রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘বহুল প্রতীক্ষিত এই মামলার রায় বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা আরও বাড়াবে। এই রায় জঙ্গিবাদী শক্তি এবং জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকদের প্রতি অশনিসংকেত। আর দেশের মানুষের ভবিষ্যৎ নিরাপদ ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা কায়েমে এ রায় ভূমিকা রাখবে।’
যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই ওই ক্যাফেতে সশস্ত্র জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২২ জনকে হত্যা করে। এ ঘটনায় সাত জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকে খালাস দেয়া হয়েছে।
সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, ‘দ্রুততার সাথে ফেনীর নুসরাত হত্যাকারীদের ফাঁসির রায় হয়েছে। বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার হত্যাকারী ছাত্রলীগ কর্মীদের আটক করা হয়েছে। তাদেরও বিচার হবে।’
এসময় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দল ভারি করার জন্য খারাপ লোকদের টানবেন না। সুবিধাবাদী, মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসীদের দলে কোনো দরকার নেই। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগে দুর্নীতিবাজদের ঠাঁই হবে না।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের পরিচালনায় সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা ঘর থেকেই শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। ঘরকে শাস্তি দিয়ে পরকে শেখাব- এটাই হচ্ছে শেখ হাসিনার নীতি।’
নতুন কমিটির বিষয়ে কাদের বলেন, নতুন কমিটি যেন পকেট কমিটি না হয়। আওয়ামী লীগ ত্যাগী, আদর্শবান কর্মীদের সংগঠন।
সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘অশুভ শক্তি বিএনপি-জামায়াতের তৎপরতা এখনো আছে। বিএনপি মহাসচিব কয়েকদিন আগে বলেছেন তারা সভা-সমাবেশের জন্য আর কারও কাছ থেকে অনুমতি চাইবেন না। আমি অবাক হয়ে গেলাম, যারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে, যারা আইনের শাসনের কথা বলে, তারা কী করে এমন কথা বলে?’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেব এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে প্রমাণ করেছেন বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। বিএনপি সন্ত্রাসী দল, সেটাই তিনি প্রমাণ করেছেন।’
রাজধানীর হাইকোর্টের সামনে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের বিষয়ে হানিফ বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) খালেদা জিয়ার মুক্তির নাম করে রাজপথে নেমে তারা গাড়ি ভাঙচুর করেছে। বিএনপি এই কর্মকাণ্ড দিয়ে আবার প্রমাণ করেছে তারা সন্ত্রাসী দল।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেত্রীর মুক্তি আন্দোলনের মাধ্যমে হবে না।’ আইনি প্রক্তিয়ার মাধ্যমে বেগম জিয়ার মুক্তির পথ খুঁজতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের পরামর্শ দেন তিনি।
‘আইনি প্রক্রিয়া বাদে রাজপথে নেমে যদি ভাঙচুর বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেন তবে স্মরণ রাখতে হবে, অতীতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দেশবাসীকে নিয়ে আপনাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা যেমন কঠোরভাবে দমন করেছে আগামীতেও যেকোনো সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ করতে নেতা-কর্মীরা প্রস্তুত আছে,’ যোগ করেন তিনি।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশ শেষে দ্বিতীয় অধিবেশনে ওবায়দুল কাদের শহিদুল ইসলাম মিলনকে সভাপতি ও শাহীন চাকলাদারকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা কমিটির কয়েক নেতার নাম ঘোষণা করেন।