এ ঘটনায় করা মামলায় ধর্ষণে সহযোগিতা করার দায়ে এক নারীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, শনিবার রাতে ভূক্তভোগী ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে থানায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছেন। প্রথম মামলায় একজন, দ্বিতীয় মামলায় দুজন ও তৃতীয় মামলায় আরও একজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার পরপরই উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামে অভিযান চালিয়ে ধর্ষণে সহযোগিতা করার অপরাধে বাড়িওয়ালা সুমা (৩০) নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভূক্তভোগী ওই কিশোরীর বাবা একজন রিকশা চালক। তাদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালি জেলায়। প্রায় চার মাস আগে স্ত্রী ও ১৩ বছর বয়সী কিশোরী মেয়েকে নিয়ে ওই গ্রামের সুমাদের বাড়িতে ভাড়া আসেন তারা। এরপর একই গ্রামের সেলিম চোকিদারের মেয়ের সঙ্গে ওই কিশোরীর সখ্যতা গড়ে উঠে। সেই সুবাদে মাঝে মধ্যেই রাতে তার সাথে রাতে ঘুমাতে যেতেন ওই কিশোরী।
ভূক্তভোগী কিশোরী জানান, প্রায় আড়াই মাস আগে এক রাতে সেলিম চোকিদারের মেয়ের সাথে ঘুমিয়ে ছিলো সে। ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ করে সেলিম চোকিদার তার মুখ চেপে ধরে জোড়পূর্বক বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত জায়গায় নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের এ ঘটনা কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকিসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখান সেলিম চোকিদার।
তার দাবি, পরবর্তিতে সেলিম তার প্রতিবেশী বন্ধু কিয়ামউদ্দিন হওলাদার ও ইদ্রিস মোল্লাকে নিয়ে ভয় দেখিয়ে আরও কয়েকবার ধর্ষণ করেন। আর এ কাজে সহযোগিতা করতেন বাড়িওয়ালার মেয়ে সুমা।
ওই কিশোরী বলেন, ‘ধর্ষণের সময় ধর্ষকরা এ ঘটনা কাউকে না জানাতে ধাঁরালো অস্ত্র দেখিয়ে আমাকে হত্যার ভয় দেখাতো।’
সম্প্রতি এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে গত শুক্রবার বিলাসপুর ইউনিয়নের আলম বাজার এলাকায় রাধানগর গ্রামসহ আশেপাশের অন্তত তিনটি গ্রামের কয়েকশ লোকের সমাবেশ ঘটিয়ে ওই কিশোরীর উপস্থিতিতে ধর্ষণের ঘটনা বিচারের মাধ্যমে সমোঝতার চেষ্টা করা হয়।
তবে এ ঘটনায় অভিযুক্তরা শালিসে উপস্থিত না হওয়ায় এবং বিচারের দায়িত্বে থাকা সমাজপতিরা দোহার থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্তরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়।
পরে নারী ও শিশু নিযার্তন দমন আইনে পৃথক তিনটি মামলা নেন দোহার থানা পুলিশ।
মামলার বাদী ধর্ষিতা কিশোরীর বাবা জানান, অভিযুক্তরা তাকে প্রথমে টাকা দিয়ে ঘটনাটি মিমাংসার চেষ্টা করে। এতে ব্যর্থ হয়ে তাকে মেরে ফেলাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি ধুমকি দিয়ে আসছেন।
অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন তিনি।
দোহার থানার ওসি মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় ধর্ষণের কাজে সহযোগিতার দায়ে বাড়িওয়ালী এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই ধর্ষকরা পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।