বিএনপির প্রয়াত নেতার ব্যক্তিগত সহকারী মমিনুর রহমান সুজন বলেন, ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর থেকে স্যারের (মওদুদের) দেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রক্রিয়া এবং আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে।’
তিনি জানান, মওদুদের মরদেহ বহনকারী বিমানের ফ্লাইটটি বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে সিঙ্গাপুর ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
সুজন বলেন, এয়ারপোর্টে মরদেহ পৌঁছার পর এটি ইউনাইটেড হাসপাতালের মর্গে নেয়া হবে।
তিনি জানান, মওদুদের প্রথম নামাজে জানাজা হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে শুক্রবার সকাল ১০টায় এবং দ্বিতীয়টি বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হবে।
সুজন বলেন, প্রাক্তন ছয়বারের সংসদ সদস্যের আরেকটি জানাজা স্পিকারের অনুমতি সাপেক্ষে সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হতে পারে।
পরে মওদুদের মরদেহ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার তার গ্রামের বাড়িতে নেয়া হবে।
আছরের নামাজ শেষে বাশুরহাট সরকারি মুজিব কলেজে চূড়ান্ত জানাজার পরে তাকে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
বৃহস্পতিবার শোক পালন করবে বিএনপি
এদিকে সিনিয়র নেতা মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার শোক পালন করবে বিএনপি।
বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, তাদের দল সারা দেশের দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন করবে এবং শোক দিবসে তাদের দলের পতাকা অর্ধনমিত রাখবে।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ (৮১) মঙ্গলবার সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তিনি মারা যান বলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইউএনবিকে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ আর নেই
বিএনপি নেতার কিডনিতে মারাত্মক জটিলতা এবং ফুসফুসে অক্সিজেন গ্রহণক্ষমতা কমে গিয়েছিল।
গত ৩০ ডিসেম্বর, রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিএনপি নেতাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃদু স্ট্রোকও হয় তার।
পরে ৭ জানুয়ারি বিএনপির এ নেতার হার্টে স্থায়ী পেসমেকার বসানো হয়। তাকে ১ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেয়া হয়।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মওদুদকে গত ৯ মার্চ মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়।
তার স্ত্রী হাসনা মওদুদ পল্লী কবি জসিমউদ্দিনের মেয়ে। তার কন্যা সন্তান রয়েছেন। তার দুই ছেলে মারা গিয়েছেন।
১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান গঠিত বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন মওদুদ আহমদ।১৯৮৫ সালে তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন এবং সামরিক শাসক এইচএম এরশাদের সরকারের প্রধানমন্ত্রী এবং উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরশাদের সরকারের পতনের পরে মওদুদ ১৯৯৬ সালে আবার বিএনপিতে যোগ দেন এবং ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার সরকারের আইনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি নোয়াখালী-৫ আসন থেকে পাঁচবার এবং বগুড়া-৬ আসন থেকে একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক