বন্দর সূত্র জানায়, বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ ৫৪ জাহাজে পণ্য খালাস শুরু হয়েছে। এসব জাহাজে প্রায় ১০ লাখ টন পণ্য রয়েছে।
এছাড়া, নৌযান ধর্মঘটের কারণে কার্গো জাহাজে আছে প্রায় ১১ লাখ টন পণ্য। এখন ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর বৈরী আবহাওয়ার কারণে এগুলো গন্তব্যে যাত্রা করতে পারছে না। সেই সাথে ঝুঁকি নিয়ে কোনো কার্গো জাহাজে বহির্নোঙর থেকে পণ্যবোঝাইও হয়নি। ফলে এসব জাহাজকে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে।
পণ্য আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা জানান, যেসব জাহাজ আটকে আছে সেগুলোতে প্রায় চার লাখ টন গম, ভুট্টা ও ছোলা, দেড় লাখ টন পশু খাদ্য ছাড়াও নানা কারাখানার পণ্য উৎপাদনের কাঁচামাল আছে। জাহাজ থেকে নামানোর পর এসব পণ্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করার কথা ছিল। কিন্তু গত সোমবার রাত ১২টা থেকে শ্রমিকরা ধর্মঘটের ডাক দিলে গভীর সমুদ্রে দাঁড়িয়ে থাকা বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য খালাস কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
ঘাট গুদাম শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক বলেন, ‘নৌযান ও লাইটারেজ শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে তিন দিন এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৩-৪ নম্বর সতর্ক সংকেতের কারণে আরও এক দিন লাইটারেজ জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ ছিল। আজ সকাল থেকে পুরোদমে কর্ণফুলীর ১৬ ঘাটে কাজ চলছে।’
বিদেশ থেকে গম, সার, ডাল, চিনি, সাদা মটর, পাথর, কয়লা, স্ল্যাগ, বল ক্লে, লাইম স্টোন, জিপসাম, সিমেন্ট ক্লিংকার ইত্যাদি খোলাপণ্য নিয়ে আসা বড় জাহাজ থেকে খালাসের জন্য লাইটারেজ জাহাজ বহির্নোঙরে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শেখ মো. ইছা মিয়া জানান, কর্মবিরতি প্রত্যাহারের পর সাগর উত্তাল ও ভারী বর্ষণের কারণে বহির্নোঙরে পণ্য খালাসে যেতে পারেনি লাইটারেজ জাহাজগুলো। এখন ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) সিরিয়াল নিয়ে রাখা বড় লাইটারেজ জাহাজগুলো শনিবার সকাল থেকে রওনা হয়েছে।
তিনি জানান, কর্মবিরতির আগে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ ছিল ৩৭ জাহাজ। এখন আরও জাহাজ যোগ হয়ে তা অর্ধশতাধিক হয়েছে।
আব্দুল মবিন নামে একজন জাহাজ মালিক বলেন, ‘বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ তিনটি বড় জাহাজের কাছে আমাদের ছয়টি লাইটারেজ জাহাজ ভিড়েছে। জোয়ারের পর সাগর শান্ত হলেই খালাস শুরু হবে। সাগর উত্তাল হলে বিদেশি জাহাজের পাইলট, ক্যাপ্টেনরা দুর্ঘটনার আশঙ্কায় খালাসের অনুমতি দেন না।’
বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘ধর্মঘট প্রত্যাহার ও বৃষ্টি থামার পর আজ শনিবার সকাল থেকে কর্ণফুলী নদীর ঘাটগুলোতে ফের কর্মতৎপরতা শুরু হয়েছে। লাইটারেজ জাহাজ থেকে বস্তা ভরে ক্রেনের সাহায্যে গম, ডালসহ বিভিন্ন পণ্য নদীপাড়ে খালাস করা হচ্ছে। কর্ণফুলীর মাঝির ঘাট, আনুমাঝির ঘাট, এভারগ্রিন ঘাট ও বাংলাবাজার ঘাটসহ বিভিন্ন ঘাটে পুরোদমে পণ্য খালাস চলছে।’