রবিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে নিহত জুয়েলের মেয়ে জেবা তাসনিয়ার হাতে চেক তুলে দেন জেলা প্রশাসক আবু জাফর।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে পিটিয়ে হত্যা: গ্রেপ্তার আরও ৪
এ সময় জুয়েলের বড় ভাই আবু ইউসুব মো. তওহিদুন্নবীসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেবা তাসনিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা আমাকে এতিম করেছে, পিতৃহারা করেছে তাদের কঠোর শাস্তি চাই। শুধু অনুদান নয়, বাবার হত্যাকারীদের বিচার চাইতে এসেছি।’
জুয়েলের বড় ভাই আবু ইউসুব মো. তওহিদুন্নবী বলেন, ‘প্রশাসনের তৎপরতায় আমাদের বিশ্বাস ন্যায় বিচার পাবো। ন্যায় বিচারের অপেক্ষায় রয়েছি। তবে দ্রুত বিচার কার্য শেষ করতে কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি।’
নিহত শহিদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রিপাড়ার আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। গত বছর চাকরিচ্যুত হওয়ায় কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।
জানা গেছে, গত ২৯ অক্টোবর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী জামে মসজিদে কোরআন অবমাননার দায়ে জুয়েল ও তার সঙ্গী একই এলাকার সুলতান রুবায়াত সুমনকে গণপিটুনি দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে আটকিয়ে রাখেন স্থানীয়রা। পরে সন্ধ্যায় ইউপি ভবন ভেঙে প্রশাসনের উপস্থিতিতে জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করে মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে স্থানীয়রা। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয় পুলিশ।
এতে স্থানীয়দের ছোড়া পাথরের আঘাতে পাটগ্রাম থানার ওসি সুমন কুমার মহন্তসহ ১০ পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশ জুয়েলের সঙ্গী রুবায়াত সুমনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় নিহত জুয়েলের চাচাত ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ও ইউপি ভবন ভাঙচুরের দায়ে ইউপি চেয়ারম্যান বাদী হয়ে অপর একটি মামলা দায়ের করেন। আলোচিত এ ঘটনায় তিন মামলায় ১১৪ জনের নামসহ শত শত অজ্ঞাত আসামির মধ্যে পুলিশ রবিবার পর্যন্ত ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ঘটনার পর তদন্ত করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি কোরআন অবমাননার কোন সত্যতা পায়নি। এটি মূলত একটি গুজব ছিল বলে তারা দাবি করেন।