দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করে সংসদ ও সরকার গঠনে নাগরিক দায়িত্ব পালনে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে শনিবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে এই আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যাতায়াতের সুবিধার্থে মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, ট্যাক্সিক্যাব, ট্রাক ব্যতীত অন্য সব যানবাহন উন্মুক্ত থাকবে।
কোনো রকম বাধার সম্মুখীন হলে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারকে জানানোর অনুরোধ করেন সিইসি।
তিনি বলেন, প্রিসাইডিং অফিসার যে কোনো মূল্যে যে কোনো অপচেষ্টা প্রতিহত করে ভোটারের ভোটাধিকার প্রয়োগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আইনগতভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ও বাধ্য। প্রিজাইডিং অফিসারকে সহায়তা করতে পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট নিকটেই অবস্থান করবেন।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সফল ও ফলপ্রসূ করতে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সব রাজনৈতিক দল ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীসহ জনগণের আন্তরিক অংশগ্রহণ ও সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করেন সিইসি।
আরও পড়ুন: রবিবারের নির্বাচন দেশে-বিদেশে বিশ্বাসযোগ্য হবে: সিইসি
তিনি বলেন, ২২ মাস আগে আমরা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব গ্রহণ করে নির্বাচনে অনাগ্রহী নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে সংলাপে একাধিকবার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমন্ত্রণে তারা সাড়া দেননি। এরপর নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছি।
সিইসি বলেন, নির্ধারিত সময়ে ও নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংসদের সাধারণ নির্বাচন আয়োজনে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাও রয়েছে।
তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়ায় সবার সমন্বিত সহযোগিতার মাধ্যমেই কেবল নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়ে থাকে। নির্বাচনের প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতিগত প্রশ্নে মত-বিরোধের কারণে এবারের নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত সেরকম রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে হবে: সিইসি
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, এবারের নির্বাচনে ২৮টি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। সর্বমোট ১৯৭১ জন প্রার্থী ২৯৯ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফলে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ও অংশগ্রহণমূলক নয় মর্মে আখ্যায়িত করা যাবে না।
সিইসি বলেন, দেশে মোট ভোটার প্রায় ১২ কোটি। সারাদেশের ৪২ হাজার ভোটকেন্দ্রের ২ লাখ ৬২ হাজার বুথে ভোট গ্রহণ করা হবে। ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন ৮ লাখ সরকারি কর্মচারী।
এছাড়া প্রায় ৩ হাজার নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৮ লাখের বেশি সদস্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণে প্রায় ২৩ হাজার দেশি এবং প্রায় ২০০ বিদেশি পর্যবেক্ষক কাজ করবেন। পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক দেশি ও বিদেশি সংবাদকর্মীও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ এবং চিত্র ও তথ্য সংগ্রহে মাঠে কাজ থাকবেন।
আরও পড়ুন: ভোট দিতে কোনো চাপ নেই, তবে 'একটি দলের' লিফলেটে না দিতে বলা হয়েছে: সিইসিকে উদ্ধৃত করে পররাষ্ট্র সচিব