তারা হলেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী এবং গোপালগঞ্জ জেলার মকসুদপুর থানার তরশ্রীরামপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে তানভীর আহম্মেদ ওরফে আবু ইব্রাহিম (২৫), টাঙ্গাইল জেলার ভুয়াপুর থানার জগতপোড়া গ্রামের খন্দকার গোলাম সারোয়ারের ছেলে জাকারিয়া জামিল (৩১), ময়মনসিংহ জেলা সদরের চকশ্যামরামপুর এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে আতিকুর রহমান (২৮) ও এলাকার আব্দুল হাকিমের ছেলে আবু সাঈদ (৩২)।
এর মধ্যে আবু ইব্রাহিম নব্য জেএমবি’র আইটি শাখার সদস্য এবং জাকারিয়া জামিল নব্য জেএমবি’র মিডিয়া শাখার প্রধান। বাকি দু’জন সংগঠনটির সক্রিয় সদস্য।
শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার চন্ডিহারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি পিস্তলের ম্যাগজিন, দুই রাউন্ড গুলি, একটি দেশি তৈরি ওয়ান শুটার গান, দুইটি কার্তুজ, ৩টি অত্যাধুনিক বার্মিজ চাকু, একটি চাপাতি, এক কেজি বিস্ফোরক দ্রব্য (পটাশিয়াম ক্লোরেট), দুটি লাল টেপ, ৪টি ব্যাটারি এবং কিছু জঙ্গীবাদী বই জব্দ করা হয়।
শনিবার বগুড়া জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন সাংবাদিকদের জানান, গ্রেপ্তারকৃত তানভীর আহম্মেদ ওরফে আবু ইব্রাহিম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি বিভাগের ছাত্র। গত জানুয়ারি মাসে ঢাকার আশুলিয়াস্থ তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল সংখ্যক জঙ্গি পুস্তক, ইলেকট্রনিক ও ড্রোন তৈরির সরঞ্জামসহ তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার সে পলাতক আসামি ছিল। তানভীর ড্রোনের মাধ্যমে নাশকতার পরিকল্পনা করছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
পুলিশ জানায়, অপর আসামি জাকারিয়া জামিল নব্য জেএমবির মিডিয়া শাখার প্রধান। অনলাইনে প্রকাশিত জঙ্গিবাদ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকাশনাগুলো সে আরবি থেকে বাংলায় অনুবাদ করে প্রচার করে। কওমী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করায় সে আরবী ভাষায় অত্যন্ত দক্ষ।
এছাড়া মো. আতিকুর রহমান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ছাত্র। সে নতুন সদস্য এবং অর্থ সংগ্রহের দায়িত্বপ্রাপ্ত। মো. আবু সাঈদ যুদ্ধ করার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক দিয়ে ৫০টির মতো উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বোমা তৈরী সম্ভব বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা জানান, উক্ত জঙ্গীরা নাশকতার উদ্দেশে দেশের বিভন্ন স্থান থেকে চন্ডিহারার একটি ফাঁকা মাঠে জড়ো হয়েছিল। এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। এ ঘটনায় শিবগঞ্জ থানায় অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য এবং সন্ত্রাস বিরোধী আইনে পৃথক পৃথক মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই চারজন নিজেদের নব্য জেএমবি’র সক্রিয় কর্মী হিসেবে স্বীকার করেছেন এবং এখানে বৈঠক করে পরবর্তী কার্যক্রম নির্ধারণ করতে চাচ্ছিল বলেও জানান পুলিশ সুপার।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ, হায়দার আলী মন্ডল, সনাতন চক্রবর্তি, সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবির, ডিবির ওসিসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।