দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়া তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারী তাবলীগের সদস্যরা এ পর্বে অংশ নেবেন।
ইতিমধ্যেই দেশ-বিদেশের মুসল্লিরা মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহৎ এ ধর্মীয় সমাবেশে আসা শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার যোহরের নামাজের পর থেকেই দিক নির্দেশনামূলক বয়ান শুরু হয়েছে। শুক্রবার ইজতেমা ময়দানের অনুষ্ঠিত হবে বৃহত্তম জুমার জামাত।
আগামী রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা। ইজতেমাকে সর্বাত্মকভাবে সফল করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক নজরদারি ও সিটি করপোরেশন এবং জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি।
বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আমির ইঞ্জিনিয়ার ওয়াসেফুল ইসলামের তথ্যমতে, পরিস্থিতি বিবেচনায় ভারতের নিজামুদ্দিন মারকাজের শীর্ষ মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভি এ ইজতেমায় আসবেন না। তবে নিজামুদ্দিনের পক্ষ থেকে তাবলীগের শীর্ষ মুরব্বি ও আলেমসহ ৩২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ইতিমধ্যে বিশ্ব ইজতেমায় এসে পৌঁছেছেন।
নিরাপত্তার বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রথম পর্বের চেয়ে দ্বিতীয় পর্বে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিদেশি মেহমানদের কামরায় বিশেষভাবে নজরদারি করা হচ্ছে। এছাড়া যাতায়াতের সুবিধার্থে ট্রাফিক ব্যবস্থা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমাতেও গাজীপুর সিটি করপোরেশন আগত মুসল্লিদের ২৪ ঘণ্টা সেবাদান করবে। বিদেশি মুসল্লিদের প্রতি সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে যাতে তাদের কোনো প্রকার সমস্যা না হয়। তাদের ওজু, গোসলের জন্য রাখা হয়েছে গরম ও ঠান্ডা উভয় প্রকার পানির ব্যবস্থা। প্রথম পর্বের পর ইজতেমা মাঠের ভেতরে কিছুটা সমস্যা দেখা দিলেও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দিন-রাত কাজ করে তা ব্যবহারের উপযোগী করে তুলেছেন।
প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বেও বিপুল পরিমান সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইজতেমা মাঠে আগত মুসল্লিদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা ও ওষুধ বিতরণ করবেন।
বৃহস্পতিবার থেকেই তারা নিজ নিজ ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে টঙ্গী ওষুধ ব্যবসায়ি কল্যাণ সমিতি, হামদর্দ, ইবনেসিনা, যমুনা ব্যাংক, র্যাব, সিভিল সার্জন কার্যালয়, ইসলামী ফাউন্ডেশনসহ প্রায় অর্ধশত সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
টঙ্গী ওষুধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি এম এ লতিফ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ব ইজতেমায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ সরবরাহ করে আসছি। এবারও আমরা সেবা প্রদানের জন্য মাঠে এসেছি। আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত এ সেবা অব্যাহত থাকবে।’
এর আগে গত ১০ জানুয়ারি শুরু হওয়া বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব ১২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হয়। মাওলানা হাফেজ মোহাম্মদ জোবায়ের অনুসারীরা অংশ নেন প্রথম পর্বে।
ইজতেমার প্রথম আয়োজন শুরু হয় ১৯৪৬ সালে কাকরাইল মসজিদে। তারপর ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের হাজি ক্যাম্পে ও ১৯৫৮ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর লোক সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ১৯৬৬ সালে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বর্তমানস্থলে স্থানান্তর করা হয়েছে। পরে সরকারিভাবে তুরাগ তীরের ১৬০ একর জমি স্থায়ীভাবে ইজতেমার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়।