এসব নকল পণ্য বিক্রির জন্য মোড়ক তৈরি করা হয় খুবই চাকচিক্যভাবে। এমনভাবে মোড়কে নাম লিখা হয় কেউ খুব মনোযোগ দিয়ে না দেখলে বুঝার উপায় নেই প্রসাধনীগুলো নকল।
গত দু’বছরের অধিক সময় ধরে কুমিল্লা নগরীর মোগলটুলি এলাকা থেকে বাজারজাত করা হয় এসব প্রসাধনীর কারখানাটিতে সোমবার যৌথ অভিযান পরিচালনা করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসন।
তারা কারখানাটিকে সিলগালা করে দেন সেইসাথে এর মালিক আবু সুফিয়ানকে ছয় মাসের জেল ও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
নিজেই মালিক ও টেকনিশিয়ান হিসেবে এ কারখানায় পাঁচটি দেশি, ২৫টি বিদেশি প্রসাধনীর নকল পণ্য তৈরি করতেন আবু সুফিয়ান।
আবু সুফিয়ানের বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নবাবপুর এলাকায়। নগরীর মোগলটুলি এলাকায় তিন কক্ষের ভাড়া বাসায় এসব পণ্য তৈরি করেন তিনি।
আবু সুফিয়ান জানান, ঢাকা থেকে কেমিক্যাল ও অন্যান্য অনুষঙ্গ এনে এসব প্রসাধনী তৈরি করতেন। তিনি নিজেই কারখানার মালিক ও ক্যামিস্ট। পণ্য বাজারজাতও করতেন নিজেই।
ট্রেড মার্কের জন্য আবেদন করলেও ব্যবসা পরিচালনার জন্য আর কোন অনুমোদন পত্র ছাড়াই এতোদিন ধরে এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো আছাদুল ইসলাম বলেন, মোগলটুলি হাইস্কুলের পেছনের একটি বাড়িতে দুটি কক্ষে তৈরি হচ্ছে প্রসাধনী। তিনজন মহিলা প্রসাধনী মোড়কজাত করছেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে এসব প্রসাধনী। কারখানায় কোনো ল্যাব নেই। প্লাস্টিকের ড্রামে রাখা আটা-ময়দা। পাশে খোলা ড্রামে তেল ও কেমিক্যাল। ড্রামের আদা-ময়দা, তেল ও কেমিক্যাল মিশ্রণ করার একটি যন্ত্র। এগুলো ব্যবহার করেই তৈরি করা হতো প্রসাধনীগুলো। পাঁচটি দেশি ও ২৫টি বিদেশি প্রসাধনীর ক্যাটাগরির নকল পণ্য তৈরি করতেন আবু সুফিয়ান।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডা. মজিবুর রহমান বলেন, সঠিক উপায়ে ব্যবহার না হলে যে কোনো কেমিক্যাল স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকর। মোগলটুলিতে যেভাবে প্রসাধনী তৈরি করা হয়েছে সেগুলো স্বাস্থ্যর জন্য হুমকিস্বরুপ। এগুলো ব্যবহারে চর্মরোগ এবং ক্যান্সার হওয়ার আশংকা বেশি।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেট আবু সাঈদ জানান, কারখানার মালিকের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রসাধনী তৈরি করতেন।
নকল প্রসাধনী তৈরির কারখানার মালিক আবু সুফিয়ানকে ছয়মাসের জেল ও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।