শনিবার দুপুরে সরকারি বাসভবনে টেলিভিশন শিল্পী-কলাকুশলীদের বিভিন্ন সংগঠনের জোট ‘ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন (এফটিপিও)’-এর নেতাদের সাথে বৈঠকের পর তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নজিরবিহীনভাবে একজন শাস্তিপ্রাপ্ত আসামি (খালেদা জিয়া) যিনি ১০ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তাও এতিমের টাকা আত্মসাতের কারণে দুর্নীতির দায়ে, তাকে নজিরবিহীনভাবে দণ্ডবিধির ৪০১ ধারার ক্ষমতাবলে মুক্তি দিয়েছেন। ছয় মাসের জন্য প্রাথমিকভাবে মুক্তি দেয়া হয়েছে, পরে আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ প্রথম সিআরপিসির (দণ্ডবিধি) ৪০১ ধারায় যে প্রদত্ত ক্ষমতা সেটা প্রধানমন্ত্রী প্রয়োগ করেছেন। এতে বিএনপির ধন্যবাদ জানানো প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে বিএনপি ধন্যবাদ জানানোর সংস্কৃতিটা লালন করে না। এ জন্য তারা ধন্যবাদ জানাতে ব্যর্থ হয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির কাছে আমার প্রশ্ন- এ পরিস্থিতি যদি উল্টোভাবে ভাবি, বেগম খালেদা যদি প্রধানমন্ত্রী থাকতেন, তিনি কি শেখ হাসিনার জন্য এ ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন? আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি করতেন না। যিনি ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডকে উপহাস করার জন্য, হত্যাকারীদের উৎসাহিত করার জন্য নিজের জন্মের তারিখটাই বদলে দিয়ে ১৫ আগস্ট কেক কাটেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী যার দরজায় গিয়ে ১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পরও দরজা খোলেননি, যার জ্ঞাতসারে তার ছেলে ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড হামলা চালায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমস্ত কিছু ভুলে তাকে এ মহানুভবতা দেখিয়েছেন, এটি নজিরবিহীন।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা দেখেছি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নামে বিএনপি যেভাবে ভোট বানচাল করার চেষ্টা করেছে, ৫০০ ভোটকেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছে, শত শত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, এমনকি পোলিং অফিসারকে হত্যা করেছে, এ যদি তাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নমুনা হয়, প্রকৃতপক্ষে বিএনপি হচ্ছে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।’
টিআরপি নির্ধারণে কমিটি
এফটিপিও নেতাদের সাথে বৈঠকের বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘টিআরপি ব্যবস্থাকে নিয়ম নীতির মধ্যে আনতে নিয়ে তিন মাস আগ থেকে তথ্য মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে। আমরা একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। এ কমিটি সুপারিশ করবে কীভাবে বিজ্ঞান সম্মতভাবে এবং অন্যান্য দেশে যেভাবে টিআরপি নির্ধারণ করা হয়, সেই পদ্ধতিতে আমাদের দেশে কীভাবে টিআরপি নির্ধারণ করা যায়।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শিল্পীদের জন্য শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আছে, সেই কল্যাণ ট্রাস্ট সবার জন্য। টেলিভিশন, মঞ্চ, যাত্রার জন্য তো আলাদা আলাদা শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট করা যাবে না। শিল্পীদের জন্য একটি শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আছে। সেটি পরিচালনার দায়িত্ব সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী চলচ্চিত্র শিল্পীদের জন্য চলচ্চিত্র শিল্পী ট্রাস্ট গঠন করেছেন। এ দুই ট্রাস্ট থেকে টেলিভিশন শিল্পীরাও কীভাবে সহায়তা পায় সেটা নিয়েও আমরা কাজ করছি।’
এফটিপিও আহ্বায়ক নাট্যকার মামুনুর রশীদের নেতৃত্বে সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে সালাহউদ্দীন লাভলু, নাসিম, এজাজ মুন্না, এসএ হক অলীক, সাজু খাদেম, ইরেশ যাকের, গাজী রাকায়েত এবং আনজাম মাসুদ বৈঠকে অংশ নেন।