সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নিজ বাড়ি কোম্পানীগঞ্জের মানিকপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মার কবরের পাশে তার ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে দাফন করা হয়।
কবিরহাট সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে চতুর্থ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজ মাঠে পঞ্চম এবং সবশেষে নিজ গ্রাম মানিকপুরে ষষ্ঠ জানাজা শেষে বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদের দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে, সিঙ্গাপুরে একটি জানাজা ও ঢাকায় দুটি জানাজা শেষে দুপুর ৩টা ১০ মিনিটের দিকে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার যোগে কবিরহাট ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণে মওদুদ আহমদের মরদেহ আনা হয়।
নোয়াখালীতে তার জানাজায় প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যাহ বুলু, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুক, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য তাবিথ আউয়াল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাল উদ্দিন চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রিপন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল হাই সেলিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম সিকদার, বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি আবদুল মতিন লিটন, কবিরহাট পৌরসভার মেয়র জহিরুল হক রায়হান, কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুর রহিম চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদক লিটন চৌধুরী, কবিরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জুসহ দলীয় নেতা-কর্মী ও সর্বস্তরের জনগণ অংশ নেন।
ব্যারিস্টার মওদুদের মরদেহ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় আনা হয়। ঢাকায় পৌঁছানোর পর বিমানবন্দর থেকে মরদেহ ঢাকার একটি হাসপাতালের হিমঘরে নেয়া হয়।
জানা গেছে, মৃত্যুর আগে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বাবা-মার কবরের পাশে তাকে দাফন করার ইচ্ছা প্রকাশ করে গেছেন। তার ইচ্ছা অনুযায়ী পরিবারের পক্ষ থেকে সে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ আর নেই
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ (৮১) মঙ্গলবার সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
বিএনপি নেতার কিডনিতে মারাত্মক জটিলতা এবং ফুসফুসে অক্সিজেন গ্রহণক্ষমতা কমে গিয়েছিল।
গত ৩০ ডিসেম্বর, রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিএনপি নেতাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃদু স্ট্রোকও হয় তার।
পরে ৭ জানুয়ারি বিএনপির এ নেতার হার্টে স্থায়ী পেসমেকার বসানো হয়। তাকে ১ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেয়া হয়।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মওদুদকে গত ৯ মার্চ মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়।
তার স্ত্রী হাসনা মওদুদ পল্লী কবি জসিমউদ্দিনের মেয়ে। তার কন্যা সন্তান রয়েছেন। তার দুই ছেলে মারা গেছেন।
১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান গঠিত বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন মওদুদ আহমদ। ১৯৮৫ সালে তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন এবং সামরিক শাসক এইচএম এরশাদের সরকারের প্রধানমন্ত্রী এবং উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরশাদের সরকারের পতনের পরে মওদুদ ১৯৯৬ সালে আবার বিএনপিতে যোগ দেন এবং ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার সরকারের আইনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি নোয়াখালী-৫ আসন থেকে পাঁচবার এবং বগুড়া-৬ আসন থেকে একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। মওদুদের মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার শোক পালন করেছে তার দল বিএনপি।
আরও পড়ুন: মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক