পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি
কুড়িগ্রামে এক মাস ধরে বিদ্যুৎবিহীন ৮ হাজার গ্রাহক
কুড়িগ্রামের নারায়ণপুর ও যাত্রাপুর ইউনিয়নে প্রায় এক মাস ধরে বিদ্যুৎবিহীন আছেন পল্লী বিদ্যুতের আট হাজার গ্রাহক।
সংযোগ থাকলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সাংসারিক কাজকর্ম ও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বিঘ্নিত হচ্ছে। এসব মানুষের বাড়িতে কুপিই (বাতি) এখন শেষ ভরসা।
কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, নাগেশ্বরীর মাদারগঞ্জ এলাকা থেকে চরাঞ্চলের দিকে স্থাপিত সাবমেরিন ক্যাবলে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। এতে নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়ণপুর এবং সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের বেশ কিছু চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ক্যাবলে ত্রুটি চিহ্নিত করার কাজ চলছে। তবে নদীর পানি বাড়তে থাকায় মেরামতকাজ বিঘ্নিত হচ্ছে।
বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন অফিস।
আরও পড়ুন: তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ নারায়ণগঞ্জের জনজীবন
নারায়ণপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. আব্দুল মালেক বলেন, গত এক মাস ধরে আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুৎ না থাকায় আমরা খুবই ভোগান্তিতে পড়ছি। দোকানপাটে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারছি না। সন্তানদের লেখাপড়ায় খুবই সমস্যা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. নুর ইসলাম বলেন, বিদ্যুতের কারণে সেচপাম্প বন্ধ। ধানখেতে পানি দিতে শ্যালো মেশিন সেট করছে অনেকে। এ ছাড়া, একটি মোবাইল চার্জ দিতে যেতে হয় সোলারের দোকান কিংবা জেনারেটরে। এসব জায়গায় মোবাইল চার্জ দিতে ২০-৩০ টাকা লাগে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, কুড়িগ্রামের জেনারেল ম্যানেজার মো. মহিতুল ইসলাম বলেন, সাবমেরিন ভূগর্ভস্থ লাইনে ত্রুটি থাকার কারণে এমন পরিস্থিতি হয়েছে। আমরা ত্রুটি শনাক্তের চেষ্টা করছি। নদীতে পানি বাড়ার কারণে কাজ দুদিন বন্ধ ছিল। আমারা আশা করছি পরশু থেকে আবারও কাজ শুরু হবে।
আরও পড়ুন: দেশজুড়ে তীব্র লোডশেডিংয়ে চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ
বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় আবারও বাড়ছে লোডশেডিং
বাগেরহাট: লোডশেডিংয়ে ভোগান্তি বাড়ছে, ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা
বাগেরহাটে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। দিন-রাতে তিন থেকে চার বার লোডশেডিং করা হচ্ছে শহরে। আর গ্রাম অঞ্চলে লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরও বেশি। লোডশেডিংয়ের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বাসা-বাড়িতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষতির মুখে রয়েছে ব্যবসায়ীরা।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রতিদিন চাহিদায় তুলনায় ২৫ মেগাওয়াট এবং ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের চাহিদার তুলনায় আড়াই মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি থাকছে। সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে।
জানা গেছে, বাগেরহাটের গ্রাম অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবারহ করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। আর বাগেরহাট পৌর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবারহের দায়িত্বে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। সব ধরণের ব্যবসা-বার্ণিজ্য এবং উৎপাদনমুখী কলকারখানায় লোডশেডিংয়ের প্রভাব পড়েছে। লোডশেডিংয়ের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মালটিমিডিয়া ক্লাশ করানো সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যুৎ না থাকায় ঘুরছে না ফ্যান আর জ্বলছে না লাইট।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, জাতীয় গ্রিড থেকে বাগেরহাট ১৩২/৩৩ কেবি গ্রিড উপকেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবারহ করা হয়। এই উপকেন্দ্র থেকে বাগেরহাট জেলা এবং পিরোজপুরের সদর, নাজিরপুর ও ইন্দুরকানি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবারহ করে। বাগেরহাট উপকেন্দ্রের প্রতিদিন পিক আওয়ারে চাহিদা ৯৮ মেগাওয়াট। সেখানে ৩০ থেকে ৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি থাকছে।
বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মুহাম্মদ নুরুল হোসাইন জানান, জেলায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহক সংখ্যা তিন লাখ ৪০ হাজার। ৬১টি ফিডারের মাধ্যমে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবারহ করা হয়। প্রতিদিন তাদের চাহিদা রয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। কিন্তু সেখানে তারা পাচ্ছে ৫০ মেগাওয়াট। ২৫ মেগাওয়াট ঘাটতি থাকছে। দিন-রাতে চার বারে চার ঘণ্টা লোডশেডিং করে বিদ্যুতের ঘাটতি মিটানো হচ্ছে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
পড়ুন: স্কুলশিক্ষকের তৈরি ভাসমান সেতুতে দুর্ভোগের অবসান হলো গ্রামবাসীর
করোনাকালে নড়াইলে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা হয়রানির শিকার
করোনাভাইরাসের এ সংকটকালেও নড়াইলে বৈদ্যুতিক বিলের ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।