চট্টগ্রামে গত তিন দিন ধরে টানা হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে। এর মধ্যে শুক্রবার দুপুরের পর থেকে জোয়ারের পানি ঢুকতে শুরু করলে মাত্র এক ঘণ্টায় বিস্তীর্ণ এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আগ্রাবাদ ও হালিশহরসহ আশপাশের পুরো এলাকা জোয়ারের পানিতে এখন তলিয়ে রয়েছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এখানকার বাসিন্দরা।
এছাড়া কয়েক দিন ধরে জোয়ারের কারণে নগরী চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, আসাদগঞ্জ, বাকলিয়া, চান্দগাঁওসহ কয়েকটি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে জলবদ্ধার সৃষ্টি হয়েছে।
জোয়ারের পানিতে ডুবে রয়েছে নগরীর বাণিজ্যিক এলাকা আগ্রাবাদের মা ও শিশু হাসপাতাল। হাসপাতালটির চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতাল গেইটের আধ কিলোমিটার আগেই রোগী এবং স্বজনদের গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে আসতে হচ্ছে।
হাসপাতালে আসা এক অভিভাবক বলেন, ‘নিচ তলায় আমার বাচ্চাকে ভর্তি করিয়ে ছিলাম। কিন্তু নিচ তলায় ময়লা দুর্গন্ধ পানি প্রবেশ করায় আমাদের তিন তলায় তুলে দেয়া হয়েছে।’
গত চার দিন ধরে সাগর উত্তাল থাকায় জোয়ারের পানির মাত্রা ছিল নগরীর পার্শ্ববর্তী খাল এবং ড্রেনগুলোর ধারণ ক্ষমতার বেশি। যার ফলে নগরীর রাস্তা-অফিসসহ সব কিছু কোথাও হাঁটু সমান, আবার কোথাও কোমর সমান পানিতে ডুবে আছে। এ দুরবস্থার মধ্যেই নিত্যদিনের কাজ সারতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
আব্দুল জব্বার নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘বাসা থেকে বের হতে পারি না, চাকরিতে যেতে পারি না। নিজের জরুরি ব্যক্তিগত দরকারেও বাইরে যেতে পারি না।’
খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগীর আহমদ বলেন, ‘আমাদের দুর্ভোগ আর কষ্টের সীমা নেই। জোয়ারের পানির কারণে ব্যবসায় লাভ তো দূরে থাক পুঁজি হারানোর শঙ্কায় আছি। কর্ণফুলীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং ছাড়া এ সমস্যার আশু সমাধান হবে না। পাশাপাশি সিডিএ যে খালগুলোর মুখে স্লুইসগেট বসানোর কাজ করছে সেটি দ্রুত শেষ করতে হবে। সরকারের এবং জনপ্রতিনিধিদের তদারকি বাড়াতে হবে।’
তিনি জানান, নগরের ৪১ ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টিই এখন জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত। এসব এলাকার মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। কোনো কোনো ভবনের নিচতলা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে।