নিহত পুতুল রানী ঝিকরগাছা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের কাউনিয়া দাস পাড়া এলাকার সাধন দাসের মেয়ে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঝিকরগাছা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের কাউনিয়া দাস পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে ওই নারী ও তার স্বামী প্রদীপকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পুতুল রানীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হলেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়। ঢাকা নেয়ার পথে গোপালগঞ্জের কাছে পৌঁছালে বুধবার সকাল ৮টার দিকে অন্তঃস্বত্ত্বা ওই নারী মারা যান।
এদিকে প্রদীপই তার স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টা করেছে, প্রতিবেশীদের এমন অভিযোযের প্রেক্ষিতে পুলিশ তাকে আটক দেখিয়েছে। বর্তমানে সে পুলিশ পাহারায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
প্রতিবেশীরা জানান, রাতে প্রদীপ ও তার স্ত্রী পুতুলের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছিল। এক পর্যায়ে তাদের চিৎকার শুনে বাইরে এসে দেখা যায় ঘরের মধ্যে আগুন জ্বলছে। এসময় প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে ঝিকরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ঝগড়ার কারণে প্রদীপ তার স্ত্রীর শরীরে আগুন লাগিয়ে দিতে পারে বলে অভিযোগ প্রতিবেশিদের।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আহম্মেদ তারেক শামস চৌধুরী জানান, রাত আড়াইটার দিকে দগ্ধ দম্পতিকে হাসপাতালে আনা হয়। পুতুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। এছাড়া আহত প্রদীপের দুটি হাত, চোয়াল ও মাথার চুল পুড়ে গেছে। তাকে সার্জারি ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আটক প্রদীপের দাবি, ঝগড়ার কারণে তার স্ত্রী পুতুল অভিমান করে ঘরে থাকা কেরোসিন গায়ে ঢেলে নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে দেয়। সেই আগুন নেভাতে গিয়ে প্রদীপও অগ্নিদগ্ধ হয়। প্রতিবেশীদের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি।
ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘পরিচ্ছন্নকর্মী প্রদীপের সাথে তার স্ত্রীর প্রায়ই ঝগড়া হতো। মঙ্গলবার রাতে নিজেদের মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরে থাকা কেরোসিন ঢেলে তার স্ত্রী নিজেই শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে দাবি করেছে প্রদীপ। আপাতত প্রদীপকে আটক দেখিয়ে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি উল্লেখ করে ওসি আরও জানান, প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে পুলিশি তৎপরতা চলছে এবং নিহত পুতুল রানীর লাশ ময়না তদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, একবছর আগে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে তিনি পুতুলকে বিয়ে করেন প্রদীপ। সনাতন ধর্ম গ্রহণের আগে মো. আলামিন নামে পরিচিত ছিল সে।