ঈদের দিন বিকালে খুলনায় বড় গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে প্রতি পিস ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে। আর ছোট চামড়ার মূল্য ছিল মাত্র ১৫০ টাকা। ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে প্রতিটি গড়ে ২০ টাকা করে।
কোরবানির চামড়া সংগ্রহকারী নগরীর বিভিন্ন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জানায়, মাদরাসা ও এতিমখানাগুলোর আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস কোরবানির চামড়া। এগুলো বিক্রি করে বছরের বড় একটি সময় ছাত্রদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু গত বছরের মতো এবারও চামড়ার মূল্য সর্বনিম্ন হওয়ায় প্রতিষ্ঠানে সংকট দেখা দেবে।
নগরীর জিরোপয়েন্ট মাদানী নগর মাদরাসা ও এতিমখানার মোহতামিম মাওলানা মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘৫৬টি চামড়া সংগ্রহ করতে পেরেছিলাম। কিন্তু দাম কম হওয়ায় চামড়া সংগ্রহের খরচ মেটানোই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
শহীদ শেখ আবু নাসের দাখিল মাদরাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের শিক্ষক খানজাহান বলেন, তাদের এতিমখানার জন্য ১৫৯টি গরুর চামড়া ও ৫৭টি ছাগলের চামড়া সংগ্রহ হয়। যেগুলো গত বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম দামে বিক্রি করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘অনেক মাদরাসা ও এতিমখানা কোরবানির পশুর চামড়ার ওপর নির্ভর করে। অনেকে তাদের পশুর চামড়া বিনামূল্যে মাদরাসা এবং এতিমখানায় দান করেন। কিন্তু চামড়ার দাম নিম্নগামী হওয়ায় মাদরাসাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
রূপসার মাদরাসা শিক্ষক মো. আসাদুল্লাহ বলেন, ‘কোরবানির চামড়ার দাম খুবই কম। চামড়া সংগ্রহ করতে যা ব্যয় হচ্ছে, বিক্রি করে সেই দামই উঠছে না। ব্যবসায়ীরা নামমাত্র মূল্যে চামড়া কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।’
খুলনার শেখপাড়া চামড়া পট্টিতে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করতে আসা অনেকে অভিযোগ করেন, দাম নির্ধারণ ও রপ্তানির ঘোষণা দেয়ার পরও কোরবানির পশুর চামড়ার দামের বিপর্যয় ঠেকানো যায়নি।
শেখপাড়া চামড়া পট্টির আমান লেদার কমপ্লেক্সের মালিক আমানুল্লাহ আমান বলেন, ট্যানারিতে গত বছরের চামড়া এখনও মজুদ থাকায় তাদের চামড়া নেয়ার আগ্রহ কম। এর সাথে যোগ হয়েছে করোনাভাইরাসের প্রভাব।
মো. আবু জাফর নামে আরেক ব্যবসায়ী জানান, ট্যানারি মালিকরা বিগত বছরের টাকা এখনও পরিশোধ না করায় ব্যবসায়ীরা সংকটের মধ্যে রয়েছেন।