লালমনিরহাট
বিজয় দিবস উপলক্ষে লালমনিরহাটে বউ-জামাই মেলা
লালমনিরহাটে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। বিজয় দিবস উপলক্ষে এদিন জেলার বড়বাড়ি আবুল কাশেম ডিগ্রি কলেজে স্থানীয়দের উদ্যোগে ১৫ দিনব্যাপী বৌ-জামাই মেলা উদ্বোধন করা হয়।
মেলার উদ্বোধন করেন সাবেক উপমন্ত্রী ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু।
১৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এবার এ মেলায় মাছ, পিঠা ও অন্যান্য প্রসাধনী পণ্যের স্টল স্থান পেয়েছে। প্রথম দিনই মেলা প্রাঙ্গণে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা মেলায় যোগ দিয়েছেন। গলায় মালা ও শাড়ি পড়ে মেয়ে-জামাই মেলায় এসে তারা আনন্দ উপভোগ করেন।
মেলায় হরেক রকমের পিঠা ও নানা প্রজাতির মাছ নিয়ে দোকানিরা পসরা সাজিয়ে বসেছেন। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চলবে এই উৎসব।
মেলা উপলক্ষে উপজেলার চারটি ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে এসেছেন মেয়ে ও জামাই। নতুন রূপে সেজেগুজে মেয়ে-জামাই এসেছেন মেলায়। তারা শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার জন্য কিনছেন মাছ ও নানা রকমের পিঠা।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বসছে না পাথরকালি মেলা
নতুন জামাই বাড়িতে আসবে বলে শ্বশুররাও বড় বড় মাছ কিনে বাড়ি ফিরেছেন।
দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, অনেক আশা নিয়ে মাছ, পিঠা কিনতে এসেছি। কিন্তু বিক্রেতারা অনেক দাম হাঁকাচ্ছেন।
তবে দাম যাই হোক, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য মেলায় আসা বউ-জামাইরা পছন্দমতো সামগ্রী কিনে শ্বশুরবাড়ির দিকে যাচ্ছেন।
বিক্রেতারা বলছেন, আড়তেই দাম চড়া। এরপর পরিবহন খরচ মিলিয়ে এই মাছগুলো বিক্রি করতে হয়। মেলায় বিক্রি বেশি, তাই লাভ কম।
সব জিনিসেরই দাম বেশি হওয়ায় এ বছর পিঠা দাম একটু বাড়াতে হয়েছে বলে জানান পিঠা বিক্রেতারা।
মেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ফারুক সিদ্দিকী জানান, গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই এই মেলার আয়োজন। মেলার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের শিশুরা বিলুপ্তপ্রায় অনেক প্রজাতির মাছের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবে।
সব মিলিয়ে গ্রামবাংলার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতেই মূলত এ ব্যতিক্রমী মেলার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান ফারুক সিদ্দিকী।
তিনি আরও জানান, এই মেলাটির তাৎপর্য হলো এ অঞ্চলের জামাইরা বৌ নিয়ে সকাল বেলায় এই মাছের মেলায় আসেন। এখান থেকে বড় বড় মাছ নিয়ে শশুড় বাড়িতে যাবেন; শাশুড়ি দুপুরের রান্না করবেন এবং শশুড়-শাশুড়ি ও তার অন্যান্য আত্নীয়-স্বজন নিয়ে মাছের তরকারি দিয়ে দুপুরের খাবার খাবেন তারা।
এরপর তারা আবার বিকালে পিঠে মেলায় আসবেন। মেলায় রাত পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রামীণ নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান ফারুক সিদ্দিকী।
আরও পড়ুন: এবার বিজয় দিবসে কুচকাওয়াজের বদলে বিজয় মেলা হবে
৬ দিন আগে
লালমনিরহাটে কম্বলে আগুন লেগে নারীর মৃত্যু
লালমনিরহাটে আগুনে দগ্ধ হয়ে অইচন বেওয়া নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ১০টায় উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের বুড়াসারডুবি গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
অইচন বেওয়া (৬৮) বুড়াসারডুবি গ্রামের মৃত জমির উদ্দিনের স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, কুপির আগুন কম্বলে লেগে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিজ বাড়িতে মারা যান অইচন বেওয়া। খবর পেয়ে এলাকাবাসী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরও পড়ুন: যশোরে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ২
বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি সঠিক ভাবে চলাচল করতে পারতেন না বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।
ফকিরপাড়ায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন বলেন, কোনো অভিযোগ না থাকায় পরিবার তার দাফনের ব্যবস্থা করছে।
হাতিবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুন্নবী বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তদন্ত করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে কুপির আগুন কম্বলে লেগে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে।
১ সপ্তাহ আগে
লালমনিরহাটে ফুটপাতে জমে উঠেছে শীতের পোশাক বিক্রি
অগ্রহায়ণের শেষ সময়ে শীতের প্রকোপ বেড়েছে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে। লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে শপিংমলের পাশাপাশি ফুটপাতের অস্থায়ী দোকানগুলোতে জমে উঠেছে শীতের পোশাক বিক্রি।
শীতবস্ত্র কিনতে স্বল্প আয়ের মানুষেরা ভিড় করছেন কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভাণ্ডার হকার্স মার্কেটের ফুটপাতে। বিকেল হতেই এ মার্কেটের ফুটপাতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। এছাড়াও তুষভাণ্ডার শহরের বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতের অস্থায়ী দোকানগুলোতে সুলভ মূল্যে বাহারি শীতের পোশাক পাওয়া যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফুটপাতের এসব দোকানে বয়স্কদের সোয়েটার, কোট, ব্লেজার, মাফলারসহ ছোটদের বিভিন্ন সাইজের শীতের পোশাকের আধিক্য। হকাররা অনেকে হাঁকডাক করে এসব কাপড় বিক্রি করছেন।
আরও পড়ুন: শীতে রুম হিটার: জনপ্রিয় ব্র্যান্ড, মডেল, ধরন ও দাম
তুষভাণ্ডার হকার্স মার্কেটে ফুটপাতে মেয়েদের সোয়েটার মানভেদে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, ছেলেদের জ্যাকেট ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, ছোটদের বিভিন্ন পোশাক ৫০ থেকে ৪০০ টাকা, মাফলার ৪০ থেকে ১৫০ টাকা এবং গরম টুপি ৫০ থেকে ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন সাইজের কম্বলও বিক্রি হচ্ছে।
তুষভাণ্ডার অস্থায়ী হকার্স মার্কেটের ফুটপাতের ভাসমান দোকানি আফজাল হোসেন জানান, বেশ কিছুদিন ধরে শীতের পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসলেও তেমন বিক্রি হয়নি। তবে গত দুই দিন থেকে শীত প্রকোপ বাড়ায় ক্রেতার ভিড় বেড়েছে। আরেক দোকানি সবুজ আহমেদ জানান, ফুটপাতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে শিশুদের শীতের পোশাক। এছাড়া জ্যাকেট, সোয়েটার ও বিভিন্ন ধরনের কম্বল কিনছেন ক্রেতারা।
তুষভাণ্ডার বাজার ফুটপাতে শীতের পোশাক কিনতে আসা গৃহিণী মরিয়ম আক্তার বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে ভোরে শীতের প্রকোপ বাড়ছে। তাই বাচ্চাদের জন্য শীতের পোশাক কিনছি। তবে মান অনুযায়ী দাম কিছুটা বেশি।
এদিকে ডিসেম্বরের শেষে শীত আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার। তিনি বলেন, সাধারণত ডিসেম্বর-জানুয়ারির দিকে বেশি শীত অনুভূত হয় বাংলাদেশে। যত দিন গড়াবে তাপমাত্রা স্বাভাবিকভাবেই কমবে। এ মাসের ১৫ তারিখের পর থেকে শীত বেশি অনুভূত হতে পারে।
আরও পড়ুন: শীতকাল শুরু, দিন-রাতে বাড়বে আরও ঠান্ডা
১ সপ্তাহ আগে
লালমনিরহাটে নসিমনের চাকায় পিষ্ট হয়ে শিশুর মৃত্যু
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে নসিমনের চাকায় পিষ্ট হয়ে তিথী রানী (৪) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের নিথক ঢাকাইয়াটারী এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
তিথি চলবলা ইউনিয়নের ঢাকাইয়াটারী এলাকার বিষ্ণু রায়ের মেয়ে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
স্থানীয়রা জানায়, তিথির বাবা, স্ত্রী সন্তান নিয়ে নিজে অটোবাইক চালিয়ে বাড়ির পাশ থেকে লালমনিরহাট-চাপারহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রবেশের সময় চাপারহাটগামী একটি নসিমন তাদের ইজিবাইকে ধাক্কা দেয়। এতে নসিমনের চাকায় পিষ্ট হয়ে তিথির মৃত্যু হয়। বাবা-মাও আহত হয়েছেন।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম মালিক বলেন, কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২ সপ্তাহ আগে
লালমনিরহাটে মামার কোদালের আঘাতে ভাগিনার মৃত্যুর অভিযোগ
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় মামা আহাদুলের কোদালের আঘাতে ভাগিনা হাফিজুরের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযো উঠেছে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহাদুলের মৃত্যু হয়। এর আগে রবিবার ফকিরপাড়ার রমণীগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে হাফিজুরসহ ছয়জন আহত হন।
মৃত হাফিজুর রহমান ওই গ্রামের মৃত আপতার উদ্দিনের ছেলে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে অগ্নিদগ্ধ দুই শিশুর ঢামেকে মৃত্যু
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আহাদুলের সঙ্গে তারই আপন ভাগিনা হাফিজুরের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। তারই জেরে আহাদুলের কোদালের আঘাতে হাফিজুরসহ উভয় পক্ষে ছয়জন আহত হন।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। হাফিজুরসহ আহত দুইজনের অবস্থায় আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা তাদেরকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে হাফিজুরের মৃত্যু হয়।
হাফিজুরের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আহাদুলের পক্ষে হাতীবান্ধা হাসপাতালে ভর্তি থাকা শহিদুল ইসলাম ও সৌখিন ইসলাম নামে দুইজনকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে নিহতের স্বজনরা।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুন্নবী বলেন, হাফিজুরকে হত্যার ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওসি।
আরও পড়ুন: হযরত আলী হত্যা মামলায় স্ত্রী ও প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড
১ মাস আগে
লালমনিরহাটে ট্রেনে কাটা পড়ে ৪ জনের মৃত্যু
লালমনিরহাটে ট্রেনে কাটা পড়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের আলাউদ্দিন নগরে করতোয়া এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন- আজিজার রহমান, মোবারক হোসেন, মকবুল হোসেন ও আব্দুল ওহাব। তাদের সবার বাড়ি জোংড়া ইউনিয়নের ইসলাম নগরে।
স্থানীয়রা জানায়, আলাউদ্দিন নগর এলকার রেল লাইনের পাশে ধান মাড়াই করছিলেন ওই চারজন। এসময় বুড়িমারী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনটি আসে। কিন্তু তারা ট্রেনের শব্দ টের না পাওয়ায় ট্রেনে কাটা পড়েন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তারা মারা যান।
পাটগ্রাম স্টেশন মাস্টার নুর ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন:
১ মাস আগে
লালমনিরহাটে দরপত্র জমাদানে বাধা দেওয়ায় যুবদল নেতা বহিষ্কার, জেলা কমিটি বিলুপ্ত
দরপত্র জমাদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগে লালমনিরহাটে যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম জুলহাসসহ তিন যুবদল নেতাকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় যুবদল। একইসঙ্গে জেলা যুবদল কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় যুবদলের সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভুইয়ার সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে দরপত্র জমাদানে বাধা দেওয়ায় যুবদল নেতা আটক
অপর দুই বহিষ্কৃত নেতারা হলো- পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোমিনুল ইসলাম, পৌর ৭ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন মিয়া।
এর আগে দরপত্র জমাদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগে বুধবার (৩১ অক্টেবর) সদর হাসপাতাল চত্বর থেকে তাকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে সেনাসদস্যরা।
পরে লিখিত কোনো অভিযোগ না থাকায় মুচলেকা নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় তাকে ছেড়ে দেয় সদর থানা পুলিশ।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের রোগীদের পণ্য সামগ্রী সরবরাহসহ তিনটি গ্রুপে সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য দরপত্র আহ্বান করেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল মোকাদ্দেম। পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে সকাল থেকে অন্যদের দরপত্র জমাদানে বাধা দিয়ে আসছিলেন লালমনিরহাট পৌর যুবদলের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম জুলহাস।
দখল, টেন্ডার সন্ত্রাস এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের নীতি, আদর্শ ও সংহতি পরিপন্থী নানা অনাচারের কারণে তাকে বহিস্কার ও কমিটি বিলুপ্ত করা হয় বলে জানানো হয় দলের বিজ্ঞপ্তিতে।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে ঘূর্ণিঝড়ে ধানসহ সবজি খেত ক্ষতিগ্রস্ত
১ মাস আগে
ঘরে উঠছে আমন ধান, উৎসবমুখর তিস্তার চর
লালমনিরহাটের তিস্তাবিধৌত চরাঞ্চলে লেগেছে হেমন্তের ছোঁয়া। নবান্নের আনন্দ কৃষকদের মনে। আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ে কাটছে ব্যস্ত সময়। বন্যায় ক্ষতি কম হওয়ায় এবছর তিস্তার চলে আমনের ভালো ফলন হয়েছে। কৃষকদের মুখে ফিরেছে হাসি।
কৃষকরা জানান, তিস্তার চরে প্রতিবছর বন্যায় আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হলেও এবছর তেমন ক্ষতি হয়নি। প্রতিবছর তুলনায় চলতি মৌসুমে গত বছরের তুলনায় ফসল কম হলেও ধানের বর্তমান বাজার দরে সন্তুষ্ট তারা।
তারা আরও বলেন, চলতি বছর দোনপ্রতি (২৭ শতক) ১২ থেকে ১৪ মণ করে আমন ধান পেয়েছেন তারা। এ বছর সার, কীটনাশক, ডিজেলসহ কৃষি উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমন ধান উৎপাদনে খরচও হয়েছে বেশি। তবে ধানের মূল্যও বেশি থাকায় খরচ নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না তাদের। প্রতি মণ ধানের বাজার মূল্য ১২শ থেকে ১৩শ ৫০ টাকা। ভালো দামে ধান বিক্রি করতে পারায় ফলন কম হলেও লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা করছেন তারা।
হাতীবান্ধার চর-সির্দুনায় গিয়ে দেখা যায়, তীব্র রোদের মধ্যেই তিস্তার চরে কৃষকরা আমন ধান কাটছে। সেখানেই ধান মাড়াই করে বস্তায় নেওয়া হচ্ছে। বেশিরভাগ কৃষকের বাড়ি নদীর তীরবর্তী এলাকায় হওয়ায় নৌকা দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। খেতের পাশে ছোট ছোট টিনের চালার ঝুপড়ি ঘরও বানিয়ে নিয়েছেন অনেকে। সেখানে চলছে বিশ্রাম ও খাবার খাওয়া। আমন ধান ঘরে তোলাকে কেন্দ্র করে তিস্তার চরে যেন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
কৃষক আফজাল উদ্দিন বলেন, এ বছর খরার কারণে আগের তুলনায় ধান কম হয়েছে। তারপরেও দোন প্রতি ১২/১৪ মণ করে ধান হবে। তাছাড়া এখন বাজারে ধানের দাম বেশি তাই এবার লোকসান হওয়ার শঙ্কা নেই।
কালীগঞ্জে তিস্তার চরের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, গত বছর কষ্টে রোপা আমন ধান তিস্তা নদীর বন্যায় তলিয়ে যায়। দীর্ঘদিন পানির নিচে থাকায় ধান গাছে পচন ধরে। চলতি বছর তিস্তায় স্বল্প মেয়াদী বন্যা হওয়ায় ধান ভালো হয়েছে। এবার লাভবান হব।
হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, উপজেলার তিস্তার চরাঞ্চলে চলতি আমন মৌসুমে ২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছে কৃষকরা। বর্তমানে চরে আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চরে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। যদিও এবার খরায় আমনের ফলন আশানুরূপ হয়নি, তবে স্থানীয় ধানের বাজার মূল্য বেশি থাকায় চরের কৃষকরা লাভবান হবেন।
হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন মিয়া বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চরাঞ্চলের আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের বর্তমান বাজার মূল্য ভালো, কৃষকরা এবার মোটামুটি লাভবান হবেন।
কৃষকরা আমন ধান তোলার পর ভুট্টা, গম, আলু, শাকসবজি ইত্যাদি চাষের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কৃষি অফিস থেকে এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
১ মাস আগে
লালমনিরহাটে দরপত্র জমাদানে বাধা দেওয়ায় যুবদল নেতা আটক
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের দরপত্র জমাদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পৌর যুবদলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম জুলহাসকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে সদর হাসপাতাল চত্বর থেকে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন সেনাসদস্যরা।
জুলহাস লালমনিরহাট পৌরসভা গেট এলাকার বাসিন্দা। তিনি লালমনিরহাট পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ও জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের রোগীদের পণ্য সামগ্রী সরবরাহসহ তিনটি গ্রুপে সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য দরপত্র আহ্বান করেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল মোকাদ্দেম।
আরও পড়ুন: মেহেরপুর আওয়ামী লীগের ২ নেতা আটক
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টার মধ্যে তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের নিদিষ্ট দরবক্সে দরপত্র জমা দিতে বলা হয়।
হাসপাতালের দরপত্র জমাদানে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে হাসপাতাল চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করে পুলিশ। সেই পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে সকাল থেকে অন্যদের দরপত্র জমাদানে বাধা দিয়ে আসছিলেন লালমনিরহাট পৌর যুবদলের আহ্বায়ক জুলহাস।
এসময় দরপত্র গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষকেও লাঞ্ছিত করেন তিনি। অন্য দরদাতারা দরপত্র জমাদান করতে না পেরে সেনা সদস্যদের খবর দেয়।
খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে যুবদল নেতা জুলহাসকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হলে ২৪ জন দরদাতা তাদের দরপত্র জমা দেন।
লালমনিরহাট জেলা যুবদলের সভাপতি আনিছুর রহমান আনিছ বলেন, পৌর যুবদল আহ্বায়ক জুলহাস দৌড়ে পালানোর কারণে তাকে আটক করেছে। এটি মূলত আপোষযোগ্য বিষয়। পত্রিকায় না লেখাই ভালো।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সামিরা হোসেন বলেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য ও বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করেছিল জুলহাস নামে একজন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সহায়তা চেয়ে তাদের ফোন করা হলে তারা এসে বিশৃঙ্খলাকারীকে আটক করেছে।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, দরপত্র দাখিল নিয়ে হট্টগোল করার চেষ্টা করলে জুলহাস নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সাবেক এমপি শেখ আফিলসহ ২০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা, আটক ৫
১ মাস আগে
লালমনিরহাটে ঘূর্ণিঝড়ে ধানসহ সবজি খেত ক্ষতিগ্রস্ত
ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে রোপা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি শীতকালীন শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের রবিশস্যের বেশিরভাগ খেতই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকে হিমেল হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়।
এলাকার আমন ধানের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে শীতকালীন শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের রবিশস্যের। বাতাসে জমিতে শুয়ে পড়েছে মাঠের আধা পাকা আমন ধান।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় ১৯ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আগাম জাতের ধানের আবাদ হয়েছে। উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য আমন মৌসুমে কৃষককে সরকারি প্রণোদনা বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে।
দুহুলী গ্রামের কৃষক আবু তালেব বলেন, ঘূর্ণিঝড় দানার কারণে ঝড়ে ধান গাছগুলো নেতিয়ে পড়েছে। আমার ২০ শতক জমির ধান হেলে পড়েছে। ধানের শীষে যে দানা রয়েছে তা এখনো শক্ত হয়নি। অনেক ধান চিটা হয়ে যাবে। আর যে ফলন হওয়ার কথা ছিল তাও কমে যাবে।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরা উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে বৃষ্টি, ৮৮৭ আশ্রয়কেন্দ্র চালু
কৃষক মহেশ বাবু জানান, তিনি বর্গা নিয়ে ৫০ শতাংশ জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। ঝোড়ো হাওয়ায় ধান গাছগুলো নুয়ে পড়েছে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার অনেক ভালো ফলন হয়। কিন্তু বৃষ্টির কারণে কাঙ্ক্ষিত ফসল ঘরে তোলা নিয়ে তিনি চিন্তিত।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে রোপা আমন ধানের তেমন ক্ষতি হয়নি। এতে উৎপাদনের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না এমনটাই জানায় কৃষি অফিস।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি বলেন, ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে আমন ধানের তেমন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি খুব শিগগিরই এই দুর্যোগ কেটে যাবে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে বাগেরহাটে নদ-নদীতে বেড়েছে পানি
১ মাস আগে