মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
নির্বাচনের ঘোষণা গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করবে: বিএনপি মহাসচিব
আগামী বছরের ফ্রেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা বাংলাদেশের গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানায় বিএনপি। প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনের ঘোষণা গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের পর নির্বাচনের সময় ২০২৬ এর ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারণের ঘোষণাকে স্বাগত জানাচ্ছে বিএনপি। এই ঐতিহাসিক ঘোষণা গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করবে। এই ঘোষণাপত্রে রাজনৈতিক দলগুলো যে অঙ্গীকার করেছে, তা পালনের মধ্যদিয়ে এক নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে রূপান্তরের কাজ শুরু হবে।’
সরকার ও নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও সর্বজনগ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে জুলাই ঘোষণাপত্র অনুষ্ঠানে অংশ নেবে বিএনপি
একটি কার্যকর জাতীয় সংসদ গঠনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে সবাইকে এই নির্বাচন সফল করতে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, বিগত এক বছরে অনেক প্রতিকূলতা সত্তেও গণতন্ত্রের পথকে সুগম করার উদ্যোগের ও প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ড. ইউনূস, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট সব সদস্য যারা এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের আন্তকিরক ধন্যবাদ জানাচ্ছে বিএনপি এবং প্রত্যাশা করছে অতি দ্রুত রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কারের বাকি কাজগুলো সম্পন্ন হবে।
অধ্যাপক ইউনূস মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা দিয়েছেন উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি এই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানায়। বিএনপি বিশ্বাস করে ঘোষণাপত্রে রাজনৈতিক দলগুলো যে অঙ্গীকার করেছে, তা পালনের মধ্য দিয়ে এক নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে রূপান্তরের কাজ শুরু হবে। এর মাধ্যমে একটি সাম্য, মানবিক মূল্যবোধ ও ন্যায় বিচারের ভিত্তিতে সত্যিকারের প্রগতিশীল সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
এ সময় নিহত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন ও আহতদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি সরকাররে প্রতি আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল তারেক রহমানকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, তিনি দীর্ঘ আট বছর গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে এই সাফল্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দল, ছাত্র, কৃষক, শ্রমিকসহ সব স্তরের মানুষ এই সংগ্রামে অংশ নিয়েছে। তাদের অনেকে শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছে, পঙ্গু হয়েছেন। বিএনপি তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছে।
১২০ দিন আগে
মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে জুলাই ঘোষণাপত্র অনুষ্ঠানে অংশ নেবে বিএনপি
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠের অনুষ্ঠানে অংশ নেবে বিএনপির পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) ঘোষণাপত্র পাঠের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে সরকার।
বিএনপির মিডিয়া সেল সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন—বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান এবং সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি আরও জানান, সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শায়রুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিএনপি নেতাদের কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি না করে একসঙ্গে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আহ্বান ফখরুলের
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিনকেও কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
আজ বিকাল ৫টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
১২১ দিন আগে
ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে আর রাজনীতি করতে দেওয়া যাবে না: ফখরুল
‘ফ্যাসিস্ট ও অপসারিত প্রধানমন্ত্রী’ শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে জায়গা না দিতে সব শ্রেণিপেশার মানুষকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আজকের এই সমাবেশ থেকে আমাদের শপথ নিতে হবে—আর কখনও এই ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে আমরা দেশের রাজনীতিতে জায়গা দিতে দেব না। আমরা আরও শপথ করব, কারও কাছে মাথানত করব না। নিজেদের শক্তিতে আমরা একটি আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ব।’
রবিবার (৩ আগস্ট) জুলাই-আগস্ট মাসব্যাপী গণঅভ্যুত্থানের বার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির ছাত্রসংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের শাহবাগের সমাবেশে তিনি এমন মন্তব্য করেন। ছাত্রসমাজ ও ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, সরকার দেশে বিভাজন ও অস্থিরতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘শেখ হাসিনা ও তার মিত্ররা, যারা এখন প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, তারা বাংলাদেশকে হুমকি দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, তারা নানাভাবে দেশের ভেতরেও অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছেন।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘দেশের ভবিষ্যতের দায়িত্ব নিতে হলে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা ও বৈজ্ঞানিক চিন্তা গড়ে তুলতে হবে। প্রজ্ঞা ছাড়া আমরা এগোতে পারব না। দেশের ভবিষ্যৎ গড়তে হলে শিক্ষা ও বিজ্ঞানের পথে হাঁটতে হবে।’
গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় বিএনপির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার পথে রয়েছি।’
ফখরুল জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন—আগামী সাধারণ নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ সেই নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে। তার আগেই তারা তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের প্রতীক্ষায় আছে।’
পড়ুন: এনসিপি: ‘মেরুদণ্ডহীন’ ইসি, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় না ফিরলে নির্বাচন বয়কট
ফখরুল বলেন, বিএনপির লক্ষ্য হলো শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বপ্ন পূরণ করা। ‘তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ব।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘শত শত ছাত্র, সাধারণ মানুষ ও শ্রমিক ন্যায়ভিত্তিক, বাসযোগ্য ও সুশাসনসম্পন্ন একটি দেশ গড়ার আশায় জীবন দিয়েছেন।’
বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মধ্যেও ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে বিএনপি ৩১টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি নতুন সূর্য উদিত হয়েছে, যা বাংলাদেশের জন্য নতুন আশা ও শুরু এনেছে। আমাদের ছাত্র ভাইয়েরা বিশাল ত্যাগ স্বীকার করেছে—দেশজুড়ে গ্রেপ্তার, নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আজকের এই সমাবেশ, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত আমাদের ঐক্য ও শক্তির বহিঃপ্রকাশ। আমরা এই মুহূর্ত উদযাপন করছি, একইসঙ্গে আমরা স্মরণ করছি সেই ভাইদের, যারা এক বছর আগে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।’
১২৩ দিন আগে
বিষাক্ত রাজনীতি এড়াতে দলগুলোর পারস্পরিক বোঝাপড়ার আহ্বান ফখরুলের
একে অন্যকে দোষারোপ করার সংস্কৃতি বাদ ও তিক্ততা এড়াতে রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক বোঝাপড়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া থাকা উচিত। এখন আমরা আমরা কেবল একে অন্যকে দোষারোপ করার সংস্কৃতি দেখতে পাচ্ছি। গণতন্ত্রে কিছু দোষারোপ চলতেই পারে, কিছু কঠোর কথাবার্তাও হয়—কিন্তু এরও একটা সীমা থাকা দরকার। সীমা না মানলে তিক্ততা তৈরি হয়—যার ফলে ধীরে ধীরে রাজনীতির পরিবেশ আরও কলুষিত হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, দেশ এখন একটি সংকটময় সময় পার করছে। এ সময়ে সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি হওয়া জরুরি। যদি আমরা সবাই মিলে, বোঝাপড়ার ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে পারি, তাহলে তার উপকার পাবে দেশের মানুষ। তারা তাদের প্রতিনিধি ও একটি সঠিক সরকার পাবে। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সব সমস্যা মিটে যাবে, তা না। কিন্তু একটা রাস্তা তৈরি হবে, যে রাস্তার মধ্যদিয়ে আমাদের এবং জনগণের কথাগুলো সেই সরকারের কাছে পৌঁছাতে পারবে।
এরমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলো ১২টি মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাকি বিষয়গুলোতে ঐক্য তৈরির কাজ চলছে। প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা করে বৈঠক হচ্ছে। অনেকগুলো বিষয় আছে, যেগুলো আমরাও ঠিক বুঝি না, তারা করতে চান।
পড়ুন: নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই হবে, একদিনও দেরি হবে না: শফিকুল আলম
বিএনপি মহাসচিব জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে জটিল বিষয়গুলো বাদ দিয়ে মূল অমীমাংসিত বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দিতে বলেন। এগুলোকে বাদ দিয়ে যে মৌলিক বিষয়গুলো আছে, সেই বিষয়গুলো সমাধান করে আমার মনে হয়, অতিদ্রুত লন্ডনের বৈঠক অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্য নির্বাচনটা হওয়া দরকার।
তিনি বলেন, ‘যদি এটা সম্ভব হয়, তাহলে আমি বিশ্বাস করি, আমাদের অনেক সংশয় ও বিভ্রান্তি দূর হবে এবং আমরা একটি সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে এগোতে পারব।’
ফখরুল হতাশা প্রকাশ করে বলেন, অর্ন্তবর্তী সরকার এখন পর্যন্ত গণঅভ্যুত্থানের সময় নিহত ও আহতদের পরিবারকে সহায়তা কিংবা পুনর্বাসনের জন্য কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
তিনি বলেন, ‘আজ যখন এক বোনের কথা শুনছিলাম, (যিনি তার স্বামীকে হারিয়েছেন) তখন মনে হলো—রাষ্ট্র বলতে আমরা কী বুঝি? রাষ্ট্র কার জন্য? যারা রাষ্ট্র চালাচ্ছেন, তারা কি একটি বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও এই মানুষগুলোকে খুঁজে পাননি? একটা সঠিক তালিকা তৈরি করে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে পারেননি?’
আলোচনার এক পর্যায়ে গণঅভ্যুত্থানে আহত এক শিশুর প্রসঙ্গ টেনে আবেগপ্রবণ হন তিনি, ‘গতকাল (বুধবার) এক ছোট ছেলে—হয়তো ছয়-সাত বছরের—আমার কাছে এসে হঠাৎ জড়িয়ে ধরল। বলল, ‘আমার মাথা নাই।’ মানে, তার মাথায় গুলি লেগেছিল, পরে ডাক্তাররা অপারেশন করে একটা প্লাস্টিকের কৃত্রিম খুলি বসিয়েছেন। এর চেয়ে বড় ত্যাগ আর কী হতে পারে?’
তিনি বলেন, ‘যদি আমরা এই ত্যাগকে যথাযথভাবে সম্মান না জানাতে পারি—যদি এই শিশুদের, এই বোনদের, এই মায়েদের প্রতি সুবিচার না করি—তাহলে নিঃসন্দেহে আমরা জাতির সঙ্গে এক ভয়াবহ বিশ্বাসঘাতকতা করব।’
তবে বিএনপি নেতা আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমরা এখনো একটি সুন্দর ও উন্নত বাংলাদেশের দিকে এগোতে পারব।’
১২৬ দিন আগে
জনগণের জীবনমান উন্নয়নে রাষ্ট্র সংস্কারের আহ্বান ফখরুলের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাষ্ট্রে সংস্কার ও কাঠামোগত পরিবর্তনের লক্ষ্য হওয়া উচিত জনজীবনে প্রকৃত উন্নয়ন, বিশেষ করে শিশুদের জন্য।
তিনি বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্র কাঠামোর পরিবর্তন চাই, আমরা সংস্কার চাই। কিন্তু এই সংস্কার ও পরিবর্তন যদি আমাদের মানুষের সার্বিক উন্নয়নে সহায়তা না করে, যদি আমাদের শিশুদের জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যৎ বা নিরাপদ জীবন নিশ্চিত না করে—তাহলে আমি মনে করি, এই সংস্কারের কোনো মূল্য থাকবে না।’
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বনানীর কামাল আতাতুর্ক মাঠে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এবং ‘মায়ের ডাক’-এর যৌথ আয়োজনে ‘গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় শিশু’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এই অনুষ্ঠানে গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার এবং জুলাই গণ-আন্দোলনে নিহত শিশুদের স্মরণ করা হয়।
তিনি গভীর হতাশা প্রকাশ করে বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে প্রিয়জন হারানো পরিবারগুলোকে সহায়তায় রাষ্ট্র খুব কম কিংবা কোনো পদক্ষেপই নেয়নি।
বিএনপি মহাসচিব আশা প্রকাশ করে বলেন, গুমের শিকার ও গণআন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত শিশু ও পরিবারগুলোর পুনর্বাসনে সরকার জরুরি ও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, আমাদের এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার—যদিও বিলম্বিতভাবে—তাদের পুনর্বাসনকে অগ্রাধিকার দেবে, যেসব পরিবার, তাদের পিতা, আত্মীয় বা ভাইদের খুঁজে বেড়িয়ে কষ্ট ও যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন: ভাড়াটে লোক দিয়ে দেশ চালানো যাবে না: ফখরুল
গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের কার্যকারিতা নিয়েও সমালোচনা করেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘একটি তদন্ত কমিশন গঠিত হলেও তারা কেবল একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। আমি মনে করি না তারা খুব বেশি অগ্রগতি করেছে—না নিখোঁজদের খোঁজে, না ঘটনার সত্য উদঘাটনে।’
বিএনপি নেতা বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গুম বা হত্যার শিকার পরিবারগুলো—এমনকি শিশুদেরও—মানুষের হারানো অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দীর্ঘ লড়াইয়ে বিপুল ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গত বছর ৫ আগস্ট দেশে যে পরিবর্তন ঘটেছিল, তাতে অনেকে ক্ষমতার চূড়ায় পৌঁছেছেন—কেউ হয়েছেন মন্ত্রী, কেউ শীর্ষ কর্মকর্তা, কেউ গড়ে তুলেছেন বিশাল ব্যবসা। কিন্তু আমাদের শিশুদের জন্য আমরা সেইভাবে এগোতে পারিনি।’
ফখরুল বলেন, তারা আশা করেছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন হলেও বর্তমান সরকার গুমের শিকার শিশু ও পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের জন্য একটি বিশেষ সেল গঠন করবে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, তা হয়নি।’
তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এলে গুম ও সহিংসতার শিকার শিশু ও পরিবারগুলোর পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তার বক্তব্যের শেষদিকে ফখরুল এক আবেগঘন আহ্বান জানান, ‘চলুন আমরা সবাই মিলে এগিয়ে আসি এবং এই শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য পরিবেশ গড়ে তুলি—সেই শিশুটি যে এখনও একটি প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে আছে, তার বাবার ফিরে আসার অপেক্ষায়। আমরা জানি না, সেই বাবা বেঁচে আছেন কি না, তাকে ফিরিয়ে আনতে পারব কি না—কিন্তু অন্তত আমরা তার একটি সুন্দর জীবন ও আশাব্যঞ্জক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারি। এই ঋণ কখনোই শোধ করা সম্ভব নয়।’
১২৮ দিন আগে
ভাড়াটে লোক দিয়ে দেশ চালানো যাবে না: ফখরুল
জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিই সংস্কারের পূর্বশর্ত উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশ ও বিদেশ থেকে ভাড়াটে লোক এনে দেশ পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘দেশ-বিদেশ থেকে কিছু লোক ভাড়া করে কি একটা দেশ চালানো যায়? না, যায় না। এটিই সহজ সত্য, আমাদের তা বুঝতে হবে।’
শনিবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জুলাই অভ্যুত্থান: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। জিয়া পরিষদের আয়োজনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত বছরের অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচিটি পালন করা হয়, যা শেখ হাসিনার ‘ফ্যাসিবাদী শাসনের’ পতনের সূচনা বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ ভাবছেন, কয়েকটি বৈঠক করলেই সংস্কার হয়ে যাবে। এটা ঠিক নয়। সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, তা একদিনে হয় না।’
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সরকার যদি মনে করে আগামীকাল থেকে পুলিশ ঘুষ খাওয়া বন্ধ করে দেবে, তাহলে তা হবে না। তাকে এমন একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে, যেখানে ঘুষ খাওয়ার প্রবণতা নিরুৎসাহিত করা হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান আমলাতন্ত্র দেশের উন্নয়নের পথে প্রধান প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি নেতিবাচক একটি আমলাতন্ত্রে পরিণত হয়েছে। এটি পরিবর্তন করে ইতিবাচক আমলাতন্ত্রে রূপান্তর করতে হবে। আর তা করতে হলে জনগণকে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত জনগণের কাছে ফেরা, তাদের চাহিদা জানা এবং সেই চাহিদার ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করা।’
পড়ুন: নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়: ফখরুল
নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দাবিকে কেন্দ্র করে সমালোচনার জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলা শুরু করলেই বলা হচ্ছে বিএনপি শুধু ভোট চায়। কিন্তু কেউ কি ভেবে দেখেছে, আমরা কেন নির্বাচন চাই?’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমেই প্রকৃত জন-প্রতিনিধি নির্বাচিত করা সম্ভব। আর যদি প্রতিনিধি না থাকে, তাহলে তারা সংসদে যাবে কীভাবে? আর যদি নির্বাচিত সংসদ না থাকে, তাহলে জনগণের শাসন কিভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে?’
আংশিক প্রতিনিধিত্বমূলক (পিআর) নির্বাচনী পদ্ধতি নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘এই পদ্ধতির সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা এই পদ্ধতির পক্ষে জোরালো সুরে কথা বলছে। কিন্তু পিআর নির্বাচন কী—সাধারণ মানুষ তা বোঝে না।’
তিনি বলেন, ‘দেশে এই পদ্ধতি নিয়ে একধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষ যে পদ্ধতিতে অভ্যস্ত, সেটি হলো—রাজনৈতিক দল প্রার্থী মনোনয়ন দেবে, প্রতীক হবে ধানের শীষ, পাল্লা, হাতপাখা ইত্যাদি; আর ভোটাররা গিয়ে ভোট দেবে। এখন হঠাৎ করে বলা হচ্ছে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে।’
পিআর পদ্ধতির ব্যাখ্যায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই পদ্ধতিতে জনগণ ব্যক্তিকে নয়, দলকে ভোট দেয়। এরপর দল যাকে ইচ্ছা তাকে সংসদ সদস্য মনোনয়ন দেয়। ফলে জনগণের পছন্দের, নিজেদের এলাকার কোনো নেতাকে তারা আর সংসদে পাঠাতে পারবে না।’
পড়ুন: পুরোনো আইনে বাংলাদেশকে আর চলতে দেবো না: নাহিদ ইসলাম
এই কারণেই বিএনপি জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনকে সমর্থন করে না বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এক গভীর সংকটে রয়েছে। আমরা অপেক্ষা করছি, কখন গণতন্ত্রের পথে ফিরব। দেশ বর্তমানে রাজনৈতিক শূন্যতা এবং ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। আমাদের এখান থেকে বেরিয়ে একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যা জনগণের কল্যাণে কাজ করবে।’
আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিবাদী শক্তি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘তারা যে ক্ষতি করেছে তা পূরণ করা সহজ হবে না। তারা বিচার বিভাগ, প্রশাসন, স্বাস্থ্য খাত, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোকেও ধ্বংস করেছে।’
বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কিছু পত্রিকায় যেসব অপকর্মের খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি জিয়াউর রহমানের গড়া দল। এই দলের নেতৃত্ব ও কর্মীদের সততাই প্রধান ভিত্তি। সততা ছাড়া বিএনপি জনগণের সামনে দাঁড়াতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘আজকাল পত্রপত্রিকায় যেসব খবর ছাপা হচ্ছে, সেগুলো বিএনপির আদর্শ বা জিয়াউর রহমানের মূল্যবোধের সঙ্গে মেলে না। তাই যারা বিএনপির রাজনীতি করছেন, তাদের জিয়াউর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে এবং অবশ্যই সৎ হতে হবে।’
১৩১ দিন আগে
রাজনীতিতে সমস্যা থাকবে, তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই: ফখরুল
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্যের কারণে হতাশ হওয়ার কোনো যুক্তি নেই বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাদের দল বহুত্ববাদকে ধারণ করে একটি রেইনবো স্টেট গঠনের স্বপ্ন দেখে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রবিবার (২০ জুলাই) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়া উদ্যানে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, এখানে একজন শহীদের পিতা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেছেন যে, আমরা আশা করেছিলাম গণঅভ্যুত্থানের পরে অতিদ্রুত রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত হবে, রাজনৈতিক কাঠামো তৈরি হবে, আমরা একটা নতুন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারব।
‘বিষয়টা হচ্ছে যে, রাজনীতিটা অত সহজ পথ নয়, গোলাপের পাপড়ি ছড়ানো থাকে না, এখানেও সমস্যা থাকবে, সেটাই রাজনীতি। কিন্তু এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।’
রাজনীতিতে বিএনপির অবস্থান নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, ভিন্নমত থাকবে, বহুমাত্রিক পথ থাকবে, কেউ গণতন্ত্রের বিশ্বাস করবে, কেউ সমাজতন্ত্রের বিশ্বাস করবে, কেউ আপনার ওয়েলফেয়ার স্টেটে বিশ্বাস করবে। সবগুলোকে মিলিয়ে সেই রকম একটা রাষ্ট্র নির্মাণ করা হবে, অনেক আগেই আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ‘
রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে বিএনপির দেওয়া অতীতের ৩১ দফা সংস্কার নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১দফা দিয়েছেন, সেই দফার মধ্যে আজকে যে সংস্কারের প্রশ্নটা উঠেছে, সংস্কারের যে প্রস্তাবগুলো আসছে তার প্রত্যেকটি প্রস্তাব আমরা ২০২২ সালে দিয়েছি।’
জুলাই আন্দোলন পরবর্তী সময়ে দেশের রাজনীতি নিয়ে যে সংকট প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে ‘হতাশ হওয়ার কিছু নেই বলেও জানান বিএনপির এই নেতা। উদ্ভূত সমস্ত সংকট এড়াতে অন্তর্বতীকালীন সরকার ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের তারিখ দেবে বলেও প্রত্যাশা রেখেছেন তিনি।
জুলাই আন্দোলনে শহিদের সংখ্যা নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি সেই বিষয়গুলো নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করতে চাই না। আমার কতজন শহীদ হয়েছেন, আমার কতজন নিহত হয়েছেন, আমরা কত ত্যাগ স্বীকার করেছি, কারা কী কাজ করেছি এই বিতর্কে আমি যেতে চাই না।
‘কারণ ওটা আমার কাছে মনে হয় স্বার্থপরতার একটা ব্যাপার আছে। আমার দায়িত্ব হচ্ছে এই জাতিকে আমাকে উপরে তুলতে হবে।যে প্রাণগুলো গেছে, যারা জীবন দিয়েছে তারা কিন্তু জীবন দিয়েছে ঘোষণা করেই দিয়েছে যে, আমরা ফ্যাসিস্টকে সরাবো, জাতিকে একটা স্বাধীন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই।’
সত্যিকার অর্থে একটি উদারপন্থি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে বিএনপি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমরা মানুষ যেন সুস্থভাবে স্বাধীনভাবে কমফোর্টেবল ওয়েতে স্বস্তির সঙ্গে যেন চলাফেরা করতে পারে সেই ধরণের একটা রাষ্ট্র চাই।
মির্জা ফখরুল আশা করেন, সরকার ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দেওয়ার বিষয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা তারা রক্ষা করবে।
‘সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা জনগণের একটা সরকার তৈরি করতে পারব। যে সরকার আমার এই শহিদদের মূল্যায়ন করবেন, তাদের মর্যাদা দেবেন, একই সঙ্গে যেজন্য সংগ্রাম করেছেন বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবার সবরকম ব্যবস্থা গ্রহন করবে।’
এ সময়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলসহ চার শহিদের স্বজনরা বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল একেএম শামসুল ইসলাম শামস, বাদলুর রহমান বাদল, সাইফ আলী খান, মোকছেদুল মোমিন মিথুন, জাহিদুল ইসলাম রনি, শফিকুল হক সাজু ও হাসনাইন নাহিয়ান সজীবসহ কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: হাসিনা কখনোই ক্ষমা পাবে না: মির্জা ফখরুল
১৩৭ দিন আগে
দিন যত যাচ্ছে, পরিস্থিতি তত জটিল হচ্ছে: ফখরুল
অযথা বিলম্ব না করে অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে, দিন যত যাচ্ছে, পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাচ্ছে। এতে যারা গণতন্ত্র ও শোষণহীন সমাজে বিশ্বাস করে না; তারা ফের জোট পাকাচ্ছে।’
শনিবার (১৯ জুলাই) জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে এক আলোচনায় সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে এই মঞ্চ গঠন করেছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সরকারকে আহ্বান করব, অযথা বিলম্ব না করে সমস্যা চিহ্নিত করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলুন। এরপর সমস্যা শেষ করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যান। সেটিই বোধহয় একমাত্র পথ।’
৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে নতুন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুযোগ পেয়েছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু মনে হচ্ছে, দিন যত যাচ্ছে, পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাচ্ছে। এতে যারা গণতন্ত্রে, জনগণের অগ্রাযাত্রায় ও একটি শোষণহীন সমাজব্যবস্থা গড়ে ওঠার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, তারা আবার জোট পাকাচ্ছে। যে ফ্যাসিস্ট শক্তিকে তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলাম, তারা ভেতরে ভেতরে আবার সংগঠিত হচ্ছে এবং ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার চক্রান্ত করে যাচ্ছে।’
দেশে মবতন্ত্র, হত্যা, ছিনতাই ও গুম ভয়াবহভাবে বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ করে এ সময় উদ্বেগ প্রকাশ করেন ফখরুল। বলেন, ‘যে সুযোগ আমাদের সামনে এসেছে, এটা যদি হারিয়ে ফেলি, তাহলে বাংলাদেশ আরও পিছিয়ে যাবে। প্রতিবার জনগণ ও আমাদের ছেলেরা প্রাণ দেবে, একটা সুযোগ তৈরি হবে, আর নিজেদের দায়িত্বহীনতার কারণে সেই সুযোগ হারাব—সেটা হতে পারে না।’
তাই দেরি না করে সংস্কার, জুলাই সনদ ও নির্বাচন—এই তিনটি বিষয় সামনে রেখে যত দ্রুত এগিয়ে যাওয়া যায়, দেশের জন্য ততই মঙ্গল হবে বলে উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব।
তার দাবি, ‘নিঃসন্দেহে সেই দায়িত্ব এই অন্তর্বর্তী সরকারের। তবে যত দেরি করছেন, ততই পরিস্থিতি ঘোলাটে হচ্ছে। এতে অভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যারা রয়েছে, তারা আবার সংঘটিত হয়ে গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে কাজ শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদের সেই লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে সক্ষম হবেন।’
‘বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল আখ্যায়িত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠন করতে চাই। অতীতে যেমন সব বাধা উপেক্ষা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছি, আগামী দিনগুলোতেও কোনো আমাদের বাধা ঠেকাতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ ও স্বাধীনতা হচ্ছে আমাদের মূল কথা। সেখানে আমাদের কোনো আপস নেই। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়ও আমাদের কোনো আপস নেই। আলোচনা, সহনশীলতা ও অন্যের মতকে মেনে নেওয়া—সবকিছু মিলিয়ে আমরা এমন একটি জায়গায় পৌঁছাতে পারব, যেখান আমরা নতুন করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় পৌঁছাতে পারি।’
এ সময়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের (জিওপি) সভাপতি নুরুল হক নুর, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
১৩৮ দিন আগে
তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে সরাতে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ফখরুলের
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, দেশীয় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস ও তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে সরাতে পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে একদল দুষ্টচক্র অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘একটি বিষয় আমাদের মনে রাখতে হবে—টার্গেট করে একটি অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে একটি নির্দিষ্ট ষড়যন্ত্র, যার লক্ষ্য বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করা এবং উদীয়মান ও সম্ভাবনাময় নেতা তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে সরানো ও হেয় করা।’
রবিবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। বিএনপিপন্থী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল সম্পাদিত ‘তারেক রহমান: বাংলাদেশ আশার নাম’ শীর্ষক গ্রন্থটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয় এ অনুষ্ঠানে।
ফখরুল বলেন, বিএনপি বর্তমানে একটি সুপরিকল্পিত, ভয়াবহ ও বিপজ্জনক সাইবার আক্রমণের মুখে পড়েছে, যা দলকে হেয় ও দুর্বল করার জন্য নানা দিক থেকে চালানো হচ্ছে।
‘সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো—প্রথমবারের মতো আমাদের নেতা তারেক রহমানকে নাম উল্লেখ করে সরাসরি টার্গেট করা হচ্ছে। তাকে নিয়ে অনেক কিছু ছড়ানো হচ্ছে, যাতে করে তার সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়। এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক,’ বলেন তিনি।
এ পরিস্থিতিতে তরুণ নেতাকর্মীদের সঠিকভাবে শিক্ষা ও রাজনৈতিক দীক্ষায় দীক্ষিত করার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তাদেরকে বিএনপির রাজনৈতিক আদর্শ গভীরভাবে জানতে হবে এবং তা ধারণ করতে হবে। তা না হলে, তারা রাজনীতিতে নিজেদের সঠিক অবস্থান খুঁজে পাবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে ব্যস্ত থাকায় আমাদের অনেক নেতাকর্মী এই সময়ের মধ্যে নিজেদের রাজনৈতিক জ্ঞান সমৃদ্ধ করতে পারেননি। না হলে আজ আমরা যেসব কথা শুনছি, সেগুলো শুনতে হতো না।’
আরও পড়ুন: আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার যুবদলের বিক্ষোভ
সাইবার জগতে জাতীয়তাবাদী তরুণদের আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে এবং আরও বেশি তরুণকে সম্পৃক্ত করে মেধাভিত্তিক রাজনৈতিক চর্চার আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো—আমাদের লোকেরা পড়তে চায় না। এই অভ্যাস বদলাতে হবে। আমাদের পড়তে হবে। যত বেশি পড়ব, তত বেশি জ্ঞান অর্জন করব, ততই শক্তিশালী হয়ে লড়তে পারব। আমাদের সব কিছু নিয়েই পড়তে হবে। জানতে হবে তারা কী বলছে, এবং কীভাবে জবাব দিতে হবে।’
তিনি বলেন, বুদ্ধিমত্তা ও মেধার ভিত্তিতে লড়াই ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। ‘মেধার কোনো বিকল্প নেই। সেই মেধা দিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তরুণ সাইবার যোদ্ধাদের মেধা দিয়ে সামনে এগিয়ে আসতে হবে।’
বিএনপি সমর্থিত সাইবার কর্মী ও ব্লগারদের অতীত আন্দোলন-সংগ্রামে অবদানের কথা স্মরণ করে ফখরুল বলেন, ‘আমি সবসময় তাদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব।’
তিনি বলেন, এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো মানুষের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে, পাশাপাশি প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমও তাদের জায়গায় শক্তিশালী। তবে বিএনপি এই সাইবার দুনিয়ায় দুর্বল, তা অকপটে স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমাদের অনলাইন উপস্থিতি আরও শক্তিশালী করতে হবে। এই দায়িত্ব তরুণদের নিতে হবে।’
‘তারেক রহমান: বাংলাদেশ আশার নাম’ বইটিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাজনৈতিক যাত্রা, দূরদর্শী নেতৃত্ব, ১/১১ সময়কার অভিজ্ঞতা, রাজনৈতিক সংগ্রাম ও রাষ্ট্র নির্মাণের স্বপ্নচিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রশংসা করে ফখরুল বলেন, ‘তিনি বিএনপিকে সঠিক পথে পরিচালনার প্রতীক, এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য এক আশার নাম।’
১৪৪ দিন আগে
বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে চীনা রাষ্ট্রদূত
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদল।
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির মিডিয়া সেল সদস্য শায়রুল কবির খান এমন তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি বিএনপি নেতাদের চীন সফরের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তাদের আন্তরিক আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে: সিলেটে মির্জা ফখরুল
সাক্ষাতে মির্জা ফখরুলের পাশাপাশি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী এবিএম আবদুস সাত্তার উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনার বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তবে দলীয় সূত্র জানায়, দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ জুন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আমন্ত্রণে বিএনপির নয় সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে পাঁচ দিনের সফরে চীন গিয়েছিল।
১৪৯ দিন আগে