পানিবন্দি
খুলনার দুঃখ বিল ডাকাতিয়া, জীবন-জীবিকার ঝুঁকিতে এলাকাবাসী
খুলনার ফুলতলা, ডুমুরিয়া ও আড়ংঘাটার বিল ডাকাতিয়ায় জলাবদ্ধতায় প্রায় দুই মাস ধরে পানিবন্দি কয়েক লাখ মানুষ।
আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দফায় দফায় বৃষ্টির পানিতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দেয় বিল ডাকাতিয়ায়। এতে পানিবন্দি হয়ে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে ভুগছেন এলাকাবাসী। উপরন্তু বিভিন্ন চর্ম ও পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।
স্থানীয়রা জনান, একজন মানুষ মারা গেলে তাকে যে মাটি দেবে, তার কোনো জায়গা নেই এ অঞ্চলের মানুষের।
খুলনার ফুলতলা, ডুমুরিয়া, আড়ংঘাটা এবং যশোর জেলার অভয়নগর ও কেশবপুর উপজেলা এলাকায় বিল ডাকাতিয়ার বিস্তৃতি। ৩০ হাজার একর চাষযোগ্য জমি রয়েছে এই এলাকায়।
আরও পড়ুন: জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ৫ কৃষি-ইকোলজিক্যাল এলাকায় কাজ করবে ইউএনডিপি
প্রবল বৃষ্টিতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাবে প্রায় দুই মাস ধরে তলিয়ে আছে বিলের জমি। মাছ চাষিদেরও বিপাকে পড়তে হয়েছে। নদীতে পলি জমাট এবং অতিবৃষ্টিই এর মূল কারণ। এজন্য ফসল নষ্ট, আয়ের পথ বন্ধের পাশাপাশি চরম খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে এ এলাকায়। পরিস্থিতি এমন যে, বিল ডাকাতিয়া এখন এ অঞ্চলের মানুষের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলাবদ্ধতা থেকে বাঁচতে স্থায়ী সমাধানের দাবি এখানকার পানিবন্দি প্রায় ১৫ লাখ মানুষের।
ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আল-আমিন বলেন, এ বছর বিল ডাকাতিয়ার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা একটি প্রস্তাব তৈরি করেছি। আমরা তাড়াহুড়ো করে কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি বিশেষজ্ঞ, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং শিক্ষাবিদদের কাছ থেকে মতামত সংগ্রহের জন্য সম্ভবত ১-২ সপ্তাহ সময় নেওয়ার পরিকল্পনা করছি।
প্রয়োজনে আমরা ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞদের এনে আমাদের সঙ্গে কাজ করব এবং তারপর জেলা প্রশাসনের কাছে পরিকল্পনাটি উপস্থাপন করব।’
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সেক্রেটারি ও খুলনা-৫ আসনের (ফুলহাটলা ও ডুমুরিয়া) সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এ সমস্যা সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
পানিসম্পদ সচিব নাজমুল আহসান বলেন, বন্যার পানিতে আটকে পড়া মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সমাধান খুঁজতে আগ্রহী পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। তিনি বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দাদের মতামত এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে আমরা স্থায়ী সমাধানের জন্য নতুন পরিকল্পনা করছি।
আরও পড়ুন: অসম্পূর্ণ কোর্স বা অতিরিক্ত সেবনে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের ঝুঁকি
১ মাস আগে
ময়মনসিংহে পানিবন্দি ৫০ হাজার পরিবার
ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলায় ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ১৫ ইউনিয়নের ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৫০ হাজার পরিবার। তলিয়ে গেছে এসব এলাকার রাস্তা ঘাট, শত শত একর কৃষি জমি ও মাছের খামার।
হালুয়াঘাটের পানি নামতে শুরু করলেও ১২টি ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকার ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে রয়েছে। তারা ঠাঁই নিয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে।
আরও পড়ুন: শেরপুরে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দি ৫০ হাজারের বেশি
সরকারিভাবে যে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। পর্যাপ্ত ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা না থাকায় চরম দুর্ভোগে পানিবন্দিরা।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলায় সাড়ে ১১ হাজার হেক্টর আমন ধানের খেত এবং ৮ হাজার হেক্টর ফসলের খেত নষ্ট হয়েছে। এছাড়া আরও নষ্ট হয়েছে ৭০ হেক্টর সবজির খেত।
স্থানীয় বাসিন্দা মোবারক আলী বলেন, ঘরে পানি ওঠায় বেশিরভাগ পরিবারে রান্নাবান্না বন্ধ রয়েছে। শুকনা খাবার খেয়ে দিন পার করছি। সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছি গরু ছাগলকে নিয়ে।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপরে, পানিবন্দি ২৫০০০ পরিবার
ধোবাউড়ার বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, হঠাৎ করে পানি চলে আসায় কোনো প্রস্তুতি নিতে পারিনি। অনেকের ঘর ভেঙে গেছে। তারা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। খাবার ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, এ পর্যন্ত দুই উপজেলায় ৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রশাসনের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। চাহিদা মোতাবেক ত্রাণ সামগ্রীও রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ৩৪ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি, তলিয়ে গেছে ফসলের খেত
২ মাস আগে
শেরপুরে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দি ৫০ হাজারের বেশি
টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে শেরপুরে নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার ১৫ ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে এবং পানিবন্দি রয়েছেন অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। এদিকে ঝিনাইগাতী মডেল পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া পানিবন্দিদের উদ্ধারে দমকল বিভাগ ও স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন।
উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শেরপুরে ঝিনাইগাতীর মহরশি, নালিতাবাড়ীর ভোগাই ও চেল্লাখালি এবং শ্রীবরদীর সোমেশ্বরি নদীর পানি বাড়তে থাকে। রাতে বিভিন্ন স্থানে নদীগুলোর বাঁধ ভেঙে ও বাঁধ উপচে প্রবল বেগে ঢলের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে থাকে।
আরও পড়ুন: বসনিয়ায় ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় ১৪ জনের মৃত্যু
ভোগাই নদীর তীরবর্তী নয়াবিল শিমুলতলা, ঘাকপাড়া, মন্ডালিয়াপাড়া, ভজপাড়া ও পৌরসভার গড়কান্দা এবং নিচপাড়াসংলগ্ন বাঁধে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙা অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। নালিতাবাড়ী পৌর শহর থেকে নয়াবিল, নালিতাবাড়ী বাজার থেকে ঘাকপাড়া যাতায়াতের সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে চেল্লাখালী নদীতে পাহাড়ি ঢলের পানিতে বারমারি, বাতকুচি, সন্ন্যাসীভিটা এলাকায় বাঁধ ভেঙেছে। পানিতে তলিয়ে গেছে শেরপুর-নালিতাবাড়ী ভায়া গাজিরখামার সড়ক। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে বাতকুচি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসময় গ্রামটির অন্তত ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ওই গ্রামের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিতে কাজ করছে দমকল কর্মীরা।
নন্নী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মো. আবদুল্লাহ বলেন, টানা বর্ষণ ও চেল্লাখালী নদীতে পাহাড়ি ঢলের পানিতে নন্নী ও পোড়াগাঁও ইউনিয়নের সড়ক ডুবে আছে। এছাড়া নদীপাড়ের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় মাটি সংকটের কারণে ঘর নির্মাণ হচ্ছে না বন্যার্ত শতাধিক পরিবারের
২ মাস আগে
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপরে, পানিবন্দি ২৫০০০ পরিবার
বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নীলফামারী ও লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২৫ হাজার পরিবার।
এদিকে পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো ঝুঁকিতে পড়েছে। বন্যা ও ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছে নদী পাড়ের হাজারও মানুষ।
রবিবার সকাল ৬টায় হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড হয় ৫২ দশমিক ১৭ মিটার। যা বিপৎসীমার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বেড়েছে ১৬টি নদ-নদীর পানি, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপরে
এর আগে শনিবার দুপুরে বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হয়। ফলে নদী তীরবর্তী অঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় পানিবন্দি প্রায় ২৫ হাজার পরিবার। আতঙ্কিত তিস্তাপাড়ের মানুষ।
এদিকে নদী তীরবর্তী এলাকার বেশ কিছু রাস্তাঘাট ব্রিজ কালভার্ট ভেঙে গেছে পানির তোরে। আমন ধান ও বিভিন্ন সবজি খেত ডুবে আছে।
একইসঙ্গে বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে বেশ কিছু পুকুরে মাছ।
মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে সলেডি স্প্যার বাঁধসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো। বাঁধ ভেসে যাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ভাটিতে থাকা শত শত পরিবার।
সলেডি স্প্যার বাঁধ-২ এলাকার রশিদুল হক বলেন, রাতে পানির গর্জনে ঘুমাতে পারিনি। সলেডি স্প্যার বাঁধে ব্রিজ অংশের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। এসময় বাঁধ কাঁপছিল। আমরা ভয় পেয়েছিলাম, সলেডি স্প্যার বাঁধ বুঝি ভেসে যায়। স্থানীয়রা রাত জেগে বাঁধে বস্তা ফেলে রক্ষা করেছে। বন্যার সময় নির্ঘুম রাত কাটে তিস্তাপাড়ের মানুষদের।
গোবর্দ্ধন গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, দুই রাত থেকে তিস্তা নদীতে পানি বাড়ছে। আমাদের গ্রাম পানিতে ডুবে আছে। নৌকা দিয়ে এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ির যোগাযোগ করতে হচ্ছে। ডুবে থাকা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। এ নিয়ে চিন্তায় পড়েছি।
আরও পড়ুন: ভারী বর্ষণে পানি বাড়ায় খুলে দেওয়া হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ গেট
হাতীবান্ধার পশ্চিম বিছনদই গ্রামের তমিজ উদ্দিন বলেন, আমাদের গ্রামে ৩০০ পরিবারের বসবাস। সবাই শুক্রবার রাত থেকে পানিবন্দি। দিন যত যাচ্ছে পানিবন্দির সংখ্যা তত বাড়ছে। বন্যার সময় শিশু বৃদ্ধ আর গবাদি পশুপাখি নিয়ে বড় বিপদে পড়তে হয়। বন্যা হলেই নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। আমরা ত্রাণ নয়, চাই তিস্তার মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন।
ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নে ৩ থেকে ৩ হাজার ৫০০ পরিবার পানিবন্দি। উপজেলা ও জেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে। শুকনো খাবার এখন পর্যন্ত বরাদ্দ আসেনি। বরাদ্দ এলে পৌঁছে দেওয়া হবে।
মহিষখোচা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ হোসেন বলেন, আমাদের ইউনিয়নের ৩ হাজারের অধিক পরিবার পানিবন্দি। বাঁধগুলো রক্ষায় সাধারণ মানুষদের নিয়ে বস্তা ফেলে রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনিল কুমার বলেন, রবিবার সকাল ৬টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টের পানি প্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা দেখা দিয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, কিছু পরিবার পানিবন্দি। তাই তাদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী খুব দ্রুত পৌঁছে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, একইসঙ্গে যাতে বাঁধ বা সড়ক ভেঙে নতুন এলাকা প্লাবিত না হয়, ইতোমধ্যে জিও ব্যাগ দিয়ে তা রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যার পানি কমে তিস্তায় তীব্র ভাঙন
২ মাস আগে
যশোরে টানা বৃষ্টিতে পানিবন্দি ৮৫০০ মানুষ
টানা বৃষ্টিতে যশোরের ভবদহ অঞ্চলের অভয়নগর উপজেলা অংশের ৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ২৬ গ্রামের ২ হাজার ২০০ পরিবারসহ আনুমানিক সাড়ে ৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
টানা বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। ভেসে গেছে শত শত মাছের ঘের। আমন ধানসহ তলিয়ে গেছে কয়েকশ হেক্টর সবজি ও ফসলের খেত।
এছাড়া স্কুলের মাঠ, বসতবাড়ির উঠান পানিতে থই থই করছে। কোথাও কোমর কোথাও বুক পর্যন্ত পানি জমেছে। ঘরের মধ্যেই ঢুকে পড়েছে পানি।
আরও পড়ুন: পানিবন্দি চাঁদপুরের লক্ষাধিক বাসিন্দা, পানি ও খাবারের তীব্র সংকট
অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস সূত্রে জানা গেছে, অতিবৃষ্টির কারণে অভয়নগরের প্রেমবাগ, সুন্দলী, চলিশিয়া, পায়রা ইউনিয়ন ও নওয়াপাড়া পৌরসভার নিচু এলাকাগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মধ্যে ১ নম্বর প্রেমবাগ ইউনিয়নের জিয়াডাংগা (আংশিক), মাগুরা (আংশিক), বনগ্রাম (আংশিক), বালিয়াডাংগা (আংশিক) এই ৪টি গ্রামের আনুমানিক ২০০ টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
২ নম্বর সুন্দলী ইউনিয়নের লক্ষীপুর, ডাংগা মশিয়াহাটি, ডহর মশিয়াহাটি, ভাটবিলা, ধোপাদী (আংশিক), সুন্দলী (আংশিক), এই ৬টি গ্রামের আনুমানিক ৫০০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩ নম্বর চলিশিয়া ইউনিয়নের ডুমুরতলা, আন্ধা, বেদভিটা, কোটা (আংশিক), বলারাবাদ, চলিশিয়া (আংশিক), বাগদাহ (আংশিক), এই ৭টি গ্রামের আনুমানিক ৭০০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪ নম্বর পায়রা ইউনিয়নের দিঘলিয়া (আংশিক), বারান্দী (আংশিক), আড়পাড়া (আংশিক) এই ৩টি গ্রামের আনুমানিক ২৫০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া নওয়াপাড়া পৌরসভার বুইকারা (আংশিক), সরখোলা (আংশিক) আমডাংগা, লক্ষীপুর (আংশিক), ধোপাদী (আংশিক), গাজীপুর (আংশিক) এই ৬টি গ্রামের আনুমানিক ৫৭০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ১৪ জন পুরুষ, ১৮ জন নারী ও ৫৫ জন শিশু আশ্রয় নিয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩, পানিবন্দি ১২ লাখেরও বেশি পরিবার
সরেজমিনে ৪ ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তা পানিতে ডুবে গেছে। বাড়ির উঠানেই কোমর পর্যন্ত পানি জমে রয়েছে। স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীরা আসতে পারছেন না। গবাদিপশু ও মানুষ একসঙ্গে বসবাস করছে।
অভয়নগর উপজেলা ঘের মালিক সমিতির সভাপতি মো. রবিউল আলম বলেন, ঘেরগুলো ভেসে গিয়ে মালিকরা শেষ হয়ে গেছে। তাদের পুনর্বাসন দরকার। সরকারি সহায়তা না পেলে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল হক বলেন, অভয়নগরে ৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ১১৪ দশমিক ৫০ হেক্টর আয়তনের ৩৩২টি মাছের ঘের এবং ২৪ দশমিক ১৫ হেক্টর আয়তনের ১৮০টি পুকুর/দীঘি/খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমান প্রায় ৫ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের জন্য আমরা সব সময় প্রনোদনা বা সহায়তা দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলে থাকি।
এবারও অনুরোধ করেছি বলে জানান উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, রোপা-আমনের ১ হাজার ৫৮১ হেক্টর, সবজির ১৩৬ হেক্টরসহ ১ হাজার ৭১৭ হেক্টর জমির ফসল ও সবজির থেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, অভয়নগরের জলাবদ্ধ এলাকা পরিদর্শনে যশোরের ডিসি সোমবার এসেছিলেন। তিনি জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।
৩ মাস আগে
লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, পানিবন্দি ৭ লাখ মানুষ
লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও নোয়াখালী থেকে আসা পানিতে রবিবার (২৫ আগস্ট) জেলার ৫টি উপজেলায় বন্যার পানির উচ্চতা বেড়েছে। এছাড়াও জেলার মেঘনা নদীসহ খাল-বিলের পানি বেড়ে গেছে।
এতে জেলা সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। রান্না-বান্নাসহ দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৭ লাখ মানুষ। ভেসে গেছে কয়েকশ মাছের প্রজেক্ট, মুরগি খামার।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বন্যায় ৩ উপজেলায় ৫ জন নিহত
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কয়েকদিনের মধ্যে বন্যার পানি কমতে পারে। এছাড়া বেশি ক্ষতি হয়েছে মৎস্য খাতে। প্রায় সব পুকুরের মাছ ভেসে গেছে বন্যার পানিতে।
মৎস্য বিভাগ জানায়, বন্যার পানিতে লক্ষ্মীপুরের প্রায় ৪০ হাজার পুকুর ডুবে চাষের প্রায় সব মাছ ভেসে গেছে। এতে জেলায় মৎস্য খাতে প্রায় ৮০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘নদীতে ভাটা এলে জলাবদ্ধতা নিরসনে সবগুলো স্লুইচ গেট খুলে দেওয়া হয়। আবার জোয়ারের সময় গেটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: বন্যায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে ২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি
তিনি আরও বলেন, ‘এখনও মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এক-দুই দিনের মধ্যে পানি কমতে পারে।’
জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, ‘রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলার পানি কমতে শুরু করলেও নোয়াখালী বন্যার পানির চাপে লক্ষ্মীপুর সদরের দক্ষিণাঞ্চল, কমলনগর ও রামগতি উপজেলায় পানি বেড়েছে।
তিনি বলেন, ‘জেলার ৫৮টি ইউনিয়ন ও ৪টি পৌরসভার সবগুলোতে কমবেশি জলাবদ্ধতা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ২০ হাজার মানুষ রয়েছে।’
এছাড়াও বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ দেওয়া চলছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বন্যার সময় বিদ্যুৎ ও গ্যাসজনিত দুর্ঘটনা থেকে সাবধান থাকতে করণীয়
৩ মাস আগে
কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, পানিবন্দি ৭ লাখ মানুষ
গোমতী নদীর বাঁধ ভাঙা পানিতে আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন জেলার সাত লাখের বেশি মানুষ।
এখনো অনেকে আটকা পড়ে আছেন। উদ্ধার কর্মীরা শুকনো খাবারসহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে দুর্গত এলাকায় পৌঁছার চেষ্টা করছে। তবে রাস্তা ডুবে যাওয়া ও নৌকা না থাকায় ত্রাণ পৌঁছাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের।
এদিক গেল ২৪ ঘণ্টায় গোমতী নদীর পানি ৮০ সেন্টিমিটার কমলেও এখনো বিপৎসীমার উপরে রয়েছে।
আরও পড়ুন: গণত্রাণ: বন্যার্তদের জন্য টিএসসি যেভাবে আশার আলো হয়ে উঠল
কুমিল্লা জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, কুমিল্লায় ৭২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এগুলোতে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে দুর্গত মানুষের জন্য ৩৪০ টন চাল ও নগদ ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত ২২৫টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি বিসিবির
৩ মাস আগে
লক্ষ্মীপুরের শতাধিক এলাকায় ৬ লাখেরও মানুষ পানিবন্দি
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে লক্ষ্মীপুরের চারটি পৌরশহরসহ নিম্নাঞ্চলের শতাধিক এলাকা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৬ লাখেরও বেশি মানুষ। ভেসে গেছে কয়েকশ মাছের প্রজেক্ট, মুরগি খামার, আমনের বীজতলা, শাকসবজি ক্ষেত।
মুষলধারে বৃষ্টি হতে থাকায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শহরাঞ্চলেও পানি ঢুকতে দেখা যায়।
গতকয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিতে ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা। রান্না-বান্নাসহ দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত পানিবন্দি মানুষদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: ভেঙে গেছে কুমিল্লার গোমতী প্রতিরক্ষা বাঁধ
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুরাইয়া জাহান জানান, বন্যাদুর্গতদের জন্য জেলায় ১৮৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়াও সহায়তার জন্য ২০ মেট্রিক টন চাল ও ১০ লাখ ৭০ হাজার টাকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) ভোর থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে লক্ষ্মীপুরে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভয়াবহ বন্যায় ১০ জেলার ৩৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত, মৃত্যু ২
৩ মাস আগে
ফেনীর ২ উপজেলার বাঁধ ভেঙে প্লাবিত ৭৪ গ্রাম, পানিবন্দি ২৮ হাজার পরিবার
ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম জেলার মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৫টি স্থানে ভাঙনের ফলে ৭৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এতে করে ২৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া ৬৪ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৩ আগস্ট) বিকালে দিকে নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ২২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাইবো) থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ফেনী বিলোনিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কটি ফুলগাজী এবং পরশুরাম অংশে প্লাবিত হওয়ায় কার্যত জেলা সদরের সঙ্গে উপজেলার সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এদিকে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যায় ৩৪১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, পানিবন্দি সোয়া ১ লাখ মানুষ
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ভূইয়া বলেন, ‘গত ১ জুলাই প্রথম বন্যার কবলে পড়েছিল ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলাবাসী। পরে শুক্রবার (২ আগস্ট) দ্বিতীয় দফায় মুহুরী, কহুয় ও ছিলনিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে আবারও বন্যার কবলে পড়েছে এ দুই উপজেলার বাসিন্দা। টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে এসব নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। মুহুরী, সিলোনিয়া, কহুয়া নদীর পানি বেড়েছে ফুলগাজী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।’
এতে ফুলগাজী ইউনিয়নের নিলক্ষী, গাবতলা, মনতলা, গোসাইপুর, শ্রীপুর, বাসুরা, দেড়পারা, উত্তর দৌলতপুর, মুন্সিরহাট ইউনিয়নের বদরপুর, মান্দারপুর, করইয়া, কালিকাপুর, নোয়াপুর, পৈথারা, জাম্মুরা, ফকিরের খিল, কমুয়া, বালুয়া, চানপুর, দক্ষিণ তাড়ালিয়া, দক্ষিণ শ্রীপুর, কুতুবপুর, ফতেহপুর, উত্তর আনন্দপুর, দরবারপুরের জগৎপুর, বসন্তপুর, ধলীয়া, চকবস্তা, উত্তর শ্রীপুর, বড়ইয়া, পশ্চিম দরবারপুর, পূর্ব দরবারপুর, আমজাদহাটের তালবারিয়া, উত্তরধর্মপুর, দক্ষিণ ধর্মপুর, মনিপুর, ইসলামিয়া বাজার, আনন্দপুর ইউনিয়নের বন্দুয়া, দৌলতপুর, তালপুকুরিয়া, জিএম হাট ইউনিয়নের মধ্যম শ্রীচন্দ্রপুরসহ মোট ৪৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা হাবিব শাপলা বলেন, ‘অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে পরশুরাম উপজেলায় বন্যায় পৌরসভার বেড়াবাড়ি এবং বাউরখুমা দুইটি স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়। এতে করে বাউরখুমা, বাউরপাথর, বিলোনিয়া, দুবলাচাঁদ, বেড়াবাড়িয়া, উত্তর গুথুমা, কোলাপাড়া এবং বাসপদুয়া গ্রামে প্রায় সাত হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।
মির্জানগর ইউনিয়নের পশ্চিম মির্জানগর এবং কাউতলী দুইটি স্থানে ভাঙনের ফলে উত্তর মনিপুর, দক্ষিণ মণিপুর, কালী কৃষ্ণনগর, গদানগর, উত্তর কাউতলী, দক্ষিণ কাউতলী, দাসপাড়া, চম্পকনগর, মেলাঘর, গ্রামের প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।
আরও পড়ুন: টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত খাগড়াছড়ি পৌর এলাকা, পানিবন্দি শত শত পরিবার
চিথলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শালধর, মালীপাথর, পশ্চিম অলকার দুইটি স্থানসহ মোট চার স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এতে করে পূর্ব অলকা, পশ্চিম অলকা, নোয়াপুর, ধনীকুন্ডা, দক্ষিণ শালধর, জংঙ্গলঘোনা, কুন্ডেরপাড়, মালীপাথর ও পাগলীরকুল গ্রামে প্রায় ৯ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের টেটেশ্বর এবং সাতকুচিয়া নামক দুইটি স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এতে করে সাতকুচিয়া জমিয়ারগাঁও, বাঘমারা, চারিগ্রাম টেটেশ্বর, কহুয়া, তালবাড়িয়া গ্রামে প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি।
এদিকে ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩০০ পরিবারকে খাবার বিতরণ ও আরও ২৫০ প্যাকেট খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ১৩ মেট্রিক টন চাউল বিতরন ও ৫ মেট্রিক টন মজুদ রাখা হয়েছে। এছাড়া পরশুরাম উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫৫০ প্যাকেট খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
৪ মাস আগে
শেরপুরে পাহাড়ি ঢলের তীব্রতা কমেছে, পানিবন্দি প্রায় ২০ হাজার মানুষ
শেরপুরে নদীগুলোতে পাহাড়ি ঢলের তীব্রতা কমায় নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি উজানের দিকে উন্নতি হয়েছে।
তবে ওই তিনটি উপজেলায় নিন্মাঞ্চলের ছয়টি ইউনিয়নের ১৬টি গ্রামে এখনও পানিবন্দি রয়েছেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
প্রায় ছয় দিন ধরে পানিবন্দি এসব পরিবারগুলোর দুর্ভোগ বেড়েছে।
উপজেলা প্রশাসন ও বেসরকারিভাবে কয়েকটি এলাকায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম বলে উল্লেখ করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
এদিকে, গত তিন দিন ধরে উজান থেকে আসা পানিতে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ ও দশানী নদীতে পানি বেড়েছ। এতে কামারেরচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর চর ও ৭ নম্বর চর এবং চরপক্ষীমারি ইউনিয়নে কুলুরচর, বেপারীপাড়া, জঙ্গলদী ও ভাগলদী গ্রামের নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
এতে অনেক কৃষকের খেত ডুবে গেছে ও নদী ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।
পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে পানির তীব্র স্রোত সৃষ্টি হওয়ায় ৬ নম্বর চরের পশ্চিম পাড়া ও মধ্যপাড়া এলাকায় প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা এবং দশানী নদীর ৭ নম্বর চর বাজার থেকে ব্রহ্মপুত্রের মোহনা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
উভয় নদীতে পানি বৃদ্ধি ও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত দুই দিনের ব্যবধানে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে অন্তত ১০০ মিটার সরে এসে ভিটেমাটি গ্রাস করেছে। হুমকিতে রয়েছে ৭ নম্বর চর বাজার ও জামে মসজিদ ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
কামারেরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান হাবীব বলেন, ‘নদী ভাঙনের কারণে সাতটি পরিবার তাদের ভিটেমাটি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। বেশকিছু ফসলি জমি ডুবে গেছে। বিষয়টি আমি স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি।
শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান বলেন, ‘উজানের পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে শেরপুরের বেশ কয়েকটি নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা নদীগুলোর ভাঙন এলাকার খোঁজখবর নিচ্ছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি অর্ধলক্ষেরও বেশি মানুষ
৫ মাস আগে