নিহতরা হলেন- নওগাঁর বিজয়া কান্দী রানীনগরের গোড়া মিয়ার ছেলে বাবলু, টাঙ্গাইলের শুকুর আলীর ছেলে জুলহাস, জয়পুরহাটের পাঁচবিবির আলতাব হোসেন জিয়ার ছেলে সারোয়ার হোসেন, মিরাজের ছেলে জিয়া, আলতাফ হোসেনের ছেলে আরিফুর রহমান, মোশারফ হোসেনের ছেলে মুনজুরুল নাসিম, আক্কেলপুরের দুদু কাজীর ছেলে সাজু, হিমচির মানিকের ছেলে রমজান আলী, কুটিবাড়ী ব্রিজ এলাকার শরিফুলের ছেলে লতিফ, ক্ষেতলালের ইটাখোলার সুমন, চিত্রাপাড়ার রেজাউল করিম রেজা ও সিরাজগঞ্জের আইয়াতুল্লাহর ছেলে সাইফুল ইসলাম।
ট্রেনে কাটা পড়ে নাটোরে অজ্ঞাত ব্যক্তি নিহত
যেভাবে ঘটে দুর্ঘটনাটি
জয়পুরহাট পুলিশ সুপার (এসপি) সালাম কবির ও এলাকাবাসী জানান, জয়পুরহাট থেকে ছেড়ে আসা একটি যাত্রীবাহী বাস হিলি স্থলবন্দরের দিকে যাচ্ছিল। সকাল ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে পুরানাপৈল লেভেল ক্রসিং অতিক্রম করার সময় দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে আসা রাজশাহীগামী ‘উত্তরা এক্সপ্রেস’ ট্রেন সজোরে বাসটিকে ধাক্কা দেয়।
এতে বাসের কিছু অংশ ট্রেনের ইঞ্জিনের সাথে আটকে যায় এবং কিছু অংশ লেভেল ক্রসিংয়ের পাশে ছিটকে পড়ে যায়। একই সাথে ট্রেনের দুটি বগির ছয়টি চাকা লাইনচ্যুত হওয়ায় ইঞ্জিনসহ ট্রেনটি রেলগেট থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে গিয়ে থামে।
খবর পেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে। এর মধ্যে গুরুত্বর আহত পাঁচজনকে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাদের বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করার পথে দুজনের মৃত্যু হয়।
এদিকে, পার্বতীপুর থেকে একটি উদ্ধার ট্রেন গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেন ও লাইনচ্যুত বগি সরিয়ে নেয়ার পর দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা পর বিকাল ৩টার দিকে এ রুটে পুনরায় ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
মগবাজারে ট্রেনে কাটা পড়ে কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
তদন্ত কমিটি গঠন
এই ট্রেন দুর্ঘটনায় দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) নাসির উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে ঘটনায় চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) রেজা হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের অপর একটি কমিটি গঠন করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
কমিটিগুলোকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
নেই গেটম্যান: লালমনিরহাটে ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত ২
গেটম্যান পলাতক
গেটম্যানের অনুপস্থিতি ও ঘন কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
পুরানাপৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম সৈকত জানান, ঘটনার সময় পুরানপৈল লেভেল ক্রসিং খোলা ছিল। সেখানে তিনজন গেটম্যান রয়েছেন। এদের মধ্যে শনিবার যার দায়িত্বে ছিল, ঘটনার সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন এবং লেভেল ক্রসিংটিও ছিল খোলা। সে কারণে বাসটি ক্রসিং অতিক্রম করার সময় চলন্ত ট্রেনের সাথে সংঘর্ষ ঘটে। ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন ক্রসিংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই গেটম্যান- রহমান ও নয়ন।
ট্রেন ট্রাক্টরের সংঘর্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিহত ১
এর আগে দেশে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটেছিল গত বছরের নভেম্বরে। তখন ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দভাগ রেলস্টেশনে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তনগর ট্রেন তূর্ণা নিশীথা এবং সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেসের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রেন দুর্ঘটনায় তূর্ণা নিশীথার কর্মীরা দায়ী: তদন্ত কমিটি
ওই দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১৬ জন নিহত এবং শতাধিক মানুষ আহত হন।