করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেও এসব অভিযোগ নিয়ে গ্রাহকরা প্রতিদিন সংশ্লিষ্ট অফিসে ধরনা দিচ্ছেন। অনেকে আবার অতিরিক্ত ভিড় দেখে করোনার ভয়ে অভিযোগ না জানিয়েই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
জানা যায়, যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর অধীনে নড়াইলে এক লাখ ৯ হাজার গ্রাহক রয়েছে। গত মার্চ মাস থেকে মে মাস পর্যন্ত করোনা মোকাবিলায় অন্যান্য অফিসের মতো পল্লী বিদ্যুতের অফিসও ছুটি ছিল। জুন মাসে অফিস খোলার পর পল্লী বিদ্যুতের মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসের ‘ভৌতিক’ বিল ধরিয়ে দিলে গ্রাহকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এদিকে যারা বিলের কপি রেখে দিয়েছেন তারা সংশ্লিষ্ট অফিসে অভিযোগ করলে সমাধান পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, যারা বিলের কপি সংরক্ষণে রাখেননি তারা বেশি বিপাকে পড়েছেন।
সদরের হবখালী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত সিঙ্গিয়া গ্রামের অনি বেগম (হিসাব নং-৪১৮-২০৩৪) জানান, তিনি গত ফ্রেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের বিল পরিশোধ করলেও মে মাসের সাথে পরিশোধকৃত ওই দুই মাসের বিল পুনরায় সংযুক্ত করা হয়েছে।
কলোড়া ইউনিয়নের শিমুলিয়া গ্রামের ফসিয়ার রহমান হিসাব নং- (৭৪০-১৮৫০) জানান, গত মার্চ মাসে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করলেও মে মাসের সাথে আবারও ওই মাসের পরিশোধকৃত বিল বকেয়া দেখিয়ে যুক্ত করা হয়েছে।
একই অভিযোগ করেন শিমুলিয়া গ্রামের ফারুক মিনা, আউড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক প্রশান্ত সরকারসহ অনেক গ্রাহক।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সহ-সভাপতি এবং লোহাগড়া উপজেলার পরিচালক আবু আবদুল্লাহ এসব সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘এটা শুধু নড়াইলে নয়, প্রায় সারা দেশেই একই অবস্থা। করোনার কারণে এপ্রিল ও মে মাসে মিটার রিডাররা বাড়িতে গিয়ে বিল করতে পারেনি। ফলে ঘরে বসে বিল করতে হয়েছে। এক্ষেত্রে ২০১৯ সালের এপ্রিল ও মে মাসের বিল দেখে একটি বিল করা হয়েছে। এছাড়া সফটওয়্যারের ত্রুটির কারনে পরিশোধকৃত বিল আবার যুক্ত হয়েছে। তবে অভিযোগের ভিত্তিতে এসব বিল সমন্বয় করা হবে।’
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ নড়াইলের জোনাল অফিসের ডিজিএম আবু আনাস মোহাম্মদ নাসের বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে ঘরে বসে বিদ্যুৎ বিল করায় কিছু সমস্যা হয়েছে। ব্যাংকিং কার্যক্রম সীমিত থাকায়ও কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে এসব বিল প্রায় সমন্বয় করা হয়েছে। যারা বিল হারিয়ে ফেলেছেন তাদের ডুকুমেন্ট কোথাও না কোথাও রয়েছে। সেগুলো দেখে ঠিক করা হবে।’