তিনি বলেন, ‘সরকার গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়াচ্ছে। সরকারের সবাই লুটেরা। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা লুট হচ্ছে।’
বিকালে সিলেট রেজিস্ট্রারি মাঠে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল এসব কথা বলেন।
অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের বিষয়ে তিনি বলেন, সারাদেশে এখন ঘরে ঘরে ক্যাসিনো।
এই সরকার বৈধ নয় দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত ২৯ ডিসেম্বর রাতে দলীয় লোক ছাড়াই বিভিন্ন বাহিনী দিয়ে ভোট কারচুপির মাধ্যমে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে। এজন্য বর্তমান সংসদ কোনো কাজ করছে না। দেশে ভয়াবহ নৈরাজ্য চলছে বিচার ব্যবস্থায়। প্রশাসনকে দলীয়করণ করা হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করতে হবে এটাই সরকারের মূল চাওয়া। তাদের প্রতিপক্ষ হচ্ছে জনগণ।’
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা দুই বছরের বেশি সময় ধরে এদেশে আছে। একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠাতে পারেনি সরকার।
সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক আতাউল গণি ওসমানী, প্রয়াত বিএনপি নেতা সাইফুর রহমান ও নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকে স্মরণ করতে গিয়ে ইলিয়াস আলী প্রসঙ্গে মির্জা ফকরুল বলেন, দীর্ঘ ৬ বছর ধরে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই আমি তাকে স্মরণ করতে চাচ্ছি। এরকম শতশত পরিবার তাদের স্বজনকে হারানোর জন্য ব্যথিত। তাদের পরিবার পরিজনের সাথে দেখা হলে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা থাকে না।
এসময় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান ফখরুল।
খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের অংশ হিসেবে সিলেটের এই সমাবেশ উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এখন বিচারালয় সরকারের নির্দেশে চলে। যে মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছে তাতে তার সম্পৃক্ততা নেই। শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে ভয় পান বলেই তাকে আটক করে রেখেছেন।’
বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে না। তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারবেন না। তাই আগে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে। পরে খালেদা জিয়ার মুক্তি আর দেশে ফিরবেন তারেক রহমান।’
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আদালতের ওপর রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাচ্ছে না। রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করতে হবে।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়াপার্সনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদির লুনা, খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, যুবনেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।
এর আগে বেলা আড়াইটার দিকে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীমের সভাপতিত্বে শুরু হয় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ। দুপুর ১টা থেকেই বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে আসা শুরু করেন। সমাবেশ পরিচালনা করেন সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ ও সিলেট মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী।