কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তৈয়ব আলী নামে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে নিজ বসতঘরের সামনের একটি আম গাছ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত তৈয়ব আলী দীর্ঘদিন ধরে শ্বশুরবাড়ি রাঙ্গামাটিয়া গ্রামেই বসবাস করছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ।
নিহতের স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, ‘গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে তাদের ছেলে আবদুল করিম জনি পাশের নোয়াপাড়া গ্রামের এরশাদ মিয়ার মেয়ে মাদরাসাছাত্রী মাইমুনা সুলতানা লুবনাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় লুবনার পরিবার থানায় অভিযোগ করেন। এ সময় লুবনার পরিবার তাদের মেয়েকে দ্রুত ফিরিয়ে না দিলে হত্যাসহ গ্রাম ছাড়ার হুমকি দেয় তাদের। হত্যাসহ গ্রাম ছাড়ার ভয়ে তৈয়ব আলী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ও বাড়ির বাইরে বাগানে গিয়ে সময় কাটাতে শুরু করেন।’
‘এ সময় স্থানীয় এক ব্যক্তি তাকে বাড়ির পাশের বাগানে দেথতে পেয়ে বাড়িতে দিয়ে যান। একটু পরে তিনি আবার চলে যান। আমিও ঘরে তালা লাগিয়ে অন্য বাড়িতে গিয়ে ঘুমাই। বুধবার সকালে বাড়িতে গিয়ে আশপাশে তাকে খুঁজতে গিয়ে দেখতে পাই আম গাছের ডালের সঙ্গে গামছা পেছানো অবস্থার তার লাশ ঝুলে আছে। পরে লোকজন জড়ো হয়ে থানা পুলিশকে খবর দেয়।’
মেয়ের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে লুবনাকে নিয়ে তৈয়ব আলীর ছেলে আবদুল করিম জনি পালিয়েছে। এ ঘটনায় আমরা থানায় একটি অভিযোগ করেছি। আমরা আত্মীয়স্বজন ও পুলিশ নিয়ে তাদের বাড়িতে গিয়েছি, তবে কাউকে হত্যাসহ গ্রাম ছাড়ার হুমকি দিইনি।’
রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘মেয়ের পক্ষের লোকজন পুলিশ নিয়ে তৈয়ব আলীর পরিবারকে হুমকি দেয়। গত কয়েকদিন ধরে তৈয়ব আলী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।’
মোহাম্মদ আলী নামে রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘গত পরশুদিন মেয়ের চাচাসহ পুলিশ এসে তৈয়ব আলীর হাত ধরে টানাটানি করে। গ্রামবাসীর প্রতিবাদে দুইদিনের সময় দিয়ে যায়। হতাশাগ্রস্ত তৈয়ব আলী গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করেন। আজ তার মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছে না। তবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা তদন্ত করে বের করা উচিত।’
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তৈয়ব আলী নামের একজনের লাশ উদ্ধার শেষে থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।