তাদের মতে, বাতাস আরো পরিষ্কার করা গেলে সারাবিশ্বে মানুষের আয়ু উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।
এই প্রথমবারের মতো বায়ু দূষণের সাথে মানুষের আয়ু নিয়ে একসাথে গবেষণা করা হয়েছে যাতে পৃথিবীতে বায়ুদূষণ মানুষের সামগ্রিক গড় আয়ুকে কিভাবে প্রভাবিত করে তা পর্যবেক্ষণ করা হয়।
ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস, ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়া, ব্রিংহাম ইয়ং ইউনিভার্সিটি ইন উতাহ, ইম্পিরিয়াল কলেজ লন্ডন এবং বোস্টন-ভিত্তিক হেলথ ইফেক্ট ইনস্টিটিউট এর গবেষকরা বাতাসে কণাগত বস্তু (পিএম) ২.৫ মাইক্রোনের চেয়েও ছোট কণা বা পিএমের উপস্থিতি লক্ষ্য করেছেন। এসব সূক্ষ্ম কণাগুলো ফুসফুসে গভীরে প্রবেশ করতে পারে এবং হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, শ্বাসযন্ত্রের রোগ এবং ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ প্রজেক্টের এক নতুন গবেষণা দেখা গেছে, সবচেয়ে দূষিত এশীয় এবং আফ্রিকার দেশগুলোতে পিএম ২.৫ এম্বিয়েন্ট বায়ু দূষণের কারণে গড় বায়ু প্রায় এক বছর কমে এবং আয়ু ১.৫ থেকে ২ বছর কমে যায়।
বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই ধরনের দূষণের কারণে সারা বিশ্বে প্রতিবছর সাত মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু আফ্রিকা ও এশিয়ার নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে হয়।
পরিবেশের পিএম২.৫ মাত্রার কারণে গড় আয়ু কমে যাওয়া ১৮৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। বায়ুদূষণের কারণে এখানে মানুষ স্বাভাবিকের চেয়ে ১.৮ বছর কম বাঁচেন।
বায়ুদূষণের ফলে মিশরে ১.৮৫ বছর, পাকিস্তানে ১.৫৬ বছর, ভারতে ১.৫৩ বছর, সৌদি আরবে ১.৪৮ বছর, নাইজেরিয়ায় ১.২৮ বছর এবং চীনে ১.২৫ বছর গড় আয়ু কমেছে।
বর্তমানে, বিশ্বব্যাপী দূষণের ৯৫ শতাংশ পিএম২.৫ মাত্রায় রয়েছে যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত মাত্রা অতিক্রম করেছে।
গবেষণায় আরো দেখা গেছে, বায়ু দূষণ থেকে মৃত্যুহার বেড়েছে। ১৯৯০ সালে পিএম২.৫ বায়ুতে শ্বাস নিয়ে বিশ্বব্যাপী ৩.৫ মিলিয়ন মানুষ মারা গেছে। অন্যদিকে ২০১৫ সালে একই ধরনের বায়ু দূষণের কারণে ৪.২ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।