তিনি বলেন, ‘২৭ ঘণ্টার মধ্যে রাজধানীর পল্লবীর কালশী এলাকার বাউনিয়া বাঁধ বস্তি, মহাখালীর সাততলা বস্তি ও মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে বিহারি পট্টিতে অগ্নিকাণ্ড রহস্যজনক। বস্তির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের মদদপুষ্টরা ষড়যন্ত্র করে এসব আগুন লাগিয়েছে বলে ভুক্তভোগী বস্তিবাসীদের ধারণা। আগুন লাগিয়ে দখল-পাল্টা দখল, অসৎ প্রক্রিয়ায় কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া, অবাধে মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজির দৌরাত্ম নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে তারা বেপরোয়া।’
বিএনপি নেতা এক বিবৃতিতে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এ রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডে রাজধানীর উক্ত তিনটি বস্তির অসংখ্য নিম্ন-আয়ের মানুষ ঘরবাড়ি, সম্পদ, অর্থ, পরিধেয় বস্ত্র এমনকি রান্না করার সম্বলটুকু হারিয়ে দিশেহারা। এমন পরিস্থিতিতে তারা শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে অত্যন্ত মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।’
গণমাধ্যমের সংবাদের বরাত দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিগত তিন বছরে ঢাকায় বিভিন্ন বস্তিতে ৯৫৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ পর্যন্ত একটিরও অভিযোগপত্র দিতে পারেনি। মূলত ক্ষমতাসীনদের মদদপুষ্ট ভূমিদস্যু মহলের যোগসাজশ ও অবৈধ প্রভাব এর মূল কারণ।
তিনি বলেন, রাজধানীর বস্তিগুলোতে বিভিন্ন সময় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়ে এক দিকে ভূমিদস্যুরা প্রচুর অর্থ-বিত্তের মালিক বনে যাচ্ছে, অন্যদিকে নিম্ন-আয়ের খেটে খাওয়া অসহায় মানুষ অগ্নিকাণ্ডের কারণে এক বস্তি থেকে অন্য বস্তিতে ছুটে বেড়াচ্ছে একটু মাথা গোজার ঠাঁইয়ের জন্য।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন যে এসব সত্ত্বেও সরকার, প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়গুলোর প্রতি ন্যুনতম ভ্রুক্ষেপ না করে নির্বিকার থাকছে। এ ধরনের ভ্রুক্ষেপহীনতাকে চরম মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড হিসেবে অভিহিত হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার কিংবা সিটি করপোরেশন না থাকায় চরম বিপদের মুখোমুখি হয়েও ভুক্তভোগী মানুষরা সাহায্য সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অগ্নিকাণ্ডে যারা সম্বলহীন, এসব মানুষ এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ত্রাণসামগ্রী পায়নি।’
বিএনপি নেতা নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড এবং দখল-পাল্টা দখল ও দখলের সাথে জড়িত চিহ্নিত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
তিনি অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়ে মানবেতর জীবন-যাপনকারী নিম্ন-আয়ের অসহায় মানুষদের স্থায়ীভাবে পুনর্বাসন, পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ ও নতুন করে জীবনযাপনের জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রদান এবং বস্তিতে সেবা সংস্থাগুলোর বৈধ ও সুরক্ষিত সেবা নিশ্চিত, মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের অপসারণ ও নিরাপদ জীবন-যাপনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।