না দিয়ে আমার লাশটা বাংলার মাটিতে পৌঁছে দিও। কিন্তু তাকে তারা ফাঁসি দিতে পারেনি। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলো। ১০ জানুয়ারি দুপুর ১টা ৫১মিনিটে ব্রিটিশ বিমানে করে দেশে এলেন। আমরা তাকে সেখানে অর্ভ্যথনা জানাই।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। দুটি স্বপ্নের একটি পূরণ করেছেন। আর একটি পূরণ করে যেতে পারেননি। আজকে ক্ষুদামুক্ত দারিদ্র মুক্তি করার সেই কাজটি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা হাতে নিয়েছেন। তিনি নিষ্ঠার সাথে সততার সাথে রাষ্ট্র পরিচালনা করে চলেছেন। আজকে গ্রাম শহরে পরিণত হয়েছে। অনেক বড় বড় প্রজেক্ট হয়েছে। পদ্মা ব্রিজ আগামী বছর চালু হবে।
ভোলা-বরিশাল ব্রিজের প্রস্তাবও তিনি উপস্থাপন করেছেন। এ ব্রিজও আমরা এক দিন দেখতে পাব উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিএনপি ভুলের রাজনীতি করে চলেছে: তোফায়েল
ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজিত আলোচনা সভায় ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি দোস্ত মাহামুদের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মমিন টুলু, জেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম সম্পাদক জহুরুল ইসলাম নকিব, সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব।
এছাড়াও ভোলা পৌর সভার মেয়র ও জেলা যুবলীগের সভাপতি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হামিদুল হক বাহালুল মোল্লা, অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশরাফ হোসেন লাভু, অ্যাডভোকেট জুরফিকার আহমেদ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম গোলদার, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক এনামুল হক আরজু, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. ইউনুছ, উপজেলা আওয়াম লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল ইসলামসহ জেলা ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে বর্ণাঢ্য এক শোভাযাত্রা ভোলা শহর প্রদক্ষিণ করে।