উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও কয়েকদিন থেকে টানা থেমে থেমে আসা বৃষ্টিতে বাড়তে শুরু করেছে তিস্তা নদীর পানি। আর তাই দেশের বৃহত্তর সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের সব জলকপাট খুলে দিতে বাধ্য হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সোমবার (১৯ জুন) দুপুরে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৯৮ মিটার। সকাল ৯টায় ছিল ৫২ দশমিক ১০ মিটার। যা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার হওয়া স্বাভাবিক।
এর আগে শনিবার (১৮ জুলাই) বিকাল ৩টায় তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৮৪ মিটার।
ব্যারেজ ও নদী তীরবর্তী মানুষ জানান, গত কয়েক দিন থেমে থেমে ভারিবর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ বেড়ে যায়। শনিবার ভোর থেকে আরও বাড়তে থাকে নদীর পানিপ্রবাহ। এই পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারেজের জলকপাটগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। শনিবার বিকাল ৩টার দিকে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ভারতের গজলডোবায় তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় উজানের ঢেউ বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: তিস্তা নিয়ে কূটনৈতিক যোগাযোগে ভারতের তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পায়নি বাংলাদেশ
নদীপাড়ের লোকজন জানান, পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার চরাঞ্চলের ফসলের খেতগুলো ডুবে গেছে। নিম্নাঞ্চলের ফসলের খেতগুলোও ডুবে গেছে।
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্ধন এলাকার কৃষক আ. রহিম মিয়া বলেন, ‘কয়দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। কালকেও পানি বাড়ছিলো। আজকে আবারও বাড়তেছে। আমাদের বাদাম খেত ও পাটখেত ডুবে গেছে।’
পাউবো তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ কিছুটা বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তবে আপাতত বিপদসীমা অতিক্রম করার কোনো শঙ্কা নেই।’
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, গ্রীষ্ম মৌসুমে তিস্তার বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্পের কাজ করা হয়েছে। মহিষখোচা এলাকায় ৪৯ কোটি টাকা ব্যায়ে বেরিবাধ করা হয়েছে। এছাড়াও ভাঙ্গনপ্রবণ এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি প্রত্যাহারে ভারতের আরও দুটি খাল খনন পরিকল্পনায় বিএনপির উদ্বেগ প্রকাশ